সংস্কারেও সঙ্কট, রাস্তা সরু হচ্ছে রেলশহরে

শহরের ১ ও ২ নম্বর ওয়ার্ডের সংযোগস্থলে থাকা রাস্তাটির উপরে কয়েকটি বাড়ির সম্প্রসারিত অংশ ভাঙা হয়েছে, অথচ কিছু বাড়িতে হাতই পড়েনি। ফলে চওড়ায় অসমান হচ্ছে রাস্তাটি। তাতেই ক্ষোভ বেড়েছে স্থানীয়দের।

Advertisement

দেবমাল্য বাগচী

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৭ ০৭:৪০
Share:

অপরিসর ইন্দা-যফলা রাস্তা। নিজস্ব চিত্র

দীর্ঘ দিন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি সংস্কার না হওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছিলেন এলাকাবাসী। সংস্কার শুরু হওয়ার পরে দেখা দিয়েছে আর এক সঙ্কট। অভিযোগ, রাস্তা চওড়া করতে গিয়ে তা হচ্ছে অসমান। কোথাও ১০ ফুট, আবার কোথাও ১৫ ফুট!

Advertisement

খড়্গপুরের ইন্দার কমলা কেবিন থেকে জফলা যাওয়ার রাস্তায় এমনই সমস্যা তৈরি হয়েছে। মাস দুয়েক হল রাস্তাটির সংস্কার ও সম্প্রসারণের কাজ শুরু হয়েছে। অর্থের অভাবে খড়্গপুর পুরসভা এ কাজ করতে পারেনি। তবে তাদের আবেদনের ভিত্তিতেই কাজটি করছে মেদিনীপুর-খড়্গপুর উন্নয়ন পর্ষদ। কিন্তু পর্ষদের নজরদারির অভাবে কাজ ঘিরে নানা অভিযোগ সামনে আসছে।

শহরের ১ ও ২ নম্বর ওয়ার্ডের সংযোগস্থলে থাকা রাস্তাটির উপরে কয়েকটি বাড়ির সম্প্রসারিত অংশ ভাঙা হয়েছে, অথচ কিছু বাড়িতে হাতই পড়েনি। ফলে চওড়ায় অসমান হচ্ছে রাস্তাটি। তাতেই ক্ষোভ বেড়েছে স্থানীয়দের। যাঁদের বাড়ির সম্প্রসারিত অংশ ভাঙা পড়েছে, তাঁরা প্রশ্ন তুলেছেন, বাকিরা কী ভাবে ছাড় পেল। তবে এই সমস্যা মেটানোর ব্যাপারে পুরসভা ও পর্ষদ উদাসীন বলেই জানিয়েছেন তাঁরা।

Advertisement

খড়্গপুর গ্রামীণ এলাকার জফলা পর্যন্ত সম্প্রসারিত এই রাস্তা শহরের মধ্যে সঙ্কীর্ণ হতে শুরু করেছিল বহু দিন ধরেই। রাস্তা-সংলগ্ন বেশ কিছু বাড়ি ও দোকান নিজেদের এলাকা সম্প্রসারিত করে রাস্তার উপরে চলে আসায় সমস্যা বেড়েছিল। ফলে শহরের তুলনায় গ্রামীণ এলাকায় রাস্তা অনেক চওড়া। বেহাল রাস্তার সংস্কারে নেমে প্রাথমিক ভাবে তা ১৮ ফুট চওড়া করার সিদ্ধান্ত নেয় পর্ষদ। সঙ্গে ৩ ফুট নর্দমা তৈরি করা হবে বলেও ঠিক হয়। সে জন্য কিছু বাড়ির সম্প্রসারিত অংশ ভাঙার কথাও বলা হয়। কিন্তু পরবর্তী কালে শহরের অংশে জমি সঙ্কট বুঝে তাকে ১৫ ফুটে নামিয়ে আনার পরিকল্পনা হয়। ইতিমধ্যে কেউ কেউ সম্প্রসারিত অংশ ভেঙে দিলেও, অধিকাংশই সেই নির্দেশ মানেননি। আর তার মধ্যেই শুরু হয়ে যায় কাজ। ফলে এই অসমতা। স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, “সবই টাকা আর ক্ষমতার খেলা। এর জোরেই কিছু বাড়ি ভাঙা পড়ছে না।” যেমন কমলা কেবিন থেকে খানিকটা এগোতেই লাল্টু দাসের বাড়ির সামনে দোকানের কিছু অংশ ভাঙা পড়েছে। তিনি বলেন, “জনগণের স্বার্থে যখন রাস্তা হচ্ছে, তখন ১৮ ফুট রাস্তার জন্য দোকানের সামনের অংশ ভাঙতে বলেছিল। আমি ভেঙে দিয়েছি।” কিন্তু পরে দেখেছেন, অনেকেই বাড়ি ভাঙেননি। আর সেখানে রাস্তা হচ্ছে ১৫ ফুটের।

রাস্তার ‘জবরদখল’ হঠাতে গিয়ে সমস্যা হতে পারে, সেই আশঙ্কাতেই কিছু করছে না তারা। পর্ষদের সহকারী বাস্তুকার আসিফ ইকবাল চৌধুরী এই সমস্যাটা মেনে নিয়েছেন। তাঁর কথায়, “আমরা রাস্তার জমি ছাড়ার জন্য আবেদন জানিয়েছিলাম। তার পরে যেটুকু জমি পাওয়া গিয়েছে, সেখানেই রাস্তা তৈরি হয়েছে। বাড়ি ভাঙার বিষয়টি দেখার দায়িত্ব ছিল স্থানীয় পুর-প্রতিনিধিদের। আমরা জটিলতায় যেতে চাইনি।” যদিও খড়্গপুরের পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার ব্যাপরটি সমস্যা বলে মনে করছেন না। তিনি বলেন, “যেখানে সমস্যা ছিল, স্থানীয় দুই কাউন্সিলর কথা বলে তা মিটিয়ে নিয়েছেন। যদি অভিযোগ পাই, খতিয়ে দেখব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন