পরখ: মাংসের মান যাচাই করছেন পুরকর্মীরা। ছবি: কৌশিক সাঁতরা
হঠাৎ অভিযান। তাতেই চক্ষু চড়ক গাছ হওয়ার জোগাড়। আপাত দৃষ্টিতে রেস্তরাঁগুলি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। কিন্তু সেগুলিরই কোনওটির অন্দরমহল থেকে মিলল বাসি মাংস। কোনটিতে আবার বাসি মাংসের পদ। সোমবার চন্দ্রকোনা শহরে পুর কর্তৃপক্ষের অভিযানে ধরা পড়ল এমনই ছবি।
রাজ্যে ভাগাড়-কাণ্ডের পর তৎপর হলেন চন্দ্রকোনা পুর কর্তৃপক্ষ। এদিনই শহরের মাংস বিক্রেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে ক্ষীরপাই পুরসভাও। কিন্তু অভিযান তো দূর অস্ত্, তা নিয়ে করেনি ঘাটাল পুরসভা। ঘাটালবাসীর একাংশের প্রশ্ন, “আতঙ্ক কাটাতে ঘাটাল শহরে কবে শুরু হবে অভিযান? এখানকার মাংস দোকান সহ খাবারের দোকান গুলিতে বাসি মাংস বিক্রির অভিযোগ তো বহুদিনের।” ঘাটাল পুরসভার চেয়ারম্যান বিভাস ঘোষ বললেন, “আপনারা বারবার একই প্রশ্ন করছেন কেন? আমরা তো মোটেই ভাবিত নয়!”
এ দিন চন্দ্রকোনার পুরপ্রধান চেয়ারম্যান অরূপ ধাড়ার নেতৃত্বে শুরু হয় অভিযান। গোঁসাইবাজার, গাছশিতলা বাজার-সহ বিভিন্ন এলাকার সাতটি হোটেল-রেস্তরাঁয় অভিযান চালান হয়। পুরসভা সূত্রে খবর, কিছু রেস্তরাঁর ফ্রিজে মিলেছে বাসি মাংস। কয়েকটি রেস্তরাঁয় পাওয়া গিয়েছে বাসি মাংসের পদ। নমুনা সংগ্রহের পর বাসি গ্রেভি এবং রান্না করা মাংস ফেলে দেন পুরকর্মীরা। শহরের একাধিক মাংসের দোকানেও ঢুঁ মারে পরিদর্শক দলটি। ফ্রিজের মাংস বা বাসি মাংস বিক্রি করা যাবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। পুরপ্রধান বলেন, “এ বার নিয়ম করেই আমরা অভিযান করব। মাংস বিক্রেতাদের সঙ্গে বৈঠকও করব। বাসি মাংস বিক্রির অভিযোগ পেলেই লাইসেন্স বাতিল করা হবে। সংগ্রহ করা মাংসের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে।”
ক্ষীরপাই পুরসভাও এ দিন শহরের মাংস বিক্রেতাদের সঙ্গে একটি বৈঠক করে। আগেই মাইকিং করে মাংস দোকানের মালিকদের সতর্ক করে দিয়েছিল পুরসভা। এ দিন বৈঠক করে পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেন, মরা মুরগি বা বাসি মাংস বিক্রি করা যাবে না। কোনও ভাবেই অবিক্রিত মাংস ফ্রিজে রাখা যাবে না। দোকান গুলি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। বাসি মাংস বিক্রির অভিযোগ এলেই সংশ্লিষ্ট দোকানের ট্রেড লাইসেন্স বরাবরের জন্য বাতিল করা হবে। এমনকি আইনানুগ ব্যবস্থাও নেওয়া হবে। পুরপ্রধান দুর্গাশঙ্কর পান বলেন, “শুধু সতর্ক নয়,আমরা নজরদারি চালাচ্ছি।”
তবে ঘাটালের মতই খড়ার ও রামজীবনপুর পুরসভাও এখনও অভিযানের কথা চিন্তাভাবনা করেনি। বাসি মাংস বিক্রি বন্ধে কোনও বৈঠকও হয়নি। খড়ারের পুরপ্রধান উত্তম মুখোপাধ্যায় এবং রামজীবনপুরের পুরপ্রধান নির্মল চৌধুরী বলেন, “এখানে ভাগাড় নেই। আর মানুষজনও সচেতন।”