বেআইনি বাজি বয়কটে ব্যবসায়ীরা

পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনা ব্যবসায়ী সমিতির এমন অবস্থানকে স্বাগত জানিয়েছে পুলিশ-প্রশাসনও। ঘাটালের মহকুমাশাসক পিনাকিরঞ্জন প্রধান বলেন, “খুব ভাল উদ্যোগ।”

Advertisement

অভিজিৎ চক্রবর্তী

ঘাটাল শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০১৭ ০৭:২০
Share:

প্রতীকী ছবি।

বাজি ব্যবসায়ীরা তো বটেই, কালীপুজোর মরসুমে কয়েক দিনের জন্য যাঁরা বাজির খুচরো ব্যবসা করবেন, তাঁরাও যাতে লাইসেন্স নেন, নিয়মাফিক বাজি বিক্রি করেন, সেই আহ্বান জানাল ব্যবসায়ী সংগঠনও। পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনা ব্যবসায়ী সমিতির এমন অবস্থানকে স্বাগত জানিয়েছে পুলিশ-প্রশাসনও। ঘাটালের মহকুমাশাসক পিনাকিরঞ্জন প্রধান বলেন, “খুব ভাল উদ্যোগ।” ঘাটালের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক বিবেক বর্মারও বক্তব্য, “পুলিশ সতর্ক রয়েছে। ব্যবসায়ী সমিতিও এগিয়ে এসেছে শুনে ভাল লাগছে।”

Advertisement

কেন এমন উদ্যোগ? চন্দ্রকোনা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মনোজ গোস্বামী বলেন, “লাইসেন্স ছাড়া বাজি বিক্রি সম্পূর্ণ বেআইনি। নিয়ম না মেনে বাজি বিক্রি ও ব্যবহারে দুঘর্টনাও ঘটে। তাই এই সিদ্ধান্ত।”

সম্প্রতি চন্দ্রকোনা ব্যবসায়ী সমিতি শহর জুড়ে ব্যবসায়ীদের সতর্ক করে লিফলেট ছড়িয়েছে। লাইসেন্স ছাড়া বাজি বিক্রি করে ধরা পড়লে পুলিশ যখন মামলা করবে, তখন সংগঠন তার দায় নেবে না বলেও সাফ জানানো হয়েছে। ব্যবসায়ী সমিতির অন্যতম এক কর্তা আশিস কামিল্যা বলেন, “ফি বছর পুলিশ বেআইনি বাজি-সহ কাউকে ধরলেই মিটমাটের জন্য সংগঠনের কাছে আর্জি জানানো হয়। তাই এ বার আমরা আগেভাগে সবাইকে সতর্ক করে দিয়েছি।” ব্যবসায়ী সমিতির কড়া পদক্ষেপে কাজও হয়েছে। অন্য বছর দীপাবলি-কালীপুজোর সময় চন্দ্রকোনা শহর জুড়ে প্রকাশ্যেই অস্থায়ী তাঁবু খাটিয়ে বাজি বিক্রি চলত। এ বার তেমন দোকান অনেকটাই কম। গাছবোমা, দোদোমা, চকোলেট বোমের মতো শব্দবাজি তো বটেই, আতসবাজি বিক্রির ক্ষেত্রেও লাইসেন্স লাগে। জেলাশাসকের দফতর থেকে মেলে এই লাইসেন্স। তবে অনেকেই লাইসেন্স ছাড়া বাজি বিক্রি করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চন্দ্রকোনার গাছশীতলা মন্দির এলাকার এক বাজি ব্যবসায়ী মানলেন, “লাইসেন্স ছাড়াই কুড়ি বছর বাজি ব্যবসা করছি। তবে এ বার ব্যবসায়ী সংগঠনের সিদ্ধান্ত মেনে ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছি।”

Advertisement

নিষিদ্ধ শব্দবাজির বিক্রি ও ব্যবহার বন্ধে বরাবরই পুলিশি ধড়পাকড় চলে। এ বারও পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষের নির্দেশে জেলা জুড়ে অভিযান শুরু হয়েছে। জেলা পুলিশের এক কর্তা বললেন, “নিয়ম করেই অভিযান চলছে। বাজি বাজেয়াপ্ত থেকে আটক, মামলা— গুরুত্ব অনুযায়ী সবই করা হচ্ছে।” তবে পুলিশি সক্রিয়তা সত্ত্বেও বেআইনি বাজির কারবার কোনওবারই বন্ধ হয় না। কোথাও আড়ালে-আবডালে, কোথাও বা প্রকাশ্যেই চলে শব্দবাজি বিক্রি। আলোর উৎসবে কানফাটা বাজির শব্দে অতিষ্ঠ হতে হয়।

এখন ব্যবসায়ী সমিতির অবস্থান কতটা সহায়ক হয়, সেটাই দেখার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন