পতাকা নেড়ে যাত্রার সূচনায় জেলাশাসক রশ্মি কমল। নিজস্ব িচত্র।
একে তো আর্থিক অনটন, তার উপর শারীরিক প্রতিবন্ধকতা। পুজো মানে ওদের কাছে স্কুলের ছুটি। আর কিছু না। জীবনের লড়াই লড়তে লড়তে এই ছোট্ট বয়সে আনন্দটা কী, জানা হয়ে ওঠেনি। কিন্তু এ বার পূর্ব মেদিনীপুর থেকে বাসে চড়ে ওরা ঠাকুর দেখতে গেল খোদ কলকাতায়। দেশপ্রিয়া পার্কের হাজার হাতে দুর্গা, বালিগঞ্জ সার্বজনীন, সিংহীপার্ক, একডালিয়া এভারগ্রিন— কলকাতার ঐতিহ্যবাহী পুজোগুলো ওদের ঘুরিয়ে দেখানোর ব্যবস্থা করল হলদিয়া এনার্জি লিমিটেড।
বৃহস্পতিবার হলদিয়া গাঁধী আশ্রমের ৪০ জন আবাসিক পড়ুয়াকে বাসে করে কলকাতার বিভিন্ন পুজো মণ্ডপ এবং সায়েন্স সিটি ঘুরিয়ে দেখানো হয়। সকালে তমলুক শহরে জেলাশাসকের অফিস থেকে বাস যাত্রার উদ্বোধন করেন জেলাশাসক রশ্মি কমল। উপস্থিত ছিলেন হলদিয়া এনার্জি লিমিটেডের সহ-সভাপতি সুদীপ্ত মুখোপাধ্যায়, হলদিয়া সমাজ কল্যাণ পর্ষদের সম্পাদক দুলাল সামন্ত। রশ্মি কমল বলেন, ‘‘প্রতিবন্ধকতা যুক্ত এইসব শিশু-কিশোরদের পড়াশোনার পাশাপাশি যাতে কিছুটা আনন্দ দেওয়া যায় সে জন্যই এই উদ্যোগ। হলদিয়া এনার্জি লিমিটেড যে ভাবে এগিয়ে এসেছে, তা প্রশংসার যোগ্য।’’ তিনি জানান, জেলার অন্যান্য আবাসিক হোমেও যাতে এমন ব্যবস্থা করা যায়, তা ভাবনা চিন্তা করা হবে। জেলা প্রশাসনের তরফে ৪০টি বড় স্কুলকে বেছে নিয়ে ‘মডেল’ করা হয়েছে। এইসব স্কুলে বিভিন্ন শিল্প সংস্থা যাতে ‘কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপন্সবিলিটি স্কিম’ থেকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসে তার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সুদীপ্ত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা এলাকার মানুষের জন্য নানা সামাজিক কাজের সঙ্গে জড়িত রয়েছি। জেলা প্রশাসনের তরফে আমাদের সব রকম সাহায্য করা হয়েছে।’’
ঠাকুর দেখতে যাওয়া আগে উচ্ছ্বসিত রাজারাম দাস, বুদ্ধদেব মণ্ডল, রানা দাসরা। বুদ্ধদেব বলে, ‘‘আগে কোনদিন এ ভাবে ঠাকুর দেখিনি। কলকাতায় যাওয়ার কথা তো ভাবিইনি। খুব আনন্দ হচ্ছে।’’