নতুন মাসের দু’টো দিন পেরিয়ে গিয়েছে। এখনও ভাতা পাননি কাউন্সিলরেরা। মজুরি মেলেনি পুরসভার অস্থায়ী শ্রমিকদেরও। কারণ নগদের অভাব।
এত দিন পুরসভার স্থায়ী কর্মী ও নিজস্ব অস্থায়ী কর্মীরা ছাড়া সকলকে নগদে বেতন দেওয়া হত। কাউন্সিলর ও অস্থায়ী শ্রমিকরাও মাসের শুরুতে হাতে-হাতে টাকা দিয়ে দেওয়া হত। কিন্তু নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের পরে চলতি মাসে সেই প্রক্রিয়া ভেস্তে গিয়েছে। কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এ বার থেকে ব্যাঙ্কের মাধ্যমেই কাউন্সিলর ও অস্থায়ী শ্রমিকদের বেতন দেওয়া হবে। ইতিমধ্যেই পুরসভার পক্ষ থেকে সকলের কাছে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর চেয়ে পাঠানো হয়েছে।
পুরসভার দাবি, ৮ অক্টোবর রাত থেকে ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাতিলের পরই পুর কর্তৃপক্ষকে নানা সমস্যার মুখে পড়তে হয়েছে। টাকার অভাবে অনেক কাজে বাধা পড়েছে। মাস পয়লায় নতুন চিন্তা কী ভাবে নগদে বেতন হবে! পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার বলেন, “হাতে নগদ টাকা নেই। আমরা তাই ব্যাঙ্কের মাধ্যমে বেতন দেব বলে ঠিক করেছি। সে কারণেই এখনও কেউ বেতন পাননি। সকলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর চেয়েছি। কাজ হয়ে গেলেই বেতন হয়ে যাবে।’’
জানা গিয়েছে, পুরসভায় সমস্ত স্থায়ী কর্মী এবং পাম্প অপারেটর, সুইপার ও অস্থায়ী কর্মীদের বেতনের টাকা ব্যাঙ্কেই জমা পড়ে। তবে ৩৫ জন কাউন্সিলরের বেতন হয় নগদে। তা ছাড়াও আংশিক সময়ের প্রায় ১৫০ শ্রমিকের বেতনও নগদে দেওয়া হয়।
শুক্রবার কর্তৃপক্ষের চিঠি হাতে পেয়েছেন কাউন্সিলরদের অনেকেই। তবে বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভও দেখা গিয়েছে অনেকের মধ্যে। ৩৩নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর স্মৃতিকণা দেবনাথ বলেন, “আমি এখনও ভাতা পাইনি। অ্যাকাউন্ট নম্বর চাওয়া হয়েছে। এ ভাবে পুরসভা দায় সেরে ফেলবে আমাদের বেতন ব্যাঙ্কে ফেলে। কিন্তু আমরা সেই টাকা তুলব কী ভাবে?’’
ভাতা বাবদ পুরপ্রধান পান প্রায় সাড়ে ১০হাজার টাকা। উপ-পুরপ্রধানকে দেওয়া হয় প্রায় সাড়ে ৭হাজার টাকা। আর পাঁচ জন পুর পারিষদ পান সাড়ে চার হাজার টাকা এবং অন্য কাউন্সিলররা সাড়ে তিন হাজার। ১০নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর, প্রাক্তন উপ-পুরপ্রধান চিত্তরঞ্জন মণ্ডলের অভিযোগ, “ভাতা অত্যন্ত সামান্য। সেই টাকা পুরসভা নগদেই দিয়ে দিতেই পারত।’’
শুধু কর্মীদের বেতনই নয়। পুরসভা সূত্রে দাবি করা হয়েছে, নোট বাতিলের পর ঠিকাদারদের চেক দিচ্ছে পুরসভা। কিন্তু সেই চেক ভাঙিয়ে ঠিকাদারেরা তাঁদের শ্রমিকদের মজুরি দিতে পারছেন না। তার জেরে বহু কাজ ধাক্কা খাচ্ছে। অনেক কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সে কথা স্বীকারও করেছেন পুরপ্রধানও।