সুলতানপুর

বাড়ছে দুর্ঘটনা, গার্ডওয়াল বসিয়েই দায়সারা কাজ

পরপর দুর্ঘটনায় নিরীহ মানুষের প্রাণহানিতে টনক নড়ল। যদিও দায়সারা কাজে খড়্গপুর গ্রামীণের সুলতানপুর বাসস্টপে সমস্যা মেটেনি বলে অভিযোগ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০১৬ ০৬:৩৮
Share:

বিশাল রাস্তায় এ ভাবেই বাসের জন্য অপেক্ষা করেন যাত্রীরা। —নিজস্ব চিত্র।

পরপর দুর্ঘটনায় নিরীহ মানুষের প্রাণহানিতে টনক নড়ল। যদিও দায়সারা কাজে খড়্গপুর গ্রামীণের সুলতানপুর বাসস্টপে সমস্যা মেটেনি বলে অভিযোগ।

Advertisement

ঘটনাটি গত ১৮ মে-র। সকালে ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে সুলতানপুর বাস স্টপে দাঁড়িয়ে ছিলেন নির্মল দোলুই। সেই সময় একটি গাড়িকে ওভারটেক করতে যায় একটি ডাম্পার। ব্যস্ত সময়ে, জনবহুল বাসস্টপে ডাম্পারের চাকায় পিষ্ট হন নির্মলবাবু। প্রতিবাদে স্থানীয়রা রাস্তা অবরোধ করেন। দীর্ঘক্ষণ অবরোধ চলার পরে পুলিশি মধ্যস্থতায় অবরোধ উঠে যায়।

শুধু নির্মলবাবু নন, বাসস্টপের কাছে রাস্তা পার হওয়ার সময় সম্প্রতি পরপর দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় স্থানীয় বেগুনিয়া গ্রামের হাবিবুল আলি, দুর্গাপুর গ্রামের গোবিন্দ মিদ্যার। মাস কয়েক আগে রাস্তা পেরোতে গিয়ে গাড়ির ধাক্কায় গুরুতর জখম হন গোপাল গঙ্গোপাধ্যায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, মৃত্যু মিছিলের পরও দায়সারা ভাবে কাজ সেরেছে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

সুলতানপুর বাসস্টপের কাছে দুর্ঘটনা বেড়ে যাওয়ার কারণ কী?

সুলতানপুরে ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের দুই প্রান্তে দু’টি গ্রামীণ সড়কে এসে মিশেছে। এই রাস্তা দু’টি দিয়ে কালিয়ারা গ্রাম পঞ্চায়েতের মাদপুর, বসন্তপুর, মেউদিপুর, কোলাগেড়িয়া, রামনগর, চৌপোলা, বেগুনিয়া, কুলিয়ার-সহ বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ জাতীয় সড়কে বাস ধরতে আসেন। এই রাস্তার পূর্বদিকে কলকাতা। পশ্চিম দিকে রয়েছে খড়্গপুর শহর। কলকাতা, হলদিয়া, ডেবরা, পাঁশকুড়া, মেচেদা, কাঁটাখালি, ময়না-সহ বিভিন্ন রুটের বাস ধরতে প্রতিদিন স্থানীয় বহু লোক এই স্টপে ভিড় করেন। বাস স্টপের অদূরেই জাতীয় সড়কে দু’টি লেনের মাঝে ডিভাইডারে ফাঁকা জায়গা রয়েছে। এখান দিয়েই প্রয়োজনে গাড়ি জাতীয় সড়কের এক লেন থেকে অন্য লেনে যেতে পারে।

অভিযোগ, এমনিতেই বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চলে। এ ছাড়াও লেন পরিবর্তনের সময়ও অনেক চালক গাড়ির গতি কমান না। ফলে লেন পরিবর্তনকারী গাড়ির সঙ্গে প্রায়ই অন্য গাড়ির সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আর এই দুর্ঘটনার ফলে নিরীহ মানুষের প্রাণ যায়। গত ১৮ মে দুর্ঘটনার পর অবস্থা সামাল দিতে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ অস্থায়ী গার্ডওয়াল বসিয়ে ওই ডিভাইডারের ফাঁকা অংশটি বন্ধ করে দিয়েছে। তারপরেও অবশ্য দুর্ঘটনা ঘটেই চলেছে। অভিযোগ, নীচু করে গার্ডওয়াল বসানোয় অনেকেই তা দূর থেকে দেখতে পাচ্ছেন না। ফলে আগের মতোই তাঁরা ওই ক্রসিং পয়েন্ট দিয়েই লেন পরিবর্তন করতে গিয়ে দুর্ঘটনার মুখে পড়ছেন বলে অভিযোগ।

সম্প্রতি গাড়ি ঘোরাতে গিয়ে একটি পিক-আপ ভ্যানের চালক ওই গার্ডওয়ালে ধাক্কা মারে। ঘটনায় জখম হন তিনি। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, দুর্ঘটনা কমাতে এলাকায় গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করুক পুলিশ। এলাকায় উড়ালপুল তৈরির দাবিও জানিয়েছেন অনেকে।

সুলতানপুরের বাসিন্দা অনন্ত পাত্র বলেন, “প্রতিদিন এলাকায় একটা না একটা দুর্ঘটনা ঘটে। এখানে যান চলাচলে কোনও পুলিশি নিয়ন্ত্রণ নেই। বিষয়টি জেলাশাসককে জানিয়েছি। আমরা চাই, দ্রুত জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসন এলাকায় উড়ালপুল নির্মাণে উদ্যোগী হোক।” স্থানীয় ব্যবসায়ী রামনগরের বাসিন্দা অনিমেষ রাউতেরও বক্তব্য, “প্রতিদিন বহু লোক ওই বাস স্টপেজে যান। ওই এলাকায় হাটও বসে। যদিও যান নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি। এলাকার ‘ভিলেজ পুলিশ’ থাকার কথা থাকলেও তাঁরা থাকে না। ফলে দুর্ঘটনা বাড়ছে। এলাকায় উড়ালপুল চাই।”

মাদপুরের বাসিন্দা জেলা পরিষদ সদস্য অজিত মাইতি বলেন, “এলাকাটি দুর্ঘটনাপ্রবণ। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে ওই এলাকায় উড়ালপুল তৈরির কথা জানিয়েছি। যদিও এখনও সুফল পাইনি।” এ বিষয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা বলেন, “বিষয়টি জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ দেখেন। আমাকে এ বিষয়ে কেউ লিখিত জানালে আমি তা কর্তৃপক্ষকে পাঠিয়ে দিতে পারি।’’

কৃতি সংবর্ধনা। এলাকার মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের কৃতি পড়ুয়াদের সংবর্ধনা দেওয়া হল খড়্গপুরের তালবাগিচা বাজারে। শনিবার মুক্তি সঙ্ঘ গ্রন্থাগার প্রাঙ্গনে স্থানীয় ভগত সিংহ শতবার্ষিকী কমিটির উদ্যোগে পঞ্চম বর্ষের এই অনুষ্ঠান আয়োজন হয়েছিল। সকালে রক্তদান শিবির হয়েছিল। প্রায় ৫০জন রক্তদান করেন। বিকেলে হিজলি হাইস্কুল, তালবাগিচা হাইস্কুল, গোপালী হাইস্কুল, কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের মতো বেশ কয়েকটি স্কুলের প্রায় চারশো পড়ুয়াকে সংবর্ধিত করা হল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন