Tribute

গাঁধীর পদাপর্ণের স্মৃতিতর্পণ মহিষাদলে 

১৯৪৫ সালের ২৫ ডিসেম্বর  মহিষাদলে এসেছিলেন গাঁধী। গাঁধীজির স্মৃতিতে ১৯৯৫ সালের ২৪ ডিসেম্বর নন্দকুমারের রোহিণীনন্দন খাঁড়া নামে এক ব্যক্তি মহিষাদলে তৈরি করেন গাঁধী কুটির।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হলদিয়া শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০২০ ০০:৩৫
Share:

গাঁধী জন্মজয়ন্তীতে সেজেছে গাঁধী কুটির। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র

সাত দশকেরও আগে মহিষাদল রাজবাড়ি সংলগ্ন হিজলি টাইডাল ক্যানালের পাড়ে ভিড়েছিল মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর স্টিমার। পাঁচদিন ছিলেন এখানে। শুক্রবার তাঁর জন্মদিনে আগমনের সেই স্মৃতি আগলে বসে রয়েছেন মহিষাদলবাসী। গাঁধী কুটিরেও এদিন বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছিল।

Advertisement

১৯৪৫ সালের ২৫ ডিসেম্বর মহিষাদলে এসেছিলেন গাঁধী। যে ক’দিন ছিলেন, প্রাতর্ভ্রমণ, চরকা কাটা, কংগ্রেসের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে সাদামাটা ভাবেই দিন কেটেছিল তাঁর। গাঁধীজির স্মৃতিতে ১৯৯৫ সালের ২৪ ডিসেম্বর নন্দকুমারের রোহিণীনন্দন খাঁড়া নামে এক ব্যক্তি মহিষাদলে তৈরি করেন গাঁধী কুটির। পরে সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী কুটিরের সংস্কার করেন। এ দিন সেই গাঁধী কুটিরে গিয়ে দেখা গেল, সকালেই হয়ে গিয়েছে প্রার্থনা। গাঁধীজি যেখানে বসে চরকা কেটেছিলেন, সেখানে ফুল দিয়ে সাজানো। প্রতি বছর কুটির সংলগ্ন শিশু সদনের আবাসিকেরা এই দিনটিতে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করত। কিন্তু করোনার কারণে এ বার ফাঁকা শিশুসদন। সকলেই যে যার বাড়িতে ফিরে গিয়েছে।

শিশুসদনের আধিকারিক মানিকচন্দ্র পাল বলেন, ‘‘তৎকালীন কংগ্রেস নেতাদের মধ্যে মতাদর্শ নিয়ে যে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছিল, তার নিরসনেই গাঁধীজি এসেছিলেন। ওঁর জন্য একটি খড়ের কুটির বানানো হয়েছিল। ১৯৪৫ সালেই এই শিশুসদন তৈরি হয়েছিল। গাঁধীজির চিতাভস্ম রয়েছে এখানে।’’ তবে তাঁর চরকার অবশ্য এখন হদিস নেই কুটিরে। মানিক বলেন, ‘‘আমি ১৯৭১ সালে এখানে আসি। কিন্তু গাঁধীজির চরকা দেখিনি। ওঁর ব্যবহার করা একটি চেয়ার ছিল। সেটি আস্ত না থাকলেও তাঁর অংশ যত্ন করে রাখা আছে। ’’

Advertisement

এ দিন গাঁধী কুটিরে দেখা মেলে স্থানীয় বাসিন্দা ইন্দ্রদীপ ভৌমিকের। ইন্দ্রদীপ জানান, তাঁর দাদু চিকিৎসক গোবিন্দ ভৌমিক স্বাধীনতা সংগ্রামী ছিলেন। তিনি গাঁধীজিকে দেখেছেন। ইন্দ্রদীপ বলেন, ‘‘দাদুর কাছে শুনেছি, সেবাদলের তরুণদের সঙ্গে গাঁধীজি নিয়মিত কথা বলতেন।’’ স্থানীয় বাসিন্দা চিত্তরঞ্জন সামন্তও গাঁধীজিকে দেখেছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা তখন ছাত্র। গাঁধীজিকে খুব কাছ থেকে দেখেছি। ওঁর জিপের দেখভালের দায়িত্বে ছিলাম। কতদিন হয়ে গেল।’’
স্মৃতিতে রয়েছে সেই পাঁচ দিন। কিন্তু স্থানীয়দের আক্ষেপ— গাঁধী এখানে পাঁচ দিন থাকলেও এই স্থানটিকে প্রচারে সেভাবে তুলে ধরা হয়নি। গাঁধীর অনুপ্রেরণায় যে শিশু সদন তৈরি, তার হালও ফেরেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন