এ ভাবেই চলে পারপার। — নিজস্ব চিত্র
খেজুরির গ্রাম থেকে মোটরবাইক চালিয়ে নন্দীগ্রামের কেন্দেমারি ফেরিঘাট হয়ে নদী পেরিয়ে হলদিয়ায় আসেন বিধান আড়ি। হলদিয়ায় একটি ভোজ্যতেল কারখানার কর্মী বছর তিরিশের বিধান প্রতিদিন এ ভাবেই বাড়ি আসেন।একই পথে বাড়ি ফেরেন। বিধানের কথায়, ‘‘সবচেয়ে ঝুঁকি কেন্দেমারি থেকে নদী পেরিয়ে হলদিয়া টাউনশিপ ঘাটেই। কারণ পাকা জেটি না থাকায় প্রতিদিন নৌকায় মোটরবাইক তোলা ও নামাতে গিয়েই যত বিপত্তি।’’
এই সমস্যা শুধু বিধানেরই নয়। প্রতিদিন কাজের সূত্রে যাঁরা হলদিয়া টাউনশিপ ঘাট দিয়ে যাতায়াত করেন তাঁদের অনেকেরই। টাউনশিপ ঘাটে নৌকায় ওঠা-নামার জন্য জেটি নেই। ফেরিঘাটের কাছে নদীর পাড়ে পাকা চাতাল করে দেওয়া হয়েছে, সেখানেই কাঠের পাটাতন দিয়েই যাত্রী ওঠানামা চলে। নৌকা থেকে বাইক নামানোর জন্য একাধিক ব্যক্তির সাহায্য লাগে। এ ভাবেই চলছে গত দশ বছর ধরে।
নদীপথে নিত্যযাত্রীরা জানান, বর্তমান ঘাটের কিছুটা দূরেই লোহার কাঠামোর পাকা জেটি ছিল। ২০০৬ সালে ঝড়ে সেই জেটিটি ভেঙে যাওয়ার পর আর জেটি মেরামত করা হয়নি। সেই ভাঙা জেটির কিছু দূরে এই পাকা চাতাল করা হয়েছে। চাতাল দিয়ে ঘাটে ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় ওঠানামা করতে হচ্ছে। যাত্রীদের অভিযোগ, শুধুমাত্র জেটি সমস্যা নয়, নদী পারাপারের জন্য যেসব নৌকা রয়েছে তাঁর অধিকাংশ ছোট আকারের। তাতে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহণ করা হয় বলেও অভিযোগ। প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। প্রশাসনের তরফে নিরাপত্তার জন্য কোনও নজর দেওয়া হয় না। কয়েকদিন আগেও কেন্দেমারি ঘাটে নৌকায় ওঠার পর ভিড়ের চাপে এক প্রতিবন্ধী যুবক নদীতে পড়ে গিয়েছিল। তবে প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন ওই যুবক।
হলদিয়া টাউনশীপ-কেন্দেমারিঘাট ফেরি পরিষেবার দায়িত্ব রয়েছে হলদিয়া পুরসভার হাতে। পুরসভার তরফে যাত্রী পারাপারের জন্য একটি বেসরকারি সংস্থাকে লিজ দেওয়া হয়। হলদিয়ার দিকে ঘাটে স্থায়ী জেটি না থাকায় সমস্যার কথা স্বীকার করে হলদিয়ার পুরপ্রধান দেবপ্রসাদ মণ্ডল বলেন, ‘‘ভাঙা জেটিটি সংস্কার করা হবে। আর নৌকায় যাতে অতিরিক্ত যাত্রী তোলা না হয় সে জন্য প্রতিদিন সকালে বড় নৌকা চালানোর জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’