নজর-নেই: জঞ্জালময় পুকুর। ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে। নিজস্ব চিত্র
মাস খানেক আগে খড়্গপুরের রেল ওয়ার্ডে দেখা গিয়েছিল ডেঙ্গির প্রকোপ। ডেঙ্গি আক্রান্ত ৮জনকে ভর্তি করতে হয়েছিল রেল হাসপাতালে। সেই সময় রেল এলাকায় পরিচ্ছন্নতার অভাবের অভিযোগ তুলেছিল খোদ পুরসভা। কিন্তু সপ্তাহ ঘুরতেই পুর এলাকাতেও ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। ফলে, প্রশ্নের মুখে পড়েছিল পুরসভার ভূমিকাও।
দিন কুড়ি আগে রেল এলাকার ১৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে শুরু হয়েছিল সাফাই অভিযান। তারপরই অভিযান মুখ থুবড়ে পড়েছে। অধিকাংশ ওয়ার্ডেই মশা দমনে পুরসভার বিশেষ অভিযান হয়নি। ডেঙ্গি আক্রান্ত ওয়ার্ডেও অভিযান হয়নি বলে অভিযোগ। পুরসভার দাবি, বৃষ্টির জলে লার্ভা ভেসে গিয়েছে। কিন্তু শহরবাসীর বক্তব্য, মশার উপদ্রব বাড়ছে। নানা এলাকায় জমে রয়েছে জল-আবর্জনা। মানুষকে সচেতন করতেও পুরসভার হেলদোল নেই।
কথা ছিল, গত ৮জুলাই থেকে বিশেষ অভিযানে প্রতিটি ওয়ার্ডে পুরসভার পক্ষ থেকে ২৫-৩০জন শ্রমিক নামিয়ে জঙ্গল কাটা, নর্দমা সাফাই, আবর্জনা সাফাই, তেল দেওয়ার মতো নানা কাজ করা হবে। চলবে সচেতনতা প্রচার। শহরের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে এ বার ডেঙ্গির প্রকোপ দেখা দিয়েছে। ঘরে ঘরে বাড়ছে জ্বরে আক্রান্ত। অথচ এই ওয়ার্ডেই আবর্জনার স্তূপ, বাড়ছে জঙ্গল, জমা জলে মশার উপদ্রব। ওয়ার্ডের বাসিন্দা প্রদীপকুমার ধর বলেন, “মানুষের সচেতনতার অভাব যেমন রয়েছে তেমন পুরসভার উদাসীনতাও রয়েছে। মশা মারার তেল দেওয়া হচ্ছে না।” এই ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সুনীতা গুপ্ত মানছেন, “পুরসভার বিশেষ অভিযান হয়নি।”
একই অবস্থা শহরের ১, ২, ৩, ৪, ৬, ৭, ১৪, ১৭, ২৩, ২৫, ২৮, ৩২, ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডেও। ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি সম্পাদক চন্দন দে বলেন, “আমরাই এ বার দলের পক্ষ থেকে অভিযানে নামব ঠিক করেছি।” ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের অবস্থা আরও করুণ। স্থানীয় গৃহবধূ অন্তরা আচার্য বলেন, “আমাদের খড়্গেশ্বর মন্দির এলাকায় নিকাশি বেহাল। একটি ভ্যাট পর্যন্ত নেই। আবর্জনার পাহাড় জমে থাকছে।” ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কংগ্রেস অপর্ণা ঘোষের কথায়, “১০-১২ দিন আগে তেল দিয়েছিল। আর কোনও অভিযান হয়নি।” একই সুরে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর কল্যাণী ঘোষ বলেন, “আমার ওয়ার্ডে ২ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত। অথচ পুরসভার অভিযান চলেনি।”
কেন এই পরিস্থিতি? পুরপ্রধান প্রদীপ সরকারের জবাব, “বৃষ্টির জন্য অভিযান স্থগিত ছিল। আজ, সোমবার থেকে ফের অভিযান শুরু হবে।”