এগোচ্ছে মুখ্যমন্ত্রীর পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সফর। দু’দিনের সফরে আগামী ২২ মার্চ জেলায় আসার কথা ছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, একদিন এগিয়ে আগামী ২১ মার্চ জেলায় আসবেন তিনি। সেই মতো প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবারও মেদিনীপুরে এক বৈঠক হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর সফরের প্রস্তুতি নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।
প্রশাসনের ওই সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত যা ঠিক রয়েছে তাতে ২১ মার্চ হেলিকপ্টারে জেলায় আসবেন তিনি। শুরুতে ডেবরায় প্রশাসনিক সভা করবেন। ওই দিন রাতে মেদিনীপুর সার্কিট হাউসে থাকবেন।
পরের দিন অর্থাৎ, ২২ মার্চ মেদিনীপুরে প্রশাসনিক বৈঠক করবেন। মেদিনীপুর পুলিশ লাইনে এই বৈঠক হওয়ার কথা। বৈঠকে বিভিন্ন দফতরের কাজকর্মের পর্যালোচনা হবে।
প্রশাসনিক এক সূত্রে খবর, এক সময় ঠিক ছিল কেশপুরে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক সভা হবে। পরে ঠিক হয়েছিল, গড়বেতায় সভা হবে। ওই দুই এলাকায় গিয়ে সম্ভাব্য সভাস্থল পরিদর্শন করেন প্রশাসনিক আধিকারিকেরা।
পরে আবার এক সময় ছিল হয়েছিল, চন্দ্রকোনা টাউন ও চন্দ্রকোনা রোডের মাঝামাঝি কোনও এলাকায় সভা হবে। শেষমেশ অবশ্য ঠিক হয়েছে, ডেবরায় সভাটি হবে। সেই মতো ডেবরায় হেলিপ্যাড তৈরির প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে।
জেলা সফরে এসে একগুচ্ছ প্রকল্পের শিলান্যাস-উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী। ডেবরার সভা থেকেই শিলান্যাস-উদ্বোধন করবেন। সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন। এ বার এই তালিকায় রেকর্ড সংখ্যক প্রকল্প থাকতে পারে। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, কোন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং শিলান্যাস হবে তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তালিকা তৈরির কাজ চলছে। প্রকল্পের সংখ্যাটা সবমিলিয়ে ৫০০ ছাড়াতে পারে! সবমিলিয়ে, জেলায় এসে মুখ্যমন্ত্রী যেন ‘স্বপ্নের ফেরিওয়ালা’ হয়ে উঠতে চলেছেন!
জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক মানছেন, “মুখ্যমন্ত্রীর হাত দিয়ে বহু প্রকল্পের শিলান্যাস-উদ্বোধন হবে। প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সারা হচ্ছে।” এর আগে গত জানুয়ারিতে পশ্চিম মেদিনীপুরে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। শালবনিতে এসে জিন্দলদের সিমেন্ট কারখানার উদ্বোধনের পাশাপাশি এক প্রশাসনিক সভাও করেন।
ওই সভা থেকেও ২৩২টি প্রকল্পের শিলান্যাস, ২৮৩টি প্রকল্পের উদ্বোধন হয়েছিল। শাসক দলের বক্তব্য, গত ছ’বছরে এই জেলায় প্রায় ৯৭ শতাংশ মানুষের কাছে কোনও না কোনও সরকারি সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
জেলা তৃণমূলের এক নেতার কথায়, “আমরা কথা কম বলি। আমরা কাজ বেশি করি। আমরা মনে করি, আমাদের দায়বদ্ধতা মানুষের কাছে। মানুষ ভাল থাকলে তবেই আমরা ভাল থাকব। মুখ্যমন্ত্রীও আমাদের এটাই শিখিয়েছেন!” মুখ্যমন্ত্রীর সভাস্থল কানায় কানায় ভরাতে চেষ্টার ত্রুটি রাখছেন না পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা। ভাড়া করা হতে পারে প্রায় তিনশো বাস। ইতিমধ্যে এ নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। এ ছাড়া, তৃণমূলও দলীয় ভাবে বেশ কিছু বাস ভাড়া করবে। প্রশাসনিক উদ্যোগে ভাড়া করা বাসে করে বিভিন্ন প্রকল্পের উপভোক্তারা সভাস্থলে পৌঁছবেন। শুধু ডেবরা নয়, জেলার প্রায় সব এলাকা থেকেই কমবেশি মানুষ যাবেন মুখ্যমন্ত্রীর সভায়। জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি অজিত মাইতি বলেন, “উপভোক্তারা যাতে নির্বিঘ্নে সভাস্থলে পৌঁছতে পারেন, জনপ্রতিনিধিদের তা দেখতে বলা হয়েছে।”