প্রণমি: প্রয়াত নেতাকে শ্রদ্ধা তৃণমূল পুরপ্রধানের। ছবি: দেবরাজ ঘোষ
দশ-দশবারের কংগ্রেস বিধায়ক হলেও তিনি ছিলেন রাজনীতির ঊর্ধ্বে থাকা মানুষ। আদ্যন্ত গণতান্ত্রিক ও ধর্ম নিরপেক্ষ। এ হেন ‘চাচা’র স্মরণসভাতেও মুছে গেল সব ভেদাভেদ। ধরা দিল সৌজন্যের ছবি।
রবিবার খড়্গপুরের গোলবাজার দুর্গামন্দিরে অনুষ্ঠিত হয় শহরের প্রাক্তন বিধায়ক জ্ঞানসিংহ সোহনপালের স্মরণসভা। কংগ্রেসের উদ্যোগে স্মরণসভা হলেও সব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরাই ছিলেন। এসেছিলেন জেলা কংগ্রেস নেতা শম্ভু চট্টোপাধ্যায়, শহর সভাপতি অমল দাস, সিপিএমের জোনাল সম্পাদক অনিতবরণ মণ্ডল, তৃণমূলের শহর সভাপতি তথা পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার, জেলা কর্মাধ্যক্ষ নির্মল ঘোষ, সিপিআইয়ের প্রাক্তন সাংসদ প্রবোধ পাণ্ডা, বিজেপি নেতা প্রদীপ পট্টনায়েক প্রমুখ। স্মরণসভায় কংগ্রেসের কোনও দলীয় পতাকা বা ব্যানারও ছিল না। সব ছাপিয়ে শোনা গিয়েছে চাচার আদর্শ আর রাজনৈতিক সহিষ্ণুতার কথা।
সভার শুরুতে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের শোকবার্তা পড়ে শোনানো হয়। তার পরে একে-একে উপস্থিত সকলে চাচার স্মৃতিচারণা করেন। বিজেপির প্রবীণ নেতা প্রদীপ পট্টনায়েক যেমন বলেন, “চাচার বিরোধিতা করেই আমার রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়েছিল। কিন্তু চাচার প্রতি শ্রদ্ধা কখনও চিড় খায়নি।” এ দিন বক্তাদের অনেকেই বর্তমান রাজনীতির সঙ্গে চাচার রাজনৈতিক মূল্যবোধের তুলনা টেনেছেন। শহরে সিপিএমের জোনাল সম্পাদক অনিতবরণ মণ্ডল বলেন, “চাচা ছিলেন গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ মানুষ। আমার মনে তিনি এই শহরের গাঁধী ছিলেন। প্রতিটি বিরোধী দলের কর্মীদের গুরুত্ব দিতেন। আবার দলের প্রতি তাঁর আনুগত্যও শেখার ছিল শেখার মতো। চাওয়া-পাওয়া, ব্যক্তিগত স্বার্থের জন্য কোনওদিন দলবদলু রাজনীতিতে তিনি ঝোঁকেননি।” আবার সিপিআই নেতা প্রবোধ পাণ্ডার বক্তব্য, “আমি সাংসদ থাকাকালীন চাচার অনেক প্রস্তাব সংসদে তুলেছিলাম। খড়্গপুরে নারায়ণ চৌবে, এম এ রহমান ও জ্ঞানসিংহ সোহনপাল ছিলেন রাজনীতির প্রাণপুরুষ।”