ডাকঘরে টাকার জোগান কম, সঙ্কট

কোথাও টাকা নেই আবার কোথাও টাকা মিললেও প্রয়োজনের চেয়ে কম। ডাকঘরে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও ফিরতে হচ্ছে নিরাশ হয়েই।

Advertisement

সৌমেশ্বর মণ্ডল

শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০০:০০
Share:

দীর্ঘ অপেক্ষা। নিজস্ব চিত্র।

কোথাও টাকা নেই আবার কোথাও টাকা মিললেও প্রয়োজনের চেয়ে কম। ডাকঘরে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও ফিরতে হচ্ছে নিরাশ হয়েই।

Advertisement

কামারপুকুর থেকে ৮০ কিলোমিটার উজিয়ে মঙ্গলবার মেদিনীপুর মুখ্য ডাকঘরে টাকা তুলতে এসেছিলেন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী রঞ্জন ভট্টাচার্য। গত সপ্তাহে একবার এসে টাকা না পেয়ে ফিরে গিয়েছেন। মঙ্গলবারও দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে রঞ্জনবাবু বলছিলেন, ‘‘চিকিৎসক বাসে করে বেশি দূর যেতে নিষেধ করেছেন। তবু টাকার জন্য অসুস্থ শরীরে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছি।’’

অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ঘাটালের বাসিন্দা সুকোমল দণ্ডপাটের ছেলে সুব্রত দণ্ডপাট বিদেশে থেকে পড়াশোনা করেন। ছেলেকে টাকা পাঠানোর জন্য চারদিন ডাকঘরে ঘুরেছেন। প্রয়োজনের থেকে কম টাকা মেলায় বারবার তাঁকে ডাকঘরে আসতে হয়েছে। সুকোমলবাবুর কথায়, ‘‘পাঁচ হাজার টাকার বেশি দিচ্ছে না। রোজ এত দূর থেকে কি আসা সম্ভব।’’

Advertisement

সমস্যা কোথায়? ডাকঘর সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর দু’য়েক আগে ঘাটাল ও খড়গপুর ডাকঘর একটি ফর্ম পূরণ করেই নিকটবর্তী স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (এসবিআই) থেকে টাকা পেয়ে যেত। বিগত দু’বছর ধরে এ ভাবে ফর্মের মাধ্যমে টাকা লেনদেন বন্ধ করে দিয়েছে ডাক বিভাগ। এখন চেকের মাধ্যমে টাকা তুলে মেদিনীপুর মুখ্য ডাকঘরের সিনিয়র পোস্ট মাস্টার ঘাটাল ও খড়গপুর ডাকঘরগুলিকে বণ্টন করে দেন।

গত ৮ নভেম্বর পুরনো ৫০০ ও ২০০০ টাকার নোট বাতিল করে কেন্দ্রীয় সরকার। অভিযোগ, তারপর থেকেই এসবিআই-এর মেদিনীপুর শাখা থেকে প্রয়োজনের তুলনায় কম টাকা পাচ্ছে মুখ্য ডাকঘর। সেই টাকাই মুখ্য ডাকঘর মেদিনীপুর, ঘাটাল, খড়গপুর মহকুমার ৪৯টি ডাকঘর ও ঝাড়গ্রাম মহকুমার পাঁচটি ডাকঘরে ভাগ করে দিচ্ছে। মেদিনীপুর মুখ্য ডাকঘরের সিনিয়র পোস্টমাস্টার বিকাশ মিশ্র বলেন, ‘‘এসবিআই-এর মেদিনীপুর শাখা থেকে আমরা চাহিদা মতো টাকা পাচ্ছি না। রোজ প্রয়োজনের ২০-৩০ শতাংশ টাকা মিলছে। ফলে গ্রাহকদেরও চাহিদা মতো টাকা দিতে পারছি না।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘চাহিদা মতো টাকা না মেলায় ঘাটাল ও খড়্গপুর মহকুমার ডাকঘরগুলিতেও কম টাকা পাঠাতে হচ্ছে। ফলে প্রয়োজন মতো টাকা না পেয়ে ওই সমস্ত ডাকঘরের গ্রাহকেরাও হয়রানির শিকার হচ্ছেন।’’

এই সমস্যার বিষয়ে এসবিআই-এর মেদিনীপুর শাখার অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার শক্তিকুমার ঘোষ বলছেন, ‘‘রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (আরবিআই) থেকে প্রয়োজন মতো টাকা আসছে না। ফলে ডাকঘর ও বিভিন্ন ব্যাঙ্ককেও চাহিদা মতো টাকা দেওয়া যাচ্ছে না। এ জন্যই সমস্যা হচ্ছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement