ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল।
নামেই সুপার স্পেশ্যালিটি। পরিষেবার ক্ষেত্রে পরিকাঠামোগত খামতি থেকে গিয়েছে প্রতি পদে। তাই ভুগতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। বুধবার প্রসূতি মৃত্যুর পর এমনটাই মনে করছেন ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটির চিকিৎসকরা।
অভিযোগ, পরিকাঠামোগত খামতির কারণে আখেরে জনরোষের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে চিকিৎসকদের। মাস খানেক আগে সরকারি চিকিৎসক সংগঠন— ‘সার্ভিস ডক্টরস্ ফোরাম’ জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে স্মারকলিপি দিয়ে এই আশঙ্কার কথাই জানিয়েছিল। লাভ হয়নি।
বুধবার সকালে জামবনির এক প্রসূতির প্রসব হয় অস্ত্রোপচার করে। তারপর শুরু হয় রক্তক্ষরণ। ভেন্টিলেশনে রেখে ওই তাঁকে বাঁচানো যায়নি। মৃতার রক্ত জমাট বাধার সমস্যা ছিল, তা প্রমাণ হয়েছে ময়নাতদন্তে। অথচ তা জানতেন চিকিৎসকরা।
ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটিতে রক্ত জমাট বাঁধার সময়সীমা (প্রোথ্রম্বিন টাইম) নির্ধারণ-সহ আনুসঙ্গিক বেশ কিছু পরীক্ষার কোনও ব্যবস্থাই নেই। চিকিৎসকদের একাংশের দাবি, জননী সুরক্ষা যোজনার আওতায় থাকা প্রসূতিকে প্রাক প্রসব চিকিৎসায় বাইরে থেকে প্রয়োজনীয় রক্ত পরীক্ষা করাতে বলাটাও নিয়ম বিরুদ্ধ। চিকিৎসক মহলের বক্তব্য, শুধু প্রসূতি নয়, সঙ্কটজনক অন্য রোগীর চিকিৎসাতেও বিস্তর সমস্যা হচ্ছে। এখনও এখানে রক্তের বিলিরুবিন, হেপাটাইসিস ‘বি’ ও ‘সি’ পরীক্ষা হয় না। কফ ও মূত্রের জীবাণু পরীক্ষা ও ওষুধের সেনসিটিভিটি পরীক্ষাও হয় না। থাইরয়েড টেস্ট হয় না। লিভার ফাংশন টেস্ট হয় না।
ব্লাড ব্যাঙ্ক খাতায় কলমে এখনও মহকুমা হাসপাতালের স্তরের। প্লেটলেট-সহ রক্তের বিভিন্ন উপাদান পৃথক করে দেওয়ার ব্যবস্থা নেই।
‘সার্ভিস ডক্টরস্ ফোরাম’-এর রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সজল বিশ্বাস বলেন, “সাইনবোর্ড সর্বস্ব সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল। এতে ক্ষতি হচ্ছে রোগীর। বিক্ষোভের মুখে পড়ছেন চিকিৎসকরা।’’ সিএমওএইচ অশ্বিনী মাঝি বলেন, “ধাপে ধাপে পরিকাঠামো উন্নয়ন হচ্ছে।”