প্রতীকী ছবি।
‘সাংবাদিক চাই’।
যোগ্যতা: অন্তত উচ্চ মাধ্যমিক পাশ। আবেদনপত্রে যে কোনও বিষয়ের উপরে ৫০-৬০ শব্দে সাবলীল এবং নির্ভুল বাংলায় লিখতে হবে।
তবে, আবেদন যে কেউ করতে পারবেন না। পারবেন শুধু মেদিনীপুর জেলের বন্দিরাই। সাংবাদিক চেয়ে বুধবার জেলের ভিতরেই ওই বিজ্ঞপ্তি দেখে কাগজ-কলম নিয়ে আবেদন করতে বসে পড়েছেন অনেক বন্দি। তাঁরা সাংবাদিক হতে চান। পয়লা বৈশাখ এই জেল থেকেই আত্মপ্রকাশ করছে নতুন খবরের কাগজ— ‘খোলা হাওয়া’।
জেলের নানা খবর, বন্দিদের সমস্যার কথা, তাঁদের লেখা কবিতা, কার্টুন— সবই থাকছে চার পাতার এই সাপ্তাহিক সংবাদপত্রে। বন্দিরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সম্পাদকীয় বোর্ড গড়েছেন। বোর্ডে রয়েছেন ১৬ জন সাজাপ্রাপ্ত। সংবাদপত্রে লিখতে ইচ্ছুক বন্দিরা সম্পাদকীয় বোর্ডের কাছে আবেদন করতে পারবেন।
এমন উদ্যোগ দেশে প্রথম, এই দাবি করে জেল-সুপার দেবাশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বন্দিদের অভাব-অভিযোগের কথা কাগজে জায়গা পাবে। স্বাভাবিক ভাবে যে বিষয়গুলি আমাদের চোখে পড়ে না, আবাসিকদের লেখা থেকে সে সব জানতে পারব। সমস্যার সমাধানে পদক্ষেপও করা যাবে।”
স্বনির্ভরতার লক্ষ্যে আগেই জেলে ক্যান্টিন তৈরি করেছিলেন বন্দিরা। এ বার মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের বন্দিদের একঘেঁয়ে জীবনে ‘খোলা হাওয়া’ এনে দেওয়ার এই উদ্যোগের প্রশংসাই করেছেন ডিজি (কারা) অরুণ গুপ্ত। তাঁর সঙ্গে এ নিয়ে বুধবার দেবাশিসবাবুর কথা হয়। দেবাশিসবাবু বলেন, ‘‘আমরা মুক্ত জায়গার কথা বলি। এই খবরের কাগজ আবাসিকদের কাছে একটা প্ল্যাটফর্ম। সকলে যে রকম খবরের কাগজ দেখতে অভ্যস্ত, সে রকমই কাগজ হবে।”
বর্তমানে মেদিনীপুর জেলে ১৪০০ বন্দি রয়েছেন। ইতিমধ্যেই নতুন সংবাদপত্র প্রকাশের তোড়জোড় শুরু হয়ে গিয়েছে। জেলের ওয়েলফেয়ার অফিসার কর্ণদেব গোস্বামী এই
প্রসঙ্গে জানান, জেলে একাধিক কম্পিউটার রয়েছে। বন্দিরা কাগজ প্রকাশনার ক্ষেত্রে এই সব কম্পিউটার ব্যবহার করবেন। নতুন সংবাদপত্র নিয়ে উৎসাহিত বন্দিরাও। তাঁদেরই এক জন মানছেন, “এটা একটা অন্য রকম ব্যাপার। অনেকেই কাগজের প্রথম সংখ্যা দেখার অপেক্ষায় রয়েছেন।”
তবে, কোনও দাম নেই। ‘খোলা হাওয়া’ বিনামূল্যে পাবেন জেলের সব বন্দিরাই।