হাসপাতালে চারা বিলি প্রশ্নের মুখে

শুক্রবার খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতি এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সেখানেই হাসপাতাল চত্বরে সাফাই অভিযান ও কন্যাশ্রী দিবসকে সামনে রেখে চারাগাছ বিলির কর্মসূচি পালন করা হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৭ ০৯:৪০
Share:

দান: খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে সদ্যোজাতকে চারা বিলি। নিজস্ব চিত্র

কন্যাসন্তান জন্মালে হাসপাতাল থেকেই পরিবারের হাতে চারাগাছ তুলে দেওয়া শুরু হয়েছিল বছর খানেক আগে। ‘বনানী’ নামে সেই প্রকল্প ছিল বন দফতরের। পরে ‘সবুজশ্রী’ প্রকল্পে পুত্র-কন্যা সব নবজাতকের পরিবারকেই চারাগাছ বিলির সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার। সেই মতো খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালেও এই চারগাছ বিলি শুরু হয়েছিল। কিন্তু মাস দেড়েকেই তা মুখ থুবড়ে পড়ে। কন্যাশ্রী দিবস পালন উপলক্ষে ফের এই হাসপাতালে শুরু হল সদ্যোজাতদের চারাগাছ বিলি।

Advertisement

শুক্রবার খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতি এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সেখানেই হাসপাতাল চত্বরে সাফাই অভিযান ও কন্যাশ্রী দিবসকে সামনে রেখে চারাগাছ বিলির কর্মসূচি পালন করা হয়। সদ্যোজাতদের পাশাপাশি শিশু বিভাগে ভর্তি শিশুকন্যাদেরও চারাগাছ দেওয়া হয়। সব মিলিয়ে ৭২টি চারাগাছ বিলি করা হয়েছে এ দিন। কর্মসূচিতে হাজির ছিলেন মহকুমাশাসক সুদীপ সরকার, রোগীকল্যাণ সমিতির সভাপতি নির্মল ঘোষ, পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার, হাসপাতাল সুপার কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায়।

গত বছর জুলাইয়ে খড়্গপুর বন দফতর ‘বনানী’ প্রকল্পে সদ্যোজাত কন্যাসন্তানদের চারাগাছ বিলির কথা ঘোষণা করেছিল। কথা ছিল, হাসপাতালে শিশুকন্যার জন্মের পরে তার মাকে একটি চারাগাছ তুলে দেওয়া হবে। পাঁচবছর পরে বনকর্মীরা শিশুর বাড়িতে গিয়ে চারাগাছের পরিচর্যা দেখে পুরস্কৃত করবেন। পরে সারা রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালের সঙ্গে খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে ‘সবুজশ্রী’ প্রকল্প চালু হয়। যার আওতায় আনা হয় সব নবজাতককেই।

Advertisement

কিন্তু তারপরে বন্ধ হয়ে যায় চারা বিলি। তাই এ দিন ফের প্রকল্প শুরু হলেও কতদিন তা কার্যকর থাকবে, সেই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। এ নিয়ে বিঁধছে বিরোধীরাও। সিপিএমের জোনাল সম্পাদক অনিতবরণ মণ্ডল বলেন, “এই রাজ্যে এখন ঢাক বাজিয়ে প্রকল্পের উদ্বোধন হচ্ছে। কিন্তু কার্যকর করতে গিয়েই সব কিছু মুখ থুবড়ে পড়ছে। এই সবুজশ্রী খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে কতদিন চলবে তা নিয়ে আমার সংশয় রয়েছে।”

যদিও হাসপাতাল সুপার কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, “মাস খানেক চলার পরে বন দফতর থেকে চারাগাছ সরবরাহ না হওয়ায় প্রকল্প বন্ধ ছিল। আবার চালু করা হল। বন দফতর বলেছে চাহিদা মতো প্রতি সপ্তাহে চারাগাছ দেবে।” খড়্গপুরের ডিএফও অরূপ মুখোপাধ্যায়েরও আশ্বাস, “খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে নিশ্চয়ই সবুজশ্রী প্রকল্পে চারাগাছ দেওয়া হবে।”

এ দিনের হাসপাতাল সাফাই অভিযান নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। রোগীর পরিজনেদের বক্তব্য, বছরভর হাসপাতাল চত্বর অপরিচ্ছন্ন থাকে। সেখানে একদিন কয়েক মিনিটের এই সাফাই অভিযানে কী লাভ। খড়্গপুরের এক রোগীর পরিজন তমাল দাসের টিপ্পনি, “হাসপাতাল ভবনের বাইরে প্রতিদিন সাফাই অভিযান চালানো প্রয়োজন। বড়-বড় কর্তাদের উপস্থিতিতে মাত্র কয়েক মিনিটের এই সাফাই অভিযানে তো কিছু হল না। এ যেন মনে হচ্ছে ছবি তোলার অভিযান!” যদিও রোগী কল্যাণ সমিতির সভাপতি নির্মল ঘোষের যুক্তি, “আমরা এই সাফাই অভিযান চালিয়ে বুঝিয়ে দিলাম সকলের কর্তব্য হাসপাতাল চত্বর পরিচ্ছন্ন রাখা।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন