বমাল গ্রেফতার। নিজস্ব চিত্র
কেউ দাঁড়িয়ে গাছের আড়ালে। কেউ দাড়িয়ে এমন দূরত্বে যাতে কারও নজরে না পড়ে। সকলেই রেল ক্রাইম ব্রাঞ্চের সদস্য। গোপনে খবর পেয়ে রবিবার সকালে খড়্গপুরের আয়মায় ছত্তীসগঢ় হাইস্কুলের কাছে ফাঁদ পাতেন তাঁরা।
ফাঁদে ধরা পড়েছে শিকার। একজন পালিয়ে গেলেও হাত বদলের সময় হাতেনাতে ধরা পড়েছে একজন। তার কাছে মিলেছে রেলের লোকো ইঞ্জিনের অত্যাধুনিক এয়ার কম্প্রেসারের ৬টি ভাল্ভ। রেল সূত্রের খবর, বাজার মূল্য প্রায় ৫ লক্ষ টাকা।
অভিযোগ, খড়্গপুর রেল কারখানা থেকে বহু বছর ধরেই রেলের লোকো ইঞ্জিন ও ওয়াগনের বিভিন্ন সরঞ্জামের চুরি যাচ্ছে। হাতবদল হয়ে সরঞ্জাম পাচার হয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন এলাকায়। এ ক্ষেত্রে রেল কর্মীদের একাংশ জড়িত রয়েছে বলে ধারণা আরপিএফের। কিন্তু উপযুক্ত প্রমাণের অভাবে রেল কর্মীদের হাতেনাতে পাকড়াও করা যাচ্ছে না বলে দাবি করছে আরপিএফ। এমনকী, ঠিকাদারেরা অনেক সময় ছাঁট লোহার কেনার নামে রেল কর্মীদের একাংশের সহযোগিতায় অন্য সরঞ্জামও গাড়িতে নিয়ে পাচার করছে। এমন ঘটনার হদিস পেতেই গত কয়েকমাস ধরে মাঠে নেমেছে আরপিএফের ক্রাইম ব্রাঞ্চ। বিভিন্ন এলাকায় গোপন সূত্রে খবর পেয়ে হানা দিয়ে মিলছে সাফল্য। কয়েকদিন আগেই গোকুলপুরের কাছে ৬নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে পাঁচজনকে গ্রেফতার করে বিপুল পরিমাণ চোরাই সরঞ্জাম উদ্ধার করে ক্রাইম ব্রাঞ্চ। তবে সরাসরি চুরিতে যুক্তদের হদিস পাওয়া যাচ্ছে না।
রবিবার ক্রাইম ব্রাঞ্চের ডিভিশনাল ইন-চার্জ সুরেশ কুমার ও সিজিং অফিসার গণেশচন্দ্র মল্লিকের নেতৃত্বে পাঁচজনের দল অভিযানে নামে। সরঞ্জাম কিনে হাতেনাতে ধরা পড়ে যায় শহরের পাঁচবেড়িয়ার বাসিন্দা মহম্মদ সৈয়দ। বিক্রি করতে আসা সুমিত নামে এক যুবক পালিয়ে যায়। সৈয়দকে আয়মা থেকে পাকড়াও করে সিএমই গেটের কাছে রেলের জেনারেল স্টোরের কাছে নিয়ে আসা হয়। সেখানেই তার থেকে বাজেয়াপ্ত হয় ৬টি ভাল্ভ। সেগুলি যাচাই করে দেখেন ইঞ্জিনিয়ারেরা। সৈয়দকে জেরায় জানা যায়, ওই সরঞ্জামগুলি তাকে বিক্রি করেছে সুমিত। ক্রাইম ব্রাঞ্চের অফিসারেরা জানান, সুমিতের নামে আগেও রেলের সরঞ্জাম চুরির বহু মামলা রয়েছে। তবে উপযুক্ত প্রমাণ-সহ সুমিতকে গ্রেফতার করা কঠিন হচ্ছে। তবে এ বার ফের সুমিতের তল্লাশিতে নেমেছেন ক্রাইম ব্রাঞ্চের অফিসারেরা। তাঁদের দাবি, সুমিতকে গ্রেফতার করা গেলে কোন এলাকায় কাদের সহযোগিতায় রেল ইঞ্জিন থেকে এই সরঞ্জাম সে চুরি করেছিল জানা যাবে।