দুর্ঘটনার পরেও এভাবেই চলছে লাইন পারাপার। —নিজস্ব চিত্র।
স্টেশনে ওভারব্রিজ রয়েছে। কিন্তু ব্যবহার করতে গেলে ঘুরপথ হয়। তাই লেভেল ক্রসিং পেরিয়েই যাতায়াত করেন আশপাশের এলাকার লোকেরা। যদিও লেভেল ক্রসিংয়ে কোনও গেট বা রেলের পাহারাদার নেই। যা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই রেলের কাছে দাবি জানিয়ে আসছেন স্থানীয় মানুষ।
শুক্রবার সকাল ৭টা নাগাদ সে ভাবেই লাইন পেরিয়ে ভোগপুর স্টেশন থেকে ট্রেন ধরতে যাচ্ছিলেন কোলাঘাট থানার কোদালিয়া গ্রামের বাসিন্দা রেলের অস্থায়ী কর্মী টুনু সামন্ত (৪২)। সেই সময় হাওড়া থেকে খড়্গপুরের দিকে ছুটে আসা জনশতাব্দী এক্সপ্রেসের ধাক্কায় ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় মহিলার দেহ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সেই সময় তিন নম্বর প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়েছিল খড়গপুর যাওয়ার আপ লোকাল। টুনু দেবী খড়গপুর লোকাল ধরার জন্য ট্রেন লাইন পারাপারের সময় ওই দুর্ঘটনা ঘটে। বেশ কিছুক্ষণ দেহ পড়ে থাকার পর পাঁশকুড়া রেলপুলিশ এবং জিআরপি এসে দেহ উদ্ধার করে।পরে দেহ ময়না তদন্তের জন্য তমলুক জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ওভারব্রিজ থাকা সত্ত্বেও এ ভাবে লাইন পার হতে গিয়ে দুর্ঘটনা নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের যুক্তি, স্টেশন দিয়ে যেতে গেলে কিছুটা ঘুরে যেতে হয়। তা ছাড়া যাঁরা স্টেশনে ট্রেন ধরবেন না, তাঁরা কেন খামখা ওভারব্রিজ ব্যবহার করবেন! তাঁদের দাবি, রেলের কাছে দীর্ঘদিন ধরেই ওই এলাকায় লেভেল ক্রসিংয়ে গেটের দাবি জানানো হচ্ছে। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি। অথচ প্রচুর মানুষ ওই ভাবে লাইন পেরিয়ে যাতায়াত করেন। লাইনের পাশেই ভোগপুর হাইস্কুল রয়েছে। সেখানকার ছাত্রছাত্রীরাও প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করে।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, টুনু দেবী খড়গপুরে রেল দফতরের সাফাই কর্মী। লাইন না পেরিয়ে ওভারব্রিজ ব্যবহার করার জন্য রেলের তরফে প্রচারে খামতি নেই। তারপরেও রেলের একজন কর্মী হিসাবে টুনু দেবী এতটা অসাবধান হলেন কেন সেই প্রশ্ন উঠেছে।
এ দিন বিষয়টি নিয়ে রেলের খড়্গপুরের সিনিয়ার ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার বলেন, ‘‘ভোগপুরে রেলের ফুটওভারব্রিজ রয়েছে। তবে একটি অংশে ফুটওভারব্রিজ নেই। আমরাও মনে করি ফুটওভারব্রিজ থাকা উচিত। আমরা বিষয়টি নিয়ে অবিলম্বে পদক্ষেপ করব। মৃত মহিলা ডিভিশন অফিসের সাফাইকর্মীদের সুপারভাইজার পদে কর্মরত ছিলেন। তাঁর মৃত্যু দুর্ভাগ্যজনক।”
যদিও এ দিন দুর্ঘটনার পর ফের জোরাল হয়েছে লেভেল ক্রসিংয়ের দাবি।