প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা

আবাস যোজনার টাকা কই! ক্ষোভ

‘আবাস যোজনা’ প্রকল্পে বাড়ি তৈরির ভিত খনন করার পর সেই ছবি উপভোক্তাকে জিআই ট্যাগ করে সরাসরি সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠাতে হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাঁথি শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০২০ ০৪:১৮
Share:

—প্রতীকী ছবি।

‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা’ প্রকল্পে বাড়ি তৈরির দ্বিতীয় কিস্তির টাকা মিলছে না বলে অভিযোগ করছেন কাঁথি পুরসভার বহু উপভোক্তা। প্রশ্ন উঠেছে সরকারি ওই প্রকল্পে পুরসভার নজরদারির ভূমিকাতেও।

Advertisement

পুরসভা সূত্রের খবর, ২০১৯-২০ আর্থিক বছরে কাঁথি পুরসভার ২১টি ওয়ার্ড আবাস যোজনা প্রকল্পে বাড়ি তৈরির অনুমোদন পায়। এ জন্য ৩ লক্ষ ৬৮ হাজার টাকা কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে যৌথভাবে দেওয়ার কথা। প্রথম পর্যায়ে ৪৫ হাজার টাকা এবং ১২৪ ব্যাগ সিমেন্ট ও রড দেওয়া হয়। স্থানীয় সূত্রের খবর, কিছু সংখ্যক উপভোক্তা বাড়ি তৈরি করলেও অনেকে সেই কাজ শুরু করেননি। অভিযোগ, এ বিষয়ে নজরদারিও চালাচ্ছে না পুরসভা। ফলে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পাচ্ছেন না বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করা উপভোক্তারা।

প্রশাসন সূত্রের খবর, ‘আবাস যোজনা’ প্রকল্পে বাড়ি তৈরির ভিত খনন করার পর সেই ছবি উপভোক্তাকে জিআই ট্যাগ করে সরাসরি সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠাতে হয়। তাতে পরবর্তী পর্যায়ের সরকারি অনুদানের টাকা মঞ্জুর করে দফতর। আর দ্বিতীয় কিস্তি টাকা পেতে হলে প্রথম কিস্তির টাকা পাওয়া সব উপভোক্তাদের কাজ শুরু করতে হয়। কেউ শুরু না করলে শহর এলাকায় পুরসভা এবং গ্রামীণ এলাকায় পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের তরফে নজরদারি চালিয়ে খোঁজ নেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে কাঁথি পুরসভায় ওই নজরদারি হচ্ছে না বলে অভিযোগ। কেন পুরসভার এ নিয়ে কোনও পদক্ষেপ করছেন না, তাতে ক্ষুব্দ শহরের বাসিন্দাদের একাংশ।

Advertisement

শীতে বাড়ি তৈরি করতে না পেরে উপভোক্তাদের অনেককে কষ্ট করে দিন কাটাতে হচ্ছে। শহরের ২১ নম্বর ওয়ার্ডের এক বাসিন্দার অভিযোগ, ‘‘প্রথম কিস্তির টাকা পাওয়ার পরে বাড়ি তৈরির কাজ অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে। কিন্তু এখনও কয়েক মাস ধরে আর কোনও অনুদানের টাকা পাচ্ছি না। ফলে মাঝপথেই থমকে গিয়েছে বাড়ি তৈরির কাজ। শীতকালে বিকল্প জায়গায় কষ্টে দিন কাটাতে হচ্ছে।’’

২১টি ওয়ার্ড বিশিষ্ট কাঁথি পুরবোর্ডের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে কয়েক মাস আগে। তারপর পুরসভার বিদায়ী চেয়ারম্যান সৌমেন্দু অধিকারীকে প্রশাসক বোর্ডের প্রধান এবং ওই কমিটিতে বিদায়ী ভাইস চেয়ারম্যান সত্যেন্দ্রনাথ জানা ও কাউন্সিলর পম্পা মাইতিকে সদস্য মনোনীত করেছে রাজ্য সরকার। গত শনিবার বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। তারপর তৃণমূলের একাধিক কর্মসূচিতে দেখা যায়নি অধিকারী পরিবারের বাকি সদস্যদের। এমন পরিস্থিতি উপভোক্তাদের একাংশের মনে প্রশ্ন, রাজনৈতিক সমীকরণের ফাঁসে কি কোথাও আটকে যাচ্ছে প্রশাসনিক কাজকর্ম!

পুরসভার এক আধিকারিক এ ব্যাপার জানাচ্ছেন, বেশ কিছু উপভোক্তা পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী হওয়ায় সরকারি অনুদানের টাকায় বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু করতে পারেননি। বিষয়টি বিবেচনা করে দেখার জন্য রাজ্য সরকারের কাছে জানানো হয়েছে। কাঁথি পুরপ্রশাসক বোর্ডের অন্যতম সদস্য সত্যেন্দ্রনাথ জানা বলেন, ‘‘কিছু কিছু ক্ষেত্রে বেশ কয়েকজন উপভোক্তা বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করতে পারেনি। তারা যাতে সরকারি নিয়ম মেনে দ্রুত সেই কাজ শুরু করে সে ব্যাপারে কথাবার্তা চলছে।’’ আবাস যোজনা প্রকল্পের বাকি বরাদ্দ চেয়ে রাজ্য সরকারের কাছে বহুবার লিখিত আবেদন জানানো হয়েছে। রাজ্য সরকার শীঘ্রই অর্থ মঞ্জুর করার আশ্বাস দিয়েছেন বলেও দাবি পুর কর্তৃপক্ষের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন