সরকারি প্রচার থাকলেও প্রশ্নে পরিকাঠামো

মনোরোগে মন নেই

জীবনের ওঠাপড়া গায়ে লাগে। মাঝে মাঝে তা লাগে মনেও।

Advertisement

অভিজিৎ চক্রবর্তী

ঘাটাল     শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০০:৩৬
Share:

ঘাটাল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের বহির্বিভাগ। নিজস্ব চিত্র

জীবনের ওঠাপড়া গায়ে লাগে। মাঝে মাঝে তা লাগে মনেও।

Advertisement

চাওয়া-পাওয়ার দ্বন্দ্বে মাঝে মধ্যে বেসামাল হয় মানুষের মন। কিন্তু অসুস্থ মনের চিকিৎসার পরিকাঠামো কি পর্যাপ্ত? উঠছে প্রশ্ন। মেদিনীপুর মেডিক্যালে স্থায়ী মনোবিভাগ রয়েছে। বছর চারেক আগে মাসে দু’দিন মনোরোগীদের জন্য বর্হিবিভাগ চালু হয়েছে ঘাটাল হাসপাতালে। মুখে মুখে প্রচারের ফলে সেখানে এখন উপচে পড়া ভিড়। সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের পরিসংখ্যান বলছে, ওই দু’দিন অন্তত গড়ে তিনশো জনের মতো রোগী আসেন। তা সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয় বিভাগের একজন চিকিৎসককে। এই পরিস্থিতিতে দাবি উঠেছে, ঘাটাল হাসপাতালে মনোরোগের চিকিৎসার জন্য স্থায়ী বিভাগ খোলা হোক। এবং অবিলম্বে মাসে দু’দিনের বদলে চারদিন পরিষেবা শুরু হোক।

ঘাটাল মহকুমার বাসিন্দারা ছাড়াও হাওড়া এবং হুগলির একটা অংশের মানুষ এই হাসপাতালের উপর নির্ভর করেন। নানা রোগের সঙ্গে মনোরোগীরাও চিকিৎসার জন্য ঘাটালে ভিড় করেন। একদিনে রোগী হয় প্রায় দেড়শো। তাঁদেরকে গড়ে দু’মিনিট ধরে সময় দিলেই অন্তত ছয় থেকে সাত ঘণ্টা জরুরি। কিন্তু বহিবির্ভাগ খোলা থাকে তার অর্ধেক সময়। সঙ্গে একজন চিকিৎসক। ফলে আদৌও চিকিৎসা কতটা হচ্ছে তা নিয়ে সংশয় থাকে। কিন্তু সে প্রশ্ন সরিয়ে রেখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রাথমিক ভাবে জোর দিয়েছেন, এই উদ্যোগটি শুরুর ব্যাপারে। ঘাটাল হাসপাতালের সুপার কুণাল মুখোপাধ্যায়ের কথায়, “কিছুটা সমস্যা হচ্ছে আমরাও জানি। সে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। সেটা অনুমোদন হয়ে গেলে মনোরোগীদের যথাযথ চিকিৎসা সম্ভব হবে।”

Advertisement

মনোরোগের চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত অনেকেই বলছেন, শরীরের চেয়ে মনের চিকিৎসা আলাদা। চট করে বোঝা যায় না রোগটা কোথায়। আবার রোগটা ধরা গেলেও রোগীকে সুস্থ করতে দীর্ঘসময় ধরে কাউন্সেলিং করাতে হয়। দীর্ঘসময় ধরে অনেক কথা বলে তবে সমাধানের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু ঘাটাল হাসপাতালে কি সে সুযোগ রয়েছে! হাসপাতাল সূত্রের খবর, শুধু সংখ্যা নয়। বিচিত্র সমস্যা নিয়ে মানুষজন ভিড় করেন হাসপাতালে। কারও দাম্পত্য কলহ, কারও আবার সন্তান নিয়ে নানা সমস্যা। কিন্তু সমস্যা যাই হোক না কেন, নাম লিখিয়ে সমস্যা ভাল করে শুনে সমাধান নিয়ে কথা বলার আগেই চলে আসছেন পরের রোগী। ফলে কাজের কাজ আদৌও কতটা হচ্ছে তা নিয়েও সংশয় থাকছে। পশ্চিমের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরার আশ্বাস, “ঘাটাল হাসপাতালে মনোরোগের চিকিৎসার জন্য স্থায়ী বিভাগ খোলার জন্য উদ্যোগী স্বাস্থ্য ভবন।” কিন্তু জেলার বাকি হাসপাতালগুলির কী হাল? মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কথায়, ‘‘জেলা মানসিক স্বাস্থ্য প্রকল্পের চিকিৎসকেরাই সুপার স্পেশ্যালিটি-সহ বিভিন্ন হাসপাতালে গিয়ে শিবির করে পরিষেবা দেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন