তমলুক শহরে পানীয় জল সরবরাহ করতে এবার রূপনারায়ণের জল ব্যবহারের পরিকল্পনা করেছে পুরসভা। শহরের নারায়ণপুর এলাকায় নদী ভিত্তিক এই জল প্রকল্প গড়ার জন্য পরিকল্পনা হয়েছে বলে পুরসভা সূত্রে খবর। তমলুকের পুরপ্রধান রবীন্দ্রনাথ সেন বলেন, ‘‘ভূগর্ভস্থ জল তোলার পরিবর্তে রূপনারায়ণ নদের জল পরিস্রুত করে তা শহর ও সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের কাছে সরবরাহের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এর জন্য প্রায় ২০০ কোটি টাকার প্রকল্প রিপোর্ট তৈরি করে তৈরি করে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে।’’ তিনি জানান, রাজ্য সরকারের তরফে আশ্বাসও পাওয়া গিয়োছে।
পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা সদর তমলুক শহরের পুরসভার বয়স দেড়শো বছর পেরিয়ে গিয়েছে। পুরসভার ২০টি ওয়ার্ডে জনসংখ্যা ৭০ হাজার ছাড়িয়েছে। ২০০২ সালে অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলা ভাগের পর পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা সদর হয় তমলুক। এর পর থেকেই শহরে নতুন বাড়ি ঘরের পাশাপাশি জনসংখ্যাও বাড়তে থাকে। স্বাভাবিক ভাবে শহরে পানীয় জলের চাহিদাও দ্রুত বাড়তে থাকে।
আগে শহরের বাসিন্দাদের পানীয় জলের চাহিদা পূরণের জন্য জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর পানীয় জল সরবরাহ করত। যদিও চাহিদার তুলনায় তা খুবই কম ছিল। প্রয়োজন মেটাতে শহরের বিভিন্ন এলাকায় নলকূপই ছিল বাসিন্দাদের ভরসা। শহরের মানুষের জলের চাহিদা মেটাতে পুরসভা ১৯৮১ সাল নাগাদ পাম্প হাউস বসিয়ে ভূগর্ভস্থ জল তুলে পাইপলাইনের মাধ্যমে সরবরাহ শুরু করে। বর্তমানে পুরসভার বিভিন্ন এলাকায় সব মিলিয়ে ৩৪টি পাম্প হাউসের মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ জল তুলে সরবরাহের ব্যবস্থা রয়েছে। পুর কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, শহরে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় ভূগর্ভস্থ জল তোলার পরিমাণও বাড়াতে হচ্ছে। কিন্তু গরমে জলের চাহিদা বাড়ে। সেই সঙ্গে ভূগর্ভস্থ জ লস্তর নেমে যাওয়ায় জলের জোগানে টান পড়েছে। পাশাপাশি এর ফলে পুরসভার খরচও বেড়ে যাওয়ায় সমস্যা হচ্ছে।
প্রশাসন সূত্রে খবর, অদূর ভবিষ্যতে তমলুক শহর এলাকা নিমতৌড়ি পর্যন্ত সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে। এতে শহরের আয়তন ও জনসংখ্যা যেমন বৃদ্ধি পাবে, তেমনই পানীয় জলের চাহিদাও বাড়বে। সে কথা মাথায় রেখেই শহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া রূপনারায়ণ নদীর জল পরিস্রুত করে সরবরাহের পরিকল্পনা হয়েছে। আগামী ২৫ বছর পানীয় জল সরবরাহের লক্ষ্যেই দিকে এই উদ্যোগ।
পুরপ্রধান রবীন্দ্রনাথ সেন বলেন, ‘’নতুন জলপ্রকল্পের জন্য শহরের কাছাকাছি রূপনারায়ণ নদী লাগোয়া ৫-৬ একর জমি প্রয়োজন। শহরের কাছাকাছি কয়েকটি এলাকা চিহ্নিত করা হয়েছে। সবদিক খতিয়ে দেখে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’