মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জেলা সফরের পরপরই ঝাড়গ্রামে নতুন কয়েকজন আধিকারিক এসেছেন। একজন অতিরিক্ত জেলাশাসকও এসেছেন। সেই নতুন অতিরিক্ত জেলাশাসককে ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদের কাজকর্ম দেখার দায়িত্ব দেওয়া হল। সোমবারই এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদের সভাধিপতি সমায় মাণ্ডি বলেন, “অতিরিক্ত জেলাশাসক এসেছেন। উনি জেলা পরিষদের কাজকর্ম দেখবেন।’’ সমায়বাবুর আশা, “এ বার ঝাড়গ্রামের উন্নয়নে আরও গতি আসবে।’’ মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফরের পরে ব্লকে ব্লকে পর্যালোচনা বৈঠক শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার যেমন সাঁকরাইলের রোহিণীতে বৈঠক হয়। বৈঠকে জেলা পরিষদের সভাধিপতিও ছিলেন।
ক’দিন আগে ঝাড়গ্রামে অতিরিক্ত জেলাশাসক সজলকান্তি টিকাদারের কাছে জেলা পরিষদের কাজের হিসেব চেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সজলকান্তিবাবু ঠিকমতো হিসেব দিতে না পারায় মুখ্যমন্ত্রী ভর্ৎসনা করেন। ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদের সভাধিপতি সমায় মাণ্ডি তখন মুখ্যমন্ত্রীকে বলেছিলেন, ‘‘উনি তো সপ্তাহে এক-দু’দিন আসেন।’’ শুনে অবাক হন মুখ্যমন্ত্রী। সজলকান্তিবাবুকে জি়জ্ঞাসা করেন, ‘‘আপনি কি অন্য কোনও কাজ করেন?’’ পরে মুখ্যমন্ত্রীকে বোঝানো হয়, সজলকান্তিবাবু পশ্চিম মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ)। ঝাড়গ্রামে এই পদে কোনও আধিকারিক নেই। তাই তিনি অতিরিক্ত হিসেবে ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদের কাজ দেখভাল করেন। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ ছিল, এখন থেকে ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদের কাজকর্ম দেখভাল করবেন ঝাড়গ্রামের অতিরিক্ত জেলাশাসক টি সুব্রক্ষ্মণ্যম। পরে ঝাড়গ্রামের নতুন অতিরিক্ত জেলাশাসক হয়ে আসেন কৌশিককুমার পাল। তিনি হুগলিতে গ্রামোন্নয়ন বিভাগের কাজকর্ম দেখভাল করতেন। পদাধিকার বলে ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদের এগ্জিকিউটিভ অফিসার (ইও) জেলাশাসক আর অর্জুন। কৌশিকবাবুকে অ্যাডিশনাল এগ্জিকিউটিভ অফিসারের (এইও) দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
গত ৯-১১ অক্টোবর ঝাড়গ্রাম সফরে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নতুন জেলা গঠনের পরে এটাই ছিল মুখ্যমন্ত্রীর প্রথম ঝাড়গ্রাম সফর। ঝাড়গ্রামের উন্নয়নের কাজে তিনি যে সন্তুষ্ট নন তা শুরুতেই স্পষ্ট করে দেন তিনি। প্রশাসনিক বৈঠকে আমলাদের পাশাপাশি বিস্তর বকাঝকা করেন দলের মন্ত্রী- নেতাদেরও। প্রশাসনিক বৈঠকের পরে অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ মন্ত্রী চূড়ামণি মাহাতোকে তৃণমূলের ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। ভারপ্রাপ্ত জেলা সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয় পশ্চিম মেদিনীপুরের তৃণমূলের সভাপতি অজিত মাইতিকে। সমান্তরাল ভাবে ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক আর অর্জুনের মাথায় বসানো হয় পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনাকে।
মুখ্যমন্ত্রীর ধমকের পরে নড়েচড়ে বসে জেলা প্রশাসন। উন্নয়নমূলক কাজকর্মের পর্যালোচনায় বৈঠক ডাকা হয়। পাশাপাশি নতুন করে কয়েকজন অফিসারকে ঝাড়গ্রামে পাঠানো হয়।