পরীক্ষার আগেও বই পৌঁছয়নি বহু স্কুল ও শিশুশিক্ষাকেন্দ্রে

প্রাথমিকের পাঠ্য পড়ে সিঁড়িঘরে

বাংলা নববর্ষ পেরোলেই প্রাথমিকের প্রথম পর্বের পরীক্ষা। চার মাস আগে ইংরেজি নববর্ষের গোড়াতেই পশ্চিম মেদিনীপুরের সব প্রাথমিক এবং শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের জন্য সরকারি বই বিলি হয়ে যাওয়ার কথা ছিল।

Advertisement

দেবমাল্য বাগচী

ডেবরা শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০১৭ ০০:৪১
Share:

অবহেলা: পড়ে রয়েছে অজস্র বই। নিজস্ব চিত্র

বাংলা নববর্ষ পেরোলেই প্রাথমিকের প্রথম পর্বের পরীক্ষা। চার মাস আগে ইংরেজি নববর্ষের গোড়াতেই পশ্চিম মেদিনীপুরের সব প্রাথমিক এবং শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের জন্য সরকারি বই বিলি হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পরীক্ষার মুখে এখনও ডেবরা ব্লকের বহু শিশু শিক্ষাকেন্দ্র বই পায়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। অথচ, ডেবরা অডিটোরিয়ামের সিঁড়ির তলায় বস্তাবন্দি হয়ে পড়ে রয়েছে ওই বই! বইয়ের অভাবে পরীক্ষার প্রস্তুতিতে বিপাকে পড়েছে জেলার কিছু প্রাথমিকের পডুয়ারাও।

Advertisement

গত জানুয়ারি মাসে ওই অডিটোরিয়াম থেকেই বই বিলি শুরু করেছিল ডেবরা পঞ্চায়েত সমিতি। প্রেক্ষাগৃহে মূলত চতুর্থ শ্রেণির ‘আমাদের পরিবেশ’, ‘স্বাস্থ্য ও শারীরশিক্ষা’ এবং দ্বিতীয় শ্রেণির ‘আমার বই’ ইত্যাদি বই-ই বস্তাবন্দি হয়ে পড়ে রয়েছে। বহু শিশু শিক্ষাকেন্দ্রের শিক্ষিকাদের অভিযোগ, ওই বইগুলিই তাঁরা এখনও পাননি। প্রশাসনে জানিয়েও লাভ হয়নি।

এ নিয়ে পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ চিন্ময় বসু বলেন, “অডিটোরিয়ামে এত দিন বই পড়ে রইল কী করে জানি না। কার গাফিলতি রয়েছে দেখছি। প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তবে, সমিতির শিক্ষা আধিকারিক দীপান্বিতা দাসের দাবি, ‘‘ওই বইগুলি চার বছরের পুরনো।’’ যদিও গত বছর পাঠ্যক্রম বদলের পরে যে বই এসেছে, প্রেক্ষাগৃহে সেগুলি পড়ে থাকার ছবিই ধরা পড়েছে। নতুন বই পড়ুয়ারা কেন পেল না, এ নিয়ে কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি দীপান্বিতাদেবী।

Advertisement

আগামী ১৮ এপ্রিল থেকে প্রাথমিকের প্রথম পর্বের পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। এই অবস্থায় অনেক স্কুল পুরনো বই দিয়ে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছে।

কুশিয়া শিশু শিক্ষাকেন্দ্রের প্রধান শিক্ষিকা লক্ষ্মী বেরা বা বালিচক শিশু শিক্ষাকেন্দ্রের প্রধান শিক্ষিকা শিবানী রানা বলেন, “সর্বত্র জানিয়েও চার মাসে বই পেলাম না। পড়ুয়ারা কী ভাবে পরীক্ষা দেবে জানি না।” একই কথা শোনা গিয়েছে ধামতোড় শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের প্রধান শিক্ষিকা আভা মণ্ডল বা ধণ্ডাগেড়িয়া শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের প্রধান শিক্ষিকা অঞ্জনা মান্নার মুখেও।

ডেবরার পাশের ব্লক সবংয়ের কোরদা প্রাথমিক বিদ্যালয়েও বই পৌঁছয়নি। প্রধান শিক্ষক লক্ষ্মীকান্ত হেমব্রম বলেন, “আমাদের স্কুলে চতুর্থ শ্রেণির ১২ জন পড়ুয়ার জন্য গত মাসে মাত্র দু’টি ‘আমাদের পরিবেশ’ বই পেয়েছি। বাকি বই এখনও মেলেনি। আশপাশের বহু স্কুলেও একই অবস্থা।” যদিও জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (প্রাথমিক) আমিনুল আহাসান দাবি করেছেন, সমস্ত প্রাথমিকে বই বিলি হয়ে গিয়েছে। যদি কোনও স্কুল বই না পেয়ে থাকে, খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন