শবরদের ভুল বুঝিয়ে জমি কেনার নালিশ

খড়্গপুর গ্রামীণের বড়কোলা পঞ্চায়েতের গোকুলপুর সংলগ্ন শ্যামরাইপুরের এই ঘটনায় শোরগোল পড়েছে। গত শনিবার আদিবাসী বিকাশ পরিষদের বাধায় পাঁচিল দিতে গিয়েও ফিরতে হয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ ও পুলিশকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:৩৩
Share:

এই জমিতে কারখানা সম্প্রসারণেই এসেছে বাধা। নিজস্ব চিত্র

রাজ্যের জমি নীতি অনুযায়ী, সরাসরি চাষিদের থেকে জমি কিনতে হবে শিল্প সংস্থাকে। সেই নিয়মেই প্রকল্প এলাকা সম্প্রসারণে গোকুলপুর লাগোয়া এলাকায় জমি কিনেছেন একটি মেটালিক্স কারখানার কর্তৃপক্ষ। এখন অখিল ভারত আদিবাসী বিকাশ পরিষদ অভিযোগ তুলেছে, শবর সম্প্রদায়ের লোকজনকে ভুল বুঝিয়ে জোর করে ওই জমি কেনা হয়েছে। কারখানা কর্তৃপক্ষ পাঁচিল দেওয়ার কাজ শুরু করায় জটও পেকেছে।

Advertisement

খড়্গপুর গ্রামীণের বড়কোলা পঞ্চায়েতের গোকুলপুর সংলগ্ন শ্যামরাইপুরের এই ঘটনায় শোরগোল পড়েছে। গত শনিবার আদিবাসী বিকাশ পরিষদের বাধায় পাঁচিল দিতে গিয়েও ফিরতে হয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ ও পুলিশকে। ওই সংগঠনের দাবি, শবরদের জমি সরকারি অনুমতি ছাড়া কেনা যায় না। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ জোর করে শবরদের ভুল বুঝিয়ে জমি কিনেছেন। এত দিন ওই জমিতে চাষ করে এসেছে ২২টি শবর পরিবার। এখন জমি হারিয়ে তাঁরা অভাবের মধ্যে পড়েছেন। তাই জমি ফিরে পাওয়ার দাবি তুলেছেন। শীঘ্রই স্মারকলিপি দিয়ে বিষয়টি জেলা প্রশাসনের নজরে আনা হবে বলে জানিয়েছে আদিবাসী বিকাশ পরিষদ।

খড়্গপুরের সাদাতপুর এলাকার ওই মেটালিক্স কারখানা তাদের তৃতীয় ইউনিট খুলতে চলেছে। কর্তৃপক্ষ জানান, প্রায় ২৫০ একর জমিতে ওই তৃতীয় ইউনিটে মূলত বিদ্যুৎ প্রকল্প-সহ দু’টি প্রকল্প গড়া হবে। দু’বছর ধরে মালিকদের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করে ওই জমি কেনা হয়েছে। সেখানে শ্যামরাইপুর, খাঞ্জারিচক, নন্দারচক মৌজায় শবরদের প্রায় ২২টি পরিবারের প্রায় ৩০ বিঘা জমি রয়েছে। পাঁচিল দেওয়ার কাজও চলছে ধাপে ধাপে। সম্প্রতি শেষ পর্যায়ের পাঁচিল দিতে গেলে বেঁকে বসেন শবরেরা। শবর সম্প্রদায়ভুক্ত স্থানীয় লক্ষ্মীন্দ্র প্রামাণিক বলেন, “আমাদের চার ভাইয়ের থেকে ভুল বুঝিয়ে জমি কিনেছেন কারখানা কর্তৃপক্ষ। ডেসিমেল প্রতি মাত্র ৪২ হাজার টাকা দিয়েছেন। চাষ করতে না পারলে ওই টাকায় ক’দিন খাব! তাই আমরা চাই ওই জমি ফিরিয়ে দেওয়া হোক।”

Advertisement

অখিল ভারত আদিবাসী বিকাশ পরিষদের জেলা সভাপতি ওই গ্রামের বাসিন্দা তারক বাগেরও বক্তব্য, “কারখানা হলে চাষ বন্ধ হয়ে যাবে, দূষণ ছড়াবে। তাই আমরা লোধা-শবরেরা চাইছি জমি ফিরিয়ে দেওয়া হোক।” ওই মেটালিক্স কারখানার এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর অভিজিৎ রায় অবশ্য স্পষ্টই বলেন, “ওই জমিতে স্পঞ্জ আয়রন কারখানা হবে না। আর এখনকার দিনে কাউকে ভুল বুঝিয়ে জোর করে জমি কেনা সম্ভব নয়। সকলে স্বেচ্ছায় জমি দিয়েছেন। এখন কয়েকটি পরিবারকে নিয়ে গোলমাল পাকানো হচ্ছে। আমরা প্রশাসনের কাছে সুরাহা চেয়েছি।”

প্রশাসন জানিয়েছে, পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন