সজ্জন জিন্দলের পুত্র পার্থ জিন্দল।
কাজ তাঁরা ফেলে রাখেন না, বুঝিয়ে দিলেন জিন্দল-কর্তারা। সটান শালবনি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে হাজির হয়ে গেলেন সজ্জন জিন্দলের পুত্র পার্থ জিন্দল। কত জন চিকিৎসক-নার্স দরকার, রোগীর চাপ কেমন, পরিকাঠামোই বা কী রয়েছে— খুঁটিনাটি সব জেনে নেন তিনি।
সোমবার জিন্দলদের সিমেন্ট কারখানার উদ্বোধনে শালবনিতে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর সেই অনুষ্ঠানের আগেই স্ত্রী অনুশ্রীকে নিয়ে পার্থ জিন্দল শালবনি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। রবিবার শালবনিতে পৌঁছেই পার্থ জানিয়ে দিয়েছিলেন, এই হাসপাতাল পরিচালনার ভার নিতে চলেছে জিন্দল গোষ্ঠী। সিমেন্ট কারখানার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীও বলেন, ‘‘জিন্দল গোষ্ঠীর সঙ্গে গরিব মানুষের সম্পর্ক খুব ভাল। শালবনি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল জিন্দল গোষ্ঠীই চালাবে। এখানে ওরা আরও ভাল স্বাস্থ্য পরিষেবা দেবে।” জিন্দল গোষ্ঠীর কর্ণধার সজ্জন জিন্দলকে বলতে শোনা যায়, ‘‘শালবনিতে খুব ভাল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল তৈরি হয়েছে। ওই হাসপাতাল এ বার আমরা চালাব। ভাল ডাক্তার-নার্স আনব। নিশ্চিত ভাবেই স্বাস্থ্য পরিষেবায় আরও এগোবে শালবনি।’’
প্রশাসন সূত্রে খবর, সোমবার সকাল সওয়া দশটা নাগাদ শালবনি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন পার্থ জিন্দল। সস্ত্রীক একের পর এক বিভাগ ঘুরে দেখেন তিনি। সজ্জন-পুত্রকে বিভিন্ন বিভাগ ঘুরে দেখান শালবনির ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক অভিষেক মিদ্যা। সুপার স্পেশ্যালিটির ভবনটি পাঁচতলা। সিঁড়ি ভেঙেই দোতলা-তিনতলায় যান পার্থ। ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছ থেকে হাসপাতালের পরিকাঠামোর ব্যাপারে খোঁজ নেন। কত চিকিৎসক-নার্স রয়েছেন, কতজন রোগী আসেন, সব জেনে নেন। শালবনির ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক অভিষেক মানছেন, “পার্থ জিন্দল এসেছিলেন। সঙ্গে ওঁর স্ত্রীও ছিলেন। ওঁরা হাসপাতাল ঘুরে দেখেছেন। পরিকাঠামোর ব্যাপারে কিছু খোঁজখবর নিয়েছেন।”
গত রবিবারই সজ্জন-পুত্র বলেছিলেন, “সামাজিক দায়বদ্ধতা প্রকল্পে আমরা বেশ কিছু কাজ করেছি। তা দেখে রাজ্য সরকার খুশি হয়েছে। সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল পরিচালনাও আমরা ওই প্রকল্প থেকেই করব।” কত দিনের জন্য এই হাসপাতাল পরিচালনা করবে জিন্দল গোষ্ঠী? পার্থের জবাব, “পাঁচ বছরের জন্য চুক্তি হতে পারে।”
ঝাঁ চকচকে ভবন তৈরি হলেও শালবনির এই হাসপাতালে পরিকাঠামো এখনও তিমিরে। চিকিৎসক, নার্স রয়েছে প্রয়োজনের তুলনায় কম। শালবনিতে মেডিক্যাল অফিসার (এমও) রয়েছেন সব মিলিয়ে ১৪ জন, বিশেষজ্ঞ চিকিত্সক ৬ জন। আর নার্স রয়েছেন মোট ৩১ জন। সাধারণত, সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল ৩০০ শয্যার হয়। কিন্তু শালবনিতে শয্যা রয়েছে মাত্র ১১৫টি। ব্লাড ব্যাঙ্ক, বার্ন ইউনিট নেই। নেই ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থাও। হাসপাতালের এক চিকিত্সক মানছেন, “পরিকাঠামোর অভাবে বেশ কিছু অত্যাধুনিক সরঞ্জাম অব্যবহৃত হয়ে পড়ে রয়েছে।”
প্রশাসন সূত্রে খবর, শীঘ্রই হাসপাতাল পরিচালনার দায়িত্ব জিন্দলদের হস্তান্তর করা হবে। আর তা হলে আক্ষরিক অর্থেই হাসপাতাল সুপার স্পেশ্যালিটি হবে, আশায় শালবনি।