দোলে রঙের লড়াইয়ে ব্রাজিল-দক্ষিণ আফ্রিকা

দোলে রং, আবির, পিচকারির সঙ্গে তমলুকে এবার পাল্লা দিয়ে বিক্রি হয়েছে ২০১০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় আয়োজিত বিশ্বকাপ ফুটবলের মাঠ কাঁপানো বাঁশির আদলে বানানো ভুভুজেলা। আর ভুভুজেলাকে টক্কর দিয়েছে ব্রাজিলের রিও ফেস্টিভ্যালের ধাঁচে তৈরি পরচুলা। সে পরচুলার যেমন বাহারি রং, তেমনই খোলতাই ছাঁট। 

Advertisement

পার্থপ্রতিম দাস

তমলুক শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০১৮ ০১:০৮
Share:

ভুভুজেলা কেনার পর বাজিয়ে দেখছে এক যুবক। নিজস্ব চিত্র

আবিরে দোকানে ভিড় জমিয়েছেন ক্রেতারা। দোলের জন্য সকলেই ব্যস্ত রং কিনতে। হঠাৎ ঝড়ের বেগে দোকানে তিন খুদের আগমন। এসেই দোকানদারের কাছে তাদের প্রশ্ন, ‘‘কাকু, ভুভুজেলা হবে?’’

Advertisement

রঙের দোকানে ভুভুজেলা! খুদেদের প্রশ্ন শুনে স্বাভাবিকভাবেই অবাক অন্য ক্রেতারা। তা দেখে ভীমার বাজারের আবিরের ব্যবসায়ী কচি দাসের হাসতে হাসতে বললেন, ‘‘বুঝলেন দাদা, তমলুকে এবার দোলের লড়াইটা ব্রাজিলের সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকার!”

দোলে রং, আবির, পিচকারির সঙ্গে তমলুকে এবার পাল্লা দিয়ে বিক্রি হয়েছে ২০১০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় আয়োজিত বিশ্বকাপ ফুটবলের মাঠ কাঁপানো বাঁশির আদলে বানানো ভুভুজেলা। আর ভুভুজেলাকে টক্কর দিয়েছে ব্রাজিলের রিও ফেস্টিভ্যালের ধাঁচে তৈরি পরচুলা। সে পরচুলার যেমন বাহারি রং, তেমনই খোলতাই ছাঁট।

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দা তথা কলেজের সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ইমনের মাথার চুল অল্প বয়সেই বেশ পাতলা হয়ে গিয়েছে। সেই আক্ষেপে দোলে একখানা রঙিন পরচুলা কিনে ফেলেছেন তিনি। ইমনের কথায়, “২৪০ টাকা দিয়ে রঙিন ব্রাজিলিয়ান কাট পরচুলাটা কিনলাম। এটা পরে রঙ মেখে স্যোশাল নেটওয়ার্কিং সাইটে ছবি পোস্ট করে বন্ধুদের চমকে দেব।” ইমনের দুই বন্ধুর অবশ্য ভিন্ন মত। তারা আবার ভুভুজেলার পক্ষে। ওই দু’জনের বক্তব্য, ‘‘ভুভুজেলা বাজিয়ে পাড়া কাঁপিয়ে রঙ খেলব এবার।’’

যদিও রং ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন ভুভুজেলার থেকে এগিয়ে রয়েছে রঙিন পরচুলা। পরচুলাগুলির চাহিদা এতটাই যে, দোলের একদিন আগেই শহরের বিভিন্ন দোকানে সেগুলি শেষ হয়ে গিয়েছে। উল্লেখ্য, তমলুকের বাজারে ভুভুজেলা ৭০ টাকা, ব্রাজিলিয়ান কাট পরচুল ২০০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে বাজার ওই দুই নতুন জিনিস বাদ দিয়েও চিরাচরিত মুখোশের চাহিদাও রয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

বুধবার বাবার হাত ধরে রঙের দোকানে গিয়েছিল তৃতীয় শ্রেণির পড়ুয়া আরমান। আবিরের সঙ্গে ‘মনস্টার মাস্ক’ কেনার আবদার জুড়ে সে। বাবা রাজি না হওয়ায় কান্নাধরা গলায় আরমান জানায়, পাশের বাড়ির দাদা একটা ভুতুড়ে মুখোশ কিনে গতরাতেই তাকে ভয় দেখিয়েছে। এবার মুখোশ কিনে বদলা নেবে সে। অগত্যা আবির, পিচকারির সঙ্গে ভুতুড়ে মুখোশ কিনে দিতে বাধ্য হয়েছেন তার বাবা।

চলতি মরসুমে তমলুক শহরের মোড়ে মোড়ে রং এবং আবিরের দোকান বসেছে। তবে মাত্র হাতেগোনা এক-দু’টি দোকানে পাওয়া যাচ্ছে ভেষজ আবির। প্রসঙ্গত, সাধারণ এবং স্মুদ আবিরের দাম যেখানে যথাক্রমে ৬০ এবং ১০০ টাকা কিলোগ্রাম, সেখানে ভেষজ আবিরের ৪০০ টাকা কিলোগ্রাম।

তবে রঙের বাজার যেমন চলুক না কেন, বাচ্চা থেকে যুবক— সকলকেই মাত করেছে পরচুলা আর ভুভুজেলা। আর আজ, বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই তমলুক শহরের বাতাস রং, আবিরে সঙ্গে কেঁপে উঠবে ভুভুজেলার আওয়াজে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন