গুজব ঠেকাতে পথে-প্রচারে পুলিশ

সম্প্রতি রাজ্যের নানা প্রান্তে অপরিচিত যুবকদের ছেলেধরা সন্দেহে ধরে গণধোলাই শুরু হয়েছে। ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপে ভুয়ো ভিডিয়ো দেখে শিউরে উঠছেন রাজ্যবাসী!

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

ঘাটাল শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ২৩:১৯
Share:

সচেতনতা: পুলিশের মাইক প্রচার। ঘাটালে। নিজস্ব চিত্র

গুজব বন্ধে সচেতনতা তৈরিতে পথে নামল পুলিশ। রবিবার ঘাটাল মহকুমার তিনটি থানা এলাকাতেই জোরকদমে প্রচার করেছে পুলিশ। ঘাটাল শহর-সহ বিভিন্ন জায়গায় মাইক প্রচার শুরু হয়েছে। গুজব ছড়ালে কিংবা গুজবে প্রভাবিত হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার বার্তাও দেওয়া হচ্ছে। ঘাটালের এসডিপিও কল্যাণ সরকার বলেন, “ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপে আসা তথ্যে আতঙ্কিত হবেন না। পুলিশ সতর্ক রয়েছে। মানুষকেও সচেতন হতে হবে। না হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

Advertisement

সম্প্রতি রাজ্যের নানা প্রান্তে অপরিচিত যুবকদের ছেলেধরা সন্দেহে ধরে গণধোলাই শুরু হয়েছে। ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপে ভুয়ো ভিডিয়ো দেখে শিউরে উঠছেন রাজ্যবাসী! এই ঘটনায় রাজ্যের বিভিন্ন এলাকার সঙ্গে ঘাটাল মহকুমাতেও এই সমস্যা শুরু হয়েছে। সকাল-রাতে গুজবেই তঠস্থ থাকছেন আমজনতা। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, ঘাটাল শহর-সহ দাসপুর, সোনাখালি, ক্ষীরপাই, চন্দ্রকোনা, রামজীবনপুর, খড়ার-সহ বিভিন্ন জায়গায় অপরিচিত কাউকে দেখলেই তাকে জেরা করা হচ্ছে। জরুরি কাজে নতুন জায়গায় এসে কোনও রাস্তা অথবা অফিসের ঠিকানা জানতেও বেগ পেতে হচ্ছে অপরিচিতদের। মেলায় ও জনবহুল এলাকায় কেউ উদ্দেশ্যহীন ভাবে ঘোরাঘুরি করলে তাঁকে তাড়া করা হচ্ছে। দু’দিন আগেই দাসপুরের চাঁদপুরে এক নিরীহ যুবকে বেধড়ক মারধর করা হয়। পরে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই পরিস্থিতি কড়া হাতে মোকাবিলা করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রশাসনিক কর্তাদের। তদন্তে নেমে পুলিশ আধিকারিকেরা বলছেন, গুজব ছড়ানোর নেপথ্যে নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য রয়েছে। প্ররোচনামূলক ছবি এবং ভিডিয়ো রাজ্যের বাইরে থেকেও ছাড়ানো হচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে রাজ্য পুলিশ। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশও লিফলেট বিলির পাশাপাশি সচেতনতা শিবির, মাইক প্রচার করছে। রবিবার ঘাটাল থানার উদ্যোগে শহরের টাউন হলে একাধিক ক্লাব, সংগঠন, ইদ ও মহরম কমিটি, দুর্গাপুজো কমিটি সহ-বিভিন্ন জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে শিবির হয়। এ দিনই ক্ষীরপাই শহর, চন্দ্রকোনা ও দাসপুরেও শিবির করে পুলিশ। গড়বেতা থানার পক্ষ থেকেও মাইক প্রচার হয় রবিবার। বিলি করা হয় ‘গুজবে কান দেবেন না.. গুজব ছড়াবেন না’ শীর্ষক লিফলেট। টাঙানো হয় ব্যানার ও ফ্লেক্স। প্রচারপত্র বিলি করে পুলিশ। গড়বেতা থানার পক্ষ থেকে গুজব ছড়ানোর খবর পেলেই পুলিশকে জানাতে বলা হয়েছে। আইনভঙ্গকারীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছে পুলিশ। এ দিনই গুজব ও ভুয়ো খবর ঠেকাতে সচেতনতা শিবির করল চন্দ্রকোনা রোড বিট হাউসের পুলিশ। সেখানে ছিলেন জেলাপরিষদের সভাধিপতি উত্তরা সিংহ হাজরা।

Advertisement

মেদিনীপুর শহরেও এ দিন মাইকিং করে পুলিশ। জেলা পুলিশ মনে করছে, এ ভাবে প্রচারে মানুষজনকে অনেকটাই সচেতন করা সম্ভব হবে। মানুষ সচেতন হলে অনভিপ্রেত ঘটনাও এড়ানো যাবে। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘মানুষজনকে সচেতন করতেই এই প্রচার। শুধু মাইকে প্রচার নয়, বিভিন্ন থানা এলাকায় ফেস্টুন টাঙানো হয়েছে। লিফলেট বিলি করা হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন