আজ, শনিবার রাজ্য সরকারের গ্রুপ-ডি পদের পরীক্ষা। তাই যানযট এড়াতে ঘাটাল-চন্দ্রকোনা সড়কের সম্প্রসারণের কাজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিল পূর্ত দফতর। দফতরের সহকারী বাস্তুকার অমিত চৌধুরী বলেন, “শুক্রবার বিকেল থেকে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শনিবার ওই সড়কে কোনও কাজ হবে না। রাস্তার উপর থেকে সমস্ত সরঞ্জাম এবং গাড়ি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।”
মহকুমা প্রশাসন সূত্রের খবর, ঘাটাল মহকুমায় মোট ৮৬টি সেন্টারে ৩৩ হাজার পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় বসবেন। শুক্রবার সন্ধ্যা থেকেই বহু পরীক্ষার্থী ঘাটালে চলে এসেছেন। অনেকে লজ বা হোটেল ভাড়া করে রাতে থাকার বন্দোবস্ত করছেন। ঘাটালের মহকুমাশাসক পিনাকীরঞ্জন প্রধান বলেন, “এর আগে কোনও পরীক্ষায় এত পরীক্ষার্থী ঘাটালে আসেননি। তাই পরীক্ষার্থীদের যাতে কোনও সমস্যা না হয়, তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।”
ঘাটাল মহকুমা পুলিশ জানিয়েছে, ঘাটাল-চন্দ্রকোনা সড়কে সম্প্রসারণের জন্য এলাকায় যানযট নিত্যদিনের সমস্যা। পরীক্ষার্থীরা যাতে সেই সমস্যায় না পড়েন তার জন্য শনিবার ভোর পাঁচটা থেকে ঘাটালের তিনটি থানা এলাকার সমস্ত রুটে ভারী যানবাহন এবং লরি-ট্রাক চলাচল বন্ধ থাকবে। মহকুমার সমস্ত বাস-ট্রেকার এবং ছোট গাড়ির মালিকদের নিয়ে বৈঠক হয়েছে। বহু রুটেই সকাল দশটার পর গাড়ি কম থাকে এবং বিকেলের দিকে বাস থাকে না। ওই সব রুট চিহ্নিত করে পর্যাপ্ত গাড়ি চলাচলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও পরিবহণ দফতরের তালিকা অনুযায়ী যাতে সমস্ত রুটে এ দিন সমস্ত বাস রাস্তায় নামে, সেজন্য অনুরোধ করা হয়েছে বাস মালিকদের। ঠিক সময়ে পরীক্ষার্থীরা যাতে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতে পারেন, তার জন্য রাস্তায় পুলিশ টহল থাকবে।
পূর্ব মেদিনীপুরেও প্রস্তুতি চলছে জোর কদমে। এই জেলায় পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১ লক্ষ ৪০ হাজার। পরীক্ষা কেন্দ্রের সংখ্যা ২৯৩ টি। সকাল থেকেই যাতে জেলার সব বাস রুটে যথেষ্ট বাস চলাচল করে তার প্রস্তুতি নিয়েছে জেলা প্রশাসন। জেলাশাসক রশ্মি কমল বলেন, ‘‘পরীক্ষার্থী সহ অভিভাবকদের যাতায়াতের ব্যবস্থা করতে যাত্রীবাহী বিভিন্ন গাড়ি চলাচলের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পরীক্ষাকেন্দ্রগুলিতে পানীয় জল ও প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা থাকছে।’’ হলদিয়াতেও বৃহস্পতিবার রাত থেকে ভিড় জমাতে শুরু করেছেন পরীক্ষার্থীরা। এখানে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ২৬ হাজার। মহকুমায় মোট ৫১টি পরীক্ষাকেন্দ্র নির্বাচন করা হয়েছে। হলদিয়ার মহকুমাশাসক পূর্ণেন্দু নস্কর বলেন, ‘‘পরীক্ষার্থীদের যাতে কোনও সমস্যা না হয় তার জন্য আমরা বাস মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। ছোট গাড়ি, অটো, টোটো মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করা হয়েছে। সকলেই সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।’’ তিনি জানান, আলাদা করে হলদিয়া, মহিষাদল, নন্দীগ্রামে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পূর্ব মেদিনীপুর ডিস্ট্রিক্ট বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সুকুমার বেরা বলেন, ‘‘জেলার সব রুটে অতিরিক্ত বাস চালানোর জন্য চেষ্টা হচ্ছে।’’ পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘পরীক্ষাকেন্দ্রে নিরাপত্তার ব্যবস্থা ও কেন্দ্রগুলির পারস্পরিক সমন্বয়ের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’’
কোনও সমস্যা হলে ফোন করতে পারেন ০৩২২৫-২৫৫-১৪৫/১৪৬ নম্বরে।
অলোক রাজোরিয়া