অরক্ষিত: এটিএম মেদিনীপুরে।
অধিকাংশ এটিএমে নেই রক্ষী। কিছু জায়গায় তো আবার হাট করে খোলা দরজা। নেই সিসিটিভি ক্যামেরাও। ফলে ফুটেজ দেখে দুষ্কৃতীকে চিহ্নিত করার সম্ভাবনাও নেই। মেদিনীপুর, খড়্গপুর, ঘাটাল থেকে শহরতলি— সব জায়গারই এক ছবি।
গত বছর ৫ মে খড়্গপুরের মালঞ্চ রোডে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের এটিএমের ভল্ট ভেঙে ২২ লক্ষ টাকা লুঠ হয়েছিল। পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারে, ওই এটিএমে কোনও নিরাপত্তা রক্ষী ছিল না। এমনকী, কাজ করছিল না কোনও সিসি ক্যামেরাও। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। শহরের খরিদা থেকে মালঞ্চ রোড এলাকাটি ব্যাঙ্ক পাড়া নামে পরিচিত। এই এলাকায় দশটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখা-সহ প্রায় ১৫টি এটিএম রয়েছে। রেল শহরের ইন্দা, কৌশল্যা, ঝাপেটাপুর, সুভাষপল্লি, বোগদা এলাকায় রয়েছে বেশ কিছু রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি ব্যাঙ্কের এটিএম কাউন্টার। কিছু এটিএম আবার নির্জন এলাকায়। খড়্গপুর শহরের ইন্দার বাসিন্দা সোমা সেনগুপ্ত বলেন, “নিরাপত্তারক্ষী না থাকায় একসঙ্গে অনেক জন এটিএমে ঢুকে পড়েন। এসবের জন্য রাতে টাকা তোলাই ছেড়ে দিয়েছি।” গত বছর এটিএম মেশিন ভেঙে টাকা লুঠের পরে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষগুলিকে ডেকে পুলিশ সতর্ক করেছিল। তারপরও কয়েকটি এটিএমের খোলা দরজা বন্ধ হলেও রক্ষী মোতায়েন করা হয়নি।
এক সময় মেদিনীপুর শহরের যে সব এটিএম কাউন্টারে নিরাপত্তারক্ষী ছিল, এখন তার একাংশও রক্ষিহীন। জেলার লিড ডিস্ট্রিক্ট ব্যাঙ্ক ম্যানেজার (এলডিএম) দিলীপকুমার মান্না বলেন, “এটিএমের নিরাপত্তার বিষয়টি দেখছি।” এখন কিছু ব্যাঙ্ক এটিএম মেশিনগুলোর বিমা করায়। কিন্তু গ্রাহক নিরাপত্তার বিষয়টি! মেদিনীপুরর স্বপন পালের কথায়, “এটিএমে রাতে যেতে ভয়ই লাগে! কেউ এসে টাকা ছিনতাই করে পালিয়ে গেলে তো কিছু করার নেই!”
ঘাটাল মহকুমায় গোটা চল্লিশ এটিএমের মধ্যে ঘাটাল শহর ও সংলগ্ন এলাকায় রয়েছে ২৩টি এটিএম। চার-পাঁচটি এটিএম বাদ দিয়ে বাকি গুলিতে নিরাপত্তারক্ষী নেই। অনেক এটিএমে আবার সিসি ক্যামেরাও নেই।
ঝাড়গ্রাম শহরে ১৮টি এটিএম কাউন্টার আছে। এর মধ্যে পাঁচটি এটিএম কাউন্টারে দিনে-রাতে রক্ষী থাকে। মাওবাদী প্রভাবিত এলাকা হওয়ায় রাতে অবশ্য অরণ্যশহরের সব এটিএম কাউন্টারের সামনে সিভিক ভলান্টিয়ার থাকে। কিন্তু বেশিরভাগ এটিএম কাউন্টারে নজরদারি না থাকায় এক সঙ্গে অনেকে টাকা তুলতে ঢুকে পড়েন। বছর দু’য়েক আগে একটি এটিএমে সাহায্যের নামে এক বৃদ্ধের টাকা কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিল এক যুবক। ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশের দাবি, শহরে নিরাপত্তা অনেক জোরদার হয়েছে। বিভিন্ন রাস্তায় ও মোড়ে সিসি ক্যামেরা বসিয়েছে পুরসভা। তার ছবি মনিটরিং করে পুলিশ।