কাঞ্চন নেই, জানেন না বৃদ্ধা মা

তিনি বলছিলেন, ‘‘ভাই অঙ্গদান করে গিয়েছিল। কয়েকদিন আগে কলকাতার বাঙ্গুর হাসপাতালে ভাইকে দেখতে গিয়ে বলে এসেছিলাম।’’

Advertisement

রূপশঙ্কর ভট্টাচার্য

গড়বেতা শেষ আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৮:০০
Share:

কাঞ্চনের মা শেফালি। —নিজস্ব চিত্র

বয়স ৮০ পেরিয়েছে। কানে ভাল শুনতে পান না। আপন মনে বলে চলেছেন বৃদ্ধা, ‘‘ছেলের সঙ্গে তো দেখা হয় না। মেদিনীপুর এলে দেখতে যাব।’’

Advertisement

শুক্রবার বিকেলে গড়বেতা চাঁদবিলায় ঘরে বসে যখন এ কথা বলছেন শেফালি চোঙদার তখনও তিনি জানেন না কলকাতায় মৃত্যু হয়েছে তাঁর ছেলে সুদীপের। এদিন এম আর বাঙুরে মারা গিয়েছেন মাওবাদী নেতা কাঞ্চন ওরফে সুদীপ চোঙদার। মা জানেন না। তবে ভাইয়ের মৃত্যু সংবাদ জানতেন দাদা নিমাই। তিনি বলছিলেন, ‘‘ভাই অঙ্গদান করে গিয়েছিল। কয়েকদিন আগে কলকাতার বাঙ্গুর হাসপাতালে ভাইকে দেখতে গিয়ে বলে এসেছিলাম।’’ তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এ দিন জানিয়েছেন, অঙ্গদানের কথা পরিবারের তরফ থেকে জানানো হয়নি।

২০১০ সালে শিলদা ইএফআর ক্যাম্পে হামলার মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত সাতচল্লিশের সুদীপরা ৪ ভাই, ৩ বোন। ভাইদের মধ্যে সুদীপ সবার ছোট। পড়াশোনায় মেধাবী সুদীপ ফিজিক্সে অনার্স নিয়ে কামারপুকুর কলেজে পড়তেন। কলেজ থেকে ফিরে কয়েকমাস বাড়িতে থাকার পর চন্দ্রকোনা রোডে কৃষি মেশিন ও তার যন্ত্রাংশের ব্যবসা শুরু করেন। নিমাই বলেন, ‘‘ব্যবসায় উন্নতির সময় ২০০২ –’০৩ সাল নাগাদ সুদীপকে ঘাটশিলা থেকে পুলিশ গ্রেফতার করে।’’ ২০০৫ সালে জামিন পেয়ে গড়বেতার চাঁদাবিলার বাড়িতে ফিরে আসেন সুদীপ। বাড়ি ফিরলেও নিজেকে গৃহবন্দি করেই রাখতেন তিনি। একদিন নিরুদ্দেশ হয়ে যান। পিডব্লিউজি ও জনযুদ্ধ গোষ্ঠী মিলিত হয়ে সিপিআই (মাওবাদী) নামে সংগঠন গড়ে ওঠে। এই সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক হন সুদীপ ওরফে কাঞ্চন।

Advertisement

মাওবাদী নেতা কাঞ্চন। —নিজস্ব চিত্র

শিলদা ক্যাম্পে হামলার কয়েকমাস পর ৩ ডিসেম্বর কলকাতা ময়দান থেকে গ্রেফতার হন কাঞ্চন। সেই থেকে তিনি জেলেই ছিলেন। কাঞ্চনের আইনজীবী কৌশিক সিংহ জানাচ্ছেন, জঙ্গলমহলের তাঁর মক্কেলের বিরুদ্ধে ১২ টি মামলা (এর মধ্যে রয়েছে ২০০৮ সালের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের কনভয়ে মাইন বিস্ফোরণের মামলাও) এ ছাড়া কলকাতা ময়দানে মাওবাদী প্রচারপত্র ছড়ানোরও আরও একটি মামলা রয়েছে। শিলদা ক্যাম্পে হামলা চালিয়ে ২৪ জন জওয়ানকে খুনের মামলাটি বাদে বাকি ১২টি মামলায় কাঞ্চন জামিন পেয়েছিলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন