মিড ডে মিল খেয়ে খুশি পড়ুয়ারাও। সোহম গুহর তোলা ছবি।
এক মাস, দু’মাস নয়। টানা আড়াই বছর ধরে বন্ধ ছিল ভগবানপুরের আবাসবেড়িয়া আদর্শ বিদ্যাপীঠের মিড ডে মিল। আর সংবাদপত্রের প্রতিবেদনের পরই টনক নড়ল প্রশাসনের। অবশেষে চালু হল মিড ডে মিল।
টানা আড়াই বছর ধরে পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুর-১ ব্লকের আবাসবেড়িয়া স্কুলে মিড ডে মিল বন্ধ ছিল। নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের পড়ুয়াদেরও শিক্ষকদের কাছে প্রশ্ন ছিল, পাশের স্কুলে যদি মিল পাওয়া যায়, এই স্কুলে মিলবে না কেন? উত্তর দিতে পারতেন না শিক্ষকরা। গত ১৫ নভেম্বর আনন্দবাজার পত্রিকায় খবরটি প্রকাশের পরই নড়ে বসে প্রশাসন। জেলাশাসক রশ্মি কমল ভগবানপুর-১ ব্লক প্রশাসনকে ওই স্কুলে মিড ডে মিল চালুর নির্দেশ দেন।
ভগবানপুর-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শেখর পণ্ডিত ও শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ শেখ আহমেদউদ্দিন জানান, সেই নির্দেশ পাওয়ার পরই পঞ্চায়েত সমিতি ও ব্লক প্রশাসন আবাসবেড়িয়া গ্রামে গিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ, ৬ টি স্বনির্ভর গোষ্ঠী ও অভিভাবকদের নিয়ে টানা দু’দিন ধরে মিড ডে মিল নিয়ে বৈঠক করেন। তারপর সম্মতি মিলতেই ১৮ নভেম্বর থেকে ফের স্কুলে মিড ডে মিল চালু করা হয়েছে।
সোমবার আবাসবেড়িয়া স্কুলে গিয়ে দেখা গেল, পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়ারা এ দিন পাত পেড়ে খেতে বসেছে। অষ্টম শ্রেণির লিপিকা ভুঁইয়া, সুদীপ মাইতির কথায়, ‘‘কতদিন পর স্কুলের খাবার খেলাম। খুব মজা হচ্ছে।’’ এ দিন টিফিনের পরও কেউ খাবার খেতে বাড়ি চলে যায়নি। ফলে প্রথম ক্লাসের পড়ুয়ারা ছিল শেষ ক্লাস পর্যন্ত। সপ্তম শ্রেণির গোপাল মল্লিক বলে, ‘‘আগে টিফিন আনতাম না। টিফিনে বাড়ি চলে যেতাম। আর আসতে ইচ্ছে করত না। এখন আর কেন বাড়ি যাব? এখানেই তো খাবারও দেবে।’’
স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শুভেন্দু বাটুল বলেন, ‘‘৫৫০ ছাত্রছাত্রীর মধ্যে সোমবার ৪০৮ জন পড়ুয়া উপস্থিত ছিল। সকলেই মিড ডে মিল খেয়েছে।” খুদে পড়ুয়াদের হাসমুখ দেখে খুশি শিক্ষকরাও।