kharagpur municipality

নতুন পুরপ্রধান ঠিক হয়নি, সরল প্রদীপের নামফলক

জানা গিয়েছে গত শুক্রবার পুরসভা বন্ধের আগেই পুরপধানের অফিসঘরের দরজায় থাকা ওই নাম ফলক খুলে দেওয়া হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০২২ ০৮:৩০
Share:

উধাও হল পুরপ্রধানের নাম ফলক। নিজস্ব চিত্র

পদত্যাগ করেছেন পুরপ্রধান। তবে তার আইনি স্বীকৃতি নিয়ে জটিলতা ছিল। রেলশহরে পুরপ্রধানের দায়িত্বভারও কাউকে দেওয়া হয়নি। এই আবহে এ বার পুরপ্রধানের নাম ফলক উধাও হওয়ায় বিতর্ক বাড়ল খড়্গপুরে।

Advertisement

সোমবার পর্যন্ত খড়্গপুরের পুরপ্রধান পদে কারও নাম ঘোষণা করেননি তৃণমূল নেতৃত্ব। অথচ সদ্য পুরপ্রধান পদ থেকে ইস্তফা দেওয়া প্রদীপ সরকারের নাম ফলক পুরপ্রধানের অফিসঘরের দরজা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ, উপ-পুরপ্রধান তৈমুর আলি খানের উপস্থিতিতে তা সরানো হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, নতুন করে পুরপ্রধানের দায়িত্বভার কাউকে না দেওয়া পর্যন্ত কীভাবে নামফলক বদল করা হল?

জানা গিয়েছে গত শুক্রবার পুরসভা বন্ধের আগেই পুরপধানের অফিসঘরের দরজায় থাকা ওই নাম ফলক খুলে দেওয়া হয়। কাউন্সিলরদের একাংশের বক্তব্য, ইস্তফাপত্র গ্রহণের আর্জি জানিয়ে পুরপ্রধানের সই করা একটি চিঠি কাউন্সিলররা পেলেও তা নিয়ে কোনও বোর্ড মিটিং হয়নি। কাউন্সিলররা সেই চিঠি গ্রহণ করবেন কি না সেটাও জানা যায়নি। পুরপ্রধানের দায়িত্ব হস্তান্তরও হয়নি। ফলে, বিভ্রান্তি থাকছে। পুরসভার বিরোধী দলনেতা কংগ্রেসের বিষ্ণুবাহাদুর কামি বলেন, “একটা ধোঁয়াশা ভরা চিঠি পেয়েছি। পুরপ্রধান কেন তাঁর দলের নির্দেশে পদত্যাগ করতে চাইছেন, তাঁর বদলে কাকে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে সেটা স্পষ্ট নয়। আমরা সেই পদত্যাগপত্র গ্রহণ না বর্জন করব সেটা তো বোর্ডের বৈঠক ছাড়া জানানো সম্ভব নয়। তার আগেই পুরপধানের নাম ফলক খুলে দেওয়া হল। সব মিলিয়ে পুরআইন নিয়ে খেলা হচ্ছে।”

Advertisement

প্রশ্ন তুলেছেন প্রদীপ-অনুগামীরাও। প্রদীপ নিজেও বলছেন, “মহকুমাশাসক আমার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন। কিন্তু সেটার আইনি স্বীকৃতি মিলেছে কি না তার লিখিত চিঠি আমি পাইনি। পুরপ্রধানের দায়িত্ব কাউকে দেওয়া হয়েছে বলেও আমার জানা নেই। অথচ উপ-পুরপ্রধান দাঁড়িয়ে থেকে কীভাবে আমার নামফলক সরিয়ে দিলেন সেটা আমাকে অবাক করেছে।” এ বিষয়ে উপ-পুরপ্রধান তৈমুর আলি খানের বক্তব্য, “জেলাশাসকের পক্ষ থেকে পদত্যাগপত্র জমার ই-মেল পেয়েছি। তাছাড়া প্রদীপ সরকারও পুরপ্রধানের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন বলে কাউন্সিলরদের চিঠি দিয়েছেন। উনি যেহেতু পদত্যাগ করেছেন তাই নাম ফলক খোলা হয়েছে।” তৃণমূলের জেলা কো-অর্ডিনেটর অজিত মাইতি বলছেন, “নাম ফলক সরানোর কাজ প্রশাসনের। তবে পুরপ্রধান পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন জেনেই নাম ফলক খোলা হয়েছে বলে উপ-পুরপ্রধান জানিয়েছেন।”

এ দিক, পুরপ্রধানের পদত্যাগ নিয়ে খড়্গপুরে এসে মুখ খুলেছেন স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক তথা কাউন্সিলর হিরণ চট্টোপাধ্যায়। রবিবার সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে হিরণ বলেন, “একজন মানুষের ২০১৫ সালের আগে ৬ হাজার টাকা বেতনের চাকরি করতেন। এখন তাঁর কোটি-কোটি টাকার সম্পত্তি। লজ্জাজনক ঘটনা, তাঁর নিজের দলের ২০জন কাউন্সিলরই বিরোধিতা করেছেন। দল করে কোটি কোটি টাকা কামালে যে শাস্তি পেতে হয়, তার সবথেকে বড় দৃষ্টান্ত প্রদীপ সরকার।” প্রদীপের পাল্টা প্রতিক্রিয়া, “আমি শুনেছি হিরণ চট্টোপাধ্যায় পারিবারিক সমস্যায় রয়েছেন। তাই বিপর্যস্ত হয়ে ব্যক্তিগত আক্রমণ।” অজিত মাইতিরও খোঁচা, “বিজেপির লোকেদের কোটি-কোটি টাকা দেখে অভ্যস্ত হিরণ চট্টোপাধ্যায় হয়তো সকলের কোটি-কোটি টাকা দেখছেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন