ছবি: এআই সহায়তায় প্রণীত।
তাঁর এনুমারেশন ফর্মের কিউআর কোড নাকি মিলছিল না। সেই নিয়ে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে এক বৃদ্ধা মারা গিয়েছেন। এমনই অভিযোগ উঠল পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির দেশপ্রাণ ব্লক এলাকায়। পরিবার তথা শাসকদলের দাবি, এসআইআরের আতঙ্কে নিজেকে শেষ করে দিয়েছেন তিনি। বিজেপির অভিযোগ, এসআইআর নিয়ে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে তৃণমূলই।
স্থানীয় সূত্রে খবর, মৃতার নাম সুষমারানি মণ্ডল। ৬১ বছরের বৃদ্ধা দেশপ্রাণ ব্লকের পূর্ব আমতলিয়া গ্রামের বাসিন্দা। দু’বারের পঞ্চায়েত প্রধানও ছিলেন তিনি। সোমবার রাতে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি। তার পরেই পরিবার দাবি করেছে, এনুমারেশন ফর্ম আপলোড করা যাচ্ছিল না বলে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ছিলেন বৃদ্ধা। মানসিক চাপে মৃত্যু হয়েছে তাঁর।
জানা গিয়েছে, সুষমা এবং তাঁর স্বামী প্রসূন মণ্ডল সময় মতো এনুমারেশন ফর্ম পূরণ করে বিএলওর হাতে তুলে দিয়েছিলেন। কিন্তু সুষমার ফর্ম আপলোড করার সময় বিপত্তি দেখা দেয়। ফর্মে থাকা কিউআর কোডে সমস্যা হচ্ছিল বলে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে যান দম্পতি। তাঁরা জানান, ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম থাকার পরেও ফর্ম আপলোড আপলোড হচ্ছে না। মৃতার স্বামীর কথায়, ‘‘আমরা নিয়ম মতোই এসআইআর ফর্ম হাতে পেয়েছিলাম। সেই ফর্ম পূরণ করে আমরা বিএলওর হাতে তুলেও দিই। কিন্তু কয়েক দিন আগে বিএলও আমাকে জানান সুষমার ফর্ম আপলোড নিচ্ছে না। কারণ, ফর্মে থাকা কিউআর কোড মিলছে না। স্ত্রীর বাপের বাড়ির সকলের ভোটার তালিকার নাম ইত্যাদি রয়েছে। সেগুলো দেখাই। কিন্তু কোনও অজ্ঞাত কারণে সমস্যা হয়েছিল। এ নিয়ে বেশ কয়েক বার বিএলওর কাছে গিয়েছি। পঞ্চায়েত প্রধানের কাছেও গেছি। কিন্তু সমাধান হয়নি। তাতে ভয় পেয়ে যায় স্ত্রী।’’
প্রসূন আরও জানান, স্ত্রী বার বার বলছিলেন, তিনি দু’বারের পঞ্চায়েত প্রধান ছিলেন। তাঁরই ফর্ম নিয়ে জটিলতা হল! বৃদ্ধের কথায়, ‘‘ও বলছিল, ‘এত বার ভোট দিয়েছি। অথচ আমার ফর্ম আপলোড নিচ্ছে না। আর যদি তা না-হয় তা হলে ভোটার তালিকা থেকে আমার নাম বাদ চলে যাবে। আমাকেও এমন পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হবে তা কল্পনাও করতে পারিনি।’’’
বৃদ্ধার মৃত্যুতে রাজনৈতিক শোরগোল শুরু হয়েছে এলাকায়। রাজ্যে এ নিয়ে ২৯ জনের মৃত্যুর নেপথ্যে এসআইআরকে দায়ী করা হল।