প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় এ বার ১,৮০০ কিলোমিটার রাস্তা করতে চেয়ে প্রস্তাব পাঠাচ্ছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা। রাজ্যের মাধ্যমে কেন্দ্রের কাছে এই প্রস্তাব পাঠানো হবে। এ জন্য ডিপিআর (ডিটেলস প্রোজেক্ট রিপোর্ট) তৈরির কাজও শুরু হয়েছে। জেলার আশা, এই প্রস্তাব মঞ্জুর হবে। জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শৈবাল গিরি বলেন, “গ্রাম সড়ক যোজনায় এ বার ১,৮০০ কিলোমিটার রাস্তা তৈরির পরিকল্পনা করা হচ্ছে। নির্দিষ্ট প্রস্তাব পাঠানো হবে।” অবশ্য গত আর্থিক বছরে যে সব রাস্তার জন্য অর্থ বরাদ্দ হয়েছিল, তার একাংশের কাজই এখনও শেষ হয়নি। কয়েকটির গতি শ্লথ। শৈবালবাবুর আশ্বাস, “কিছু রাস্তার কাজ চলছে। নজরদারি রাখা হয়েছে। মার্চের মধ্যে কাজ শেষ হবে।”
জঙ্গলমহলের এই জেলায় বহু রাস্তাই জীর্ণ। বেহাল রাস্তায় যাতায়াতেরও সমস্যা হয়। ভোগান্তিতে পড়েন পথচলতি সাধারণ মানুষ। ২০০০ সালে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা চালু করে কেন্দ্রীয় সরকার। অন্তত পাঁচশো বা তার বেশি জনসংখ্যার সব জনপদের জন্য যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলাই এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য। প্রাথমিক ভাবে কেন্দ্রের ১০০ শতাংশ আর্থিক সহায়তায় প্রকল্পটি চালু হয়েছিল। শর্ত ছিল, রাস্তা তৈরি হলে তার রক্ষণাবেক্ষণ করবে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের সরকার। প্রশাসনের এক কর্তা জানান, শুরুতে পুরো টাকা দিলেও ধাপে ধাপে আর্থিক সহায়তার পরিমাণ কমিয়ে দেয় কেন্দ্র। শেষ পর্যন্ত নরেন্দ্র মোদীর সরকার জানিয়ে দেয়, গ্রামের রাস্তা তৈরির এই প্রকল্পে কেন্দ্র দেবে ৬০ শতাংশ অর্থ। বাকি ৪০ শতাংশ দিতে হবে সংশ্লিষ্ট রাজ্যকে।
এক সময়ে এই প্রকল্পে বরাদ্দের জন্য লড়তে হত জেলাকে। বছর কয়েক হল বরাদ্দের পর বরাদ্দ জুটেছে। আর তা বাস্তবায়িত করতে হিমশিম খাচ্ছে প্রশাসন। যেমন, ২০০০-২০১১ পর্যন্ত ১১ বছরে এই প্রকল্পে জেলা রাস্তা তৈরির বরাত পেয়েছিল মাত্র ১৭৬৪ কিলোমিটার। অথচ ২০১২-’১৩ আর্থিক বছরে এই প্রকল্পে এক লাফে জেলাকে ১৫১০ কিলোমিটার রাস্তা তৈরির অনুমোদন দেয় কেন্দ্র। ২০১৩-’১৪ আর্থিক বছরে ফের ৯৩০ কিলোমিটার রাস্তার বরাত মেলে। কী ভাবে এত রাস্তার কাজ শেষ করা যাবে তা নিয়ে মাথায় হাত পড়ে প্রশাসনিক কর্তাদের। জেলার পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শৈবালবাবু বলেন, “জেলার সর্বত্র পিচের রাস্তা তৈরিতে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। পঞ্চায়েতে এ বার রাস্তা হলেই সেটা পিচের হবে।”