জীর্ণ: হতশ্রী ব্যানার-হোর্ডিংয়ে ছেয়েছে শহর। নিজস্ব চিত্র
বাস ধরার জন্য খড়্গপুরের ইন্দাতে অপেক্ষা করছিলেন বিষ্ণুপদ মাইতি। হঠাৎ শুরু হল বৃষ্টি, সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া। জোরে হাওয়া দেওয়া শুরু করতেই একটি বিজ্ঞাপনের হোর্ডিং ভেঙে পড়ল বিষ্ণুপদবাবুর পাশে। একটুর জন্য রক্ষা পেয়ে গেলেন তিনি। বিষ্ণুপদবাবু বলছিলেন, “হোর্ডিং গায়ে পড়লেই বা কাকে বলতাম। দুর্ঘটনা ঘটে গেলেও দায়িত্ব নেওয়ার কেউ নেই।”
শুধু বিষ্ণুপদবাবু নন, খড়্গপুর শহরের রাস্তায় প্রায়ই অনেকে এ ভাবেই বিপদে পড়েন। কারণ, সেই জীর্ণ হোর্ডিংয়ের কাঠামো। শহরে ঘুরলেই চোখ পড়বে, ইতিউতি ঝুলে রয়েছে ভাঙা ব্যানারের কাঠামো, ছেঁড়া ফ্লেক্স। শুধু বিপদের আশঙ্কাই নয়, ছেঁড়া ব্যানার, ভাঙা হোর্ডিংয়ে হচ্ছে দৃশ্য দূষণও। শুধু বাণিজ্যিক বিজ্ঞাপনের ব্যানারই নয়, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পতাকাও রয়েছে। স্বচ্ছ ভারত অভিযানে সব জায়গা পরিষ্কার রাখার আবেদন করা হচ্ছে। তারপরেও হেলদোল নেই প্রশাসনের।
নতুন হোর্ডিং তো আছেই, বহুদিনের পুরনো ব্যানারও রাস্তার ধারে লাগানো হয়েছে একইভাবে, রোদে-জলে সেই সব হোর্ডিংয়ের অবস্থা দিনে দিনে খারাপ হচ্ছে। হোর্ডিংয়ের কাঠামো লোহার হলে দীর্ঘদিন রোদ-জল লেগে তাতে মরচে পড়ছে। আর বিজ্ঞাপনের কাঠামো বাঁশ বা কাঠের হলে তো কথাই নেই। শহরের ইন্দা, পুরাতনবাজার, কৌশল্যা, বোগদা, গোলবাজার, ঝাপেটাপুর এলাকায় পুরনো ব্যানারের সমস্যা সবচেয়ে বেশি। কৌশল্যার বাসিন্দা ফাল্গুনিরঞ্জন রাজ বলছেন, “চারিদিকে ছেঁড়া হোর্ডিং-ব্যানার, ফ্লেক্স শহরটা নোংরা করে তুলেছে। অথচ কারও কোনও হেলদোল নেই। এ সব বিজ্ঞাপন দেওয়ার কী নিয়ম, কতদিন এইসব হোর্ডিং লাগিয়ে রাখা যায় সে সম্পর্কেও কারও ভ্রূক্ষেপ নেই। ফল ভুগছেন শহরের বাসিন্দারা।”
ইন্দার বাসিন্দা প্রবীণ বাচিক শিল্পী শিবানী দত্ত রায়েরও বক্তব্য, “শহরে সৌন্দর্যায়নের কোনও বালাই নেই। পথে চলতে গেলে আবর্জনার স্তূপে হোঁচট খেতে হয়। আর হোর্ডিং-ব্যানারের ভিড়ে বেশি দূর তাকানোই যায় না। এ নিয়ে পুরপ্রধান কী ভাবছেন সেটাই প্রশ্ন।” এ বিষয়ে খড়্গপুরের পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার বলছেন, “শহরের রেল এলাকায় এ ধরনের অনেক হোর্ডিং-ব্যানার রয়েছে। তবে পুরসভা এলাকায় কোথায় ছেঁড়া হোর্ডিং রয়েছে তা জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখব।”