ওসমান মণ্ডলের দগ্ধ দেহ উদ্ধারের ঘটনার চব্বিশ ঘণ্টা পরেও কাউকে গ্রেফতার করতে পারল না পুলিশ। গত শনিবার রাতে গড়বেতা-১ ব্লকের চমকাইতলায় একটি হিমঘর চত্বরের ঘর থেকে ওসমানের দেহ উদ্ধার হয়। ওসমান আবার ছোট আঙারিয়া খ্যাত বক্তার মণ্ডলের ভাই। ঘটনায় মোগলেশ্বর মল্লিক, শের আলি মণ্ডল, জলিল খান-সহ একাধিক ব্যাক্তির বিরুদ্ধে গড়বেতা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওসমানের দাদা আবু হোসেন মণ্ডল। পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্তরা পলাতক। তাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
পুলিশ সূত্রে দাবি, ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্তদের মোবাইল ফোন বন্ধ। দু’একবার অচেনা নম্বর থেকে ফোন করে অভিযুক্তরা এলাকার পরিস্থিতির খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করে। ওই নম্বরগুলির টাওয়ার লোকেশন খতিয়ে দেখে অভিযুক্তদের গতিবিধি জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে খুনের পিছনে প্রকৃত কারণ, অভিযুক্তদের লুকিয়ে থাকার সম্ভাব্য জায়গাগুলি সম্বন্ধেও জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। ওসমানের দাদা বক্তার মণ্ডল বলেন, “আমরা পুলিশকে সব রকম সাহায্য করছি। অভিযুক্তরা এখনও গ্রামে ফেরেনি।”
গড়বেতা-১ ব্লকের ছোট আঙারিয়ার বাসিন্দা ওসমান চমকাইতলার ওই হিমঘরেই নৈশরক্ষীর কাজ করতেন। সেখান থেকেই তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। রবিবারই ওসমানের স্ত্রী আসিয়া বিবি অভিযোগ করেছিলেন, গ্রামেরই দুষ্কৃতী মোগলেশ্বর মল্লিক, শের আলি মণ্ডল, জলিল খানেরা গরিবদের থেকে একশো দিনের কাজের টাকার ভাগ দাবি করায় রুখে দাঁড়ান ওসমান। তারপরই এই ঘটনা ঘটায় তারাই স্বামীকে খুন করেছে বলে দাবি করেন আসিয়া বিবি। সেই মর্মে রবিবার থানায় অভিযোগও দায়ের করেন মৃতের দাদা আবু হোসেন মণ্ডল। ময়না তদন্তের পর ওই দিনর রাতেই ওসমানের দেহ গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। রাতেই সমাহিত করা হয় দেহ।
ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির যোগ নেই বলে রবিবারই দাবি করেছিলেন শাসকদলের নেতৃত্ব। তৃণমূলের ব্লক সভাপতি সেবাব্রত ঘোষের সাফ কথা, “দু’একজন দুষ্কৃতী এলাকার পরিস্থিতিকে অশান্ত করবে, তা হতে দেওয়া যাবে না। দলীয়ভাবে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার পাশাপাশি পুলিশ-প্রশাসনকেও বিষয়টি জানাব।” গড়বেতার বিধায়ক আশিস চক্রবর্তীও বলেন, “পুলিশ প্রশাসনের সাহায্য নেওয়ার পাশাপাশি মানুষকে সঙ্গে নিয়েই দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।’’