তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিষাক্ত জল সরানোর দাবি, বিক্ষোভ

বর্ষা বৃষ্টি শুরু হতেই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিষাক্ত জলে ডুবতে শুরু করেছে কোলাঘাট ব্লকের আমলহাণ্ডা, কাঁউরচণ্ডী, গোপালপুর, মহিষগোট ও সুন্দরচক গ্রামের রাস্তা, জমি, পুকুর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোলাঘাট শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৯ ০০:২০
Share:

পাঁচিলের এমন একাধিক গর্ত দিয়ে ঢুকছে বিষাক্ত জল।

অসুখ দীর্ঘদিনের। কিন্তু তা সারাতে আজ পর্যন্ত কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। আর তা নিয়েই ক্ষোভ ভুক্তভোগীদের। বুধবার সেই ক্ষোভেরই বহিঃপ্রকাশ ঘটল কোলাঘাট তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের গেটে।

Advertisement

বর্ষা বৃষ্টি শুরু হতেই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিষাক্ত জলে ডুবতে শুরু করেছে কোলাঘাট ব্লকের আমলহাণ্ডা, কাঁউরচণ্ডী, গোপালপুর, মহিষগোট ও সুন্দরচক গ্রামের রাস্তা, জমি, পুকুর। এলাকাবাসীর অভিযোগ, এই সমস্যা আজকের নয়। কিন্তু বারবার জানানো সত্ত্বেও তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিষাক্ত জল ঢোকা বন্ধ করতে কোনও ব্যবস্থাই নেয়নি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ। তাই বাধ্য হয়ে এ দিন তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৬ নম্বর গেটের সামনে বিক্ষোভ-অবস্থান করেন তাঁরা। এর জেরে এ দিন তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের শুকনো ছাই পরিবহণের কোনও গাড়ি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে ঢুকতে পারেনি। সকাল ৮টা থেকে শুরু হয় বিক্ষোভ অবস্থান। শেষ পর্যন্ত বিকেল সাড়ে ৩টে নাগাদ তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ ওই সমস্যা নিয়ে আলোচনার প্রস্তাব দিলে অবস্থান বিক্ষোভ তুলে নেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবারই এই ইস্যুতে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের মূল গেটের সামনে বিক্ষোভ দেখায় কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র দূষণ প্রতিরোধ কমিটি। কমিটির তরফে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার তাপস পাত্রকে স্মারকলিপিও দেওয়া হয়। শুধু তাই নয়, কমিটির পক্ষ থেকে বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, পরিবেশ মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র, রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র ও জেলাশাসক পার্থ ঘোষকেও ই-মেল মারফত অভিযোগ জানানো হয়েছে। বুধবার বিধানসভায় বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে সংগঠনের তরফে নারায়ণ চন্দ্র নায়ক। পাম্পের মাধ্যমে মহিষগোট এবং আমলহান্ডা গ্রামে জমে থাকা জল মেদিনীপুর খাল বা মেচেদা-বাঁপুর খালে ফেলার ব্যবস্থা করার দাবি জানানো হয় সংগঠনের তরফে। সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে, মন্ত্রী তাপবিদ্যুৎ উৎপাদনকারী সংস্থার সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন।

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সীমানা পাঁচিল বরাবর গ্রামের প্রধান মোরাম রাস্তাটির ওপর দিয়ে সবসময় বয়ে চলেছে বিষাক্ত জল। পাঁচিসের গায়ে নিকাশি নালা দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় তা উপচে পড়ছে নোংরা বিষাক্ত জলে। তার উপর বহু জায়গায় পাঁচিল ফুটো হয়ে যাওয়ায় সেখান দিয়ে বিষাক্ত জল ঢুকে এলাকা জলমগ্ন হচ্ছে।

এদিন দীর্ঘক্ষণ অবরোধ চলার পর ঘটনাস্থলে আসেন কোলাঘাটের বিডিও মদন মণ্ডল, যুগ্ম বিডিও অসীম ঘোষ। তাঁরা এলাকা পরিদর্শনের পর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার তাপস পাত্র, বিডিও, যুগ্ম বিডিও এবং থানার ওসি আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। পরে তাপসবাবু বলেন, ‘‘প্রাচীরের ফুটোগুলি দ্রুত মেরামত করা হবে। আমরা প্রাচীরের ভিতর বরাবর নতুন একটি নিকাশি নালা তৈরি ইতিমধ্যে শুরু করেছি। আজ থেকেই পাম্প দিয়ে এলাকায় ঢোকা বিষাক্ত জল বের করার কাজ শুরু হয়েছে।’’

তিনি জানান, রাস্তাটি আপাতত চলাচলের উপযোদী করে মেরামত করা হবে। তবে পরে রাস্তাটি ঢালাই করার ব্যাপারে চিন্তা-ভাবনা চলছে। ওই রাস্তায় পথবাতিরও ব্যবস্থা করা হবে। বাঁপুর খালটি সংস্কারের জন্য টেন্ডারের প্রক্রিয়াও হয়ে গিয়েছে। দ্রুত কাজ শুরু হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন