খড়্গপুরে গ্রেফতার দুই দুষ্কৃতী। —নিজস্ব চিত্র।
প্রথমে সহযাত্রী সেজে বন্ধুত্ব। তারপরে ট্রেনে বসে গল্পের ফাঁকে ঠান্ডা পানীয় খাওয়ানো। শেষে বেহুঁশ রেলযাত্রীর ব্যাগ লুট করে ট্রেন থেকে চম্পট।
মাদক খাইয়ে যাত্রীদের মূল্যবান সামগ্রী লুটের এমন অভিযোগ ওঠে প্রায়ই। দুষ্কৃতীদের পাকড়াও করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে রেল পুলিশকে। গত ৪ অক্টোবর এক লুটপাটের অভিযোগের তদন্তে নেমে শুক্রবার রাতে খড়্গপুরের বোগদা থেকে দুই দুষ্কৃতীকে পাকড়াও করল রেলের অপরাধদমন শাখা।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরুলিয়ার বাসিন্দা নরেন সিংহ ও আসানসোলের নিঝুম সাহা বারিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। শনিবার তাঁদের রেল পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে কটক, টাটানগর, শিয়ালদহ, হাওড়া শাখায় খাবার ও পানীয়ে মাদক মিশিয়ে যাত্রীদের বেহুঁশ করে লুঠের অভিযোগ রয়েছে। এমনকী এর আগে শিয়ালদহ শাখায় মাদকের প্রভাবে এক যাত্রীর মৃত্যুর অভিযোগও ওঠে। সেই ঘটনায় ধৃতদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু হয়েছিল বলেও জানা গিয়েছে। তবে তখন নরেন ও নিঝুমের সন্ধান পাওয়া যায়নি।
রেলের অপরাধদমন শাখা সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৪ অক্টোবর রাত ১টা নাগাদ চেন্নাই থেকে খড়্গপুরে এসে পৌঁছন পুরুলিয়ার বাসিন্দা দুই যুবক। তার পরে পুরুলিয়ায় ফেরার জন্য স্টেশনেই অপেক্ষা করছিলেন। সেই সময়েই তাঁদের সঙ্গে আলাপ জমায় ওই দুই দুষ্কৃতী।
রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ খড়্গপুর থেকে ঝাড়গ্রাম হয়ে পুরুলিয়া যাওয়ার ট্রেনে একসঙ্গে এই দুই যুবকের সহযাত্রী সেজে উঠে পড়ে তারা। তার পরে গল্পের মাঝে তাঁদের ওই দুই দুষ্কৃতী ঠান্ডা পানীয় দেয়। অভিযোগ, তাতেই সংজ্ঞা হারান ওই দুই যুবক। তাদের থেকে ব্যাগ ও নগদ কয়েক হাজার টাকা হাতিয়ে চম্পট দেন নরেন ও নিঝুম। তদন্তে নেমে অপরাধদমন শাখার তদন্তকারী গণেশচন্দ্র মল্লিক ওই দিনের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখেন। সেই সময় স্টেশনের টিকিট কাউন্টারের কাছে সিসি ক্যামেরার ফুটেজে এই দুই দুষ্কৃতীর ছবি স্পষ্ট হয়। তার পর থেকেই তল্লাশি চলছিল।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাতে ওই দুই দুষ্কৃতী ফের খড়্গপুরে এসেছে বলে খবর মেলে। সেই মতো নজরদারি চলছিল। স্টেশনের বাইরে বোগদায় একটি চায়ের দোকানে যাত্রীদের ওপর নজর রাখছিল দুই দুষ্কৃতী। সেই সময় তাঁদের ধরে ফেলে রেলের এই তদন্তকারী দল। রেলের দাবি, প্রাথমিক জেরায় ওই দুষ্কৃতীদের সঙ্গে গত ৪ অক্টোবরের ঘটনার যোগের কথা জানা যায়। রেলের অপরাধদমন শাখার দাবি, ওই দুই ব্যক্তি একসঙ্গে এমন কাজ করত। তাদের সঙ্গে অন্য কেউ জড়িত রয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা যায়নি।