Hospital

Keshpur rural hospital: ভবনই রুগ্‌ণ

হাসপাতাল ভবনের একাংশও জরাজীর্ণ। দেওয়াল বেয়ে গাছ উঠছে। পলেস্তারা খসে ইট বেরিয়েছে। ছাদ ফাটা। বৃষ্টি হলে ওয়ার্ডে জল পড়ে।

Advertisement

বরুণ দে

কেশপুর শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২১ ০৭:২০
Share:

ঝোপঝাড়ে ঢাকা কেশপুর গ্রামীণ হাসপাতাল। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।

ওয়ার্ডের সামনের দেওয়ালে সাঁটানো কাগজে লেখা— ‘রোগীদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে’, ‘বর্জ্য পদার্থ সঠিক জায়গায় ফেলুন।’ একাংশ রোগী অবশ্য জানাচ্ছেন, তাঁরা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নই রয়েছেন। কিন্তু হাসপাতালই তো পরিচ্ছন্ন নেই!

Advertisement

রাজ্যের ‘সুশ্রী’ প্রকল্পের মার্কশিটের নিরিখে কেশপুর গ্রামীণ হাসপাতালের স্থান ২৭৪তম। ৬০০-র মধ্যে প্রাপ্ত নম্বর ৪২২। অর্থাৎ, ৭০.৩৩ শতাংশ। এই হাসপাতালের নিজের মূল্যায়নে নম্বর ছিল প্রায় ৭৫ শতাংশ। ‘সুশ্রী’- তে পাশ মার্ক ৭০ শতাংশ। ৭০.৩৩ শতাংশ পেয়েই অবশ্য খুশি কর্তৃপক্ষ। কেশপুরের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক বিদ্যুৎ পাতর বলেন, ‘‘পাশ করেছি আমরা। এতে সবাই উৎসাহিত। এর পর ৭৫-৭৬ শতাংশ নম্বর পাওয়ার চেষ্টা করব।’’

এখন ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া থেকে বাঁচতে স্বাস্থ্য দফতর জানাচ্ছে, কোথাও জল জমতে দেওয়া যাবে না। কেশপুরের হাসপাতাল চত্বরে অবশ্য আবর্জনা ছড়িয়ে যত্রতত্র। ঝোপঝাড় রয়েছে। নিকাশি নালা খোলা। জমা জলে মশা জন্মাচ্ছে। হাসপাতাল চত্বরে বড় পুকুরের চারপাশ পরিচ্ছন্ন নয়। ভিতরের ছবিটাও স্বাস্থ্যকর নয়। সিঁড়ির পাশের দেওয়ালে পানের পিক। শৌচাগারে জল জমে রয়েছে। ওয়ার্ডে গাদাগাদি করে রোগীরা রয়েছেন। ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ‘‘হাসপাতাল চত্বর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার চেষ্টা করছি আমরা। কিন্তু তারপরেও কিছু নোংরা ছড়াচ্ছে।’’ এ জন্য একাংশ রোগী এবং তাঁদের পরিজনেদের সচেতনতার অভাবকেই দায়ী করছেন স্বাস্থ্যকর্মীদের অনেকে।

Advertisement

হাসপাতাল ভবনের একাংশও জরাজীর্ণ। দেওয়াল বেয়ে গাছ উঠছে। পলেস্তারা খসে ইট বেরিয়েছে। ছাদ ফাটা। বৃষ্টি হলে ওয়ার্ডে জল পড়ে। কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, নতুন ভবন হলে সেখানে অন্তর্বিভাগ স্থানান্তরিত হবে। পুরনো ভবনে বহির্বিভাগ থাকবে। হাসপাতাল চত্বরের পুকুরের পাড় বাঁধিয়েও সৌন্দর্যায়ন করা হবে।

কেশপুরে ৪ লক্ষেরও বেশি মানুষের বাস। গ্রামীণ হাসপাতালের ৩০টি শয্যা কম পড়ে। ৫টি ওয়ার্ডে গড়ে ভর্তি থাকে ৫০ জন। কখনও ১৫০ জনও ভর্তি থেকেছে। বহির্বিভাগে গড়ে ৫০০-৬০০ জন আসেন। কোনও কোনও দিন ১,০০০-১,২০০ জনও আসেন। কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, আরও ৩০টি শয্যা বাড়ানোর প্রস্তাব জেলায় পাঠানো হয়েছে। ২৫ কিলোমিটারের মধ্যে মেদিনীপুর মেডিক্যাল রয়েছে বলেই প্রস্তাবে না কি সাড়া মিলছে না!

কথায়-কথায় মেদিনীপুর মেডিক্যালে ‘রেফারে’র অভিযোগও রয়েছে। স্থানীয় শেখ তুফান, সাকিনা খাতুনদের অভিজ্ঞতা, এই হাসপাতালের প্রবণতাই হল রোগীকে মেদিনীপুরে পাঠিয়ে দেওয়া। কর্তৃপক্ষের যুক্তি, আধুনিক অপারেশন থিয়েটার (ওটি) নেই। মাইনর ওটি হয়। আশঙ্কাজনক রোগীদের মেদিনীপুর মেডিক্যালে ‘রেফার’ করতেই হয়।

এখানে চিকিৎসক রয়েছেন ৭ জন। জিডিএমও ৫ জন, এএমও ২ জন। থাকার কথা অন্তত ১০ জন। নার্স রয়েছেন ৯ জন। থাকার কথা অন্তত ১৬ জন। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভুবনচন্দ্র হাঁসদার আশ্বাস, ‘‘শয্যা বাড়ানোর প্রস্তাব খতিয়ে দেখা হবে। অন্য বিষয়গুলিও খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন