মকরামপুরের অনুষ্ঠানে সাংসদ সন্ধ্যা রায়। — রামপ্রসাদ সাউ।
এলাকা উন্নয়ন তহবিলের টাকা খরচে তিনি ‘ফার্স্ট’। পিছনে ফেলে দিয়েছেন রাজনীতিতে পোড়খাওয়া বহু দিনের সাংসদদেরও। উন্নয়নের জন্য এ বার আরও বেশি বরাদ্দের দাবি তুললেন মেদিনীপুরের তৃণমূল সাংসদ সন্ধ্যা রায়।
বৃহস্পতিবার নারায়ণগড়ের মকরামপুরে একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সন্ধ্যাদেবী। সাংসদ তহবিলের ৩০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ধানঘোরী-ছকামারা সেতুর উদ্বোধন করেন সাংসদ। অনুষ্ঠান মঞ্চেই মেদিনীপুরের সাংসদ বলেন, “আপনাদের জন্য আমি কিছু দিতে পারিনি। প্রাণের ইচ্ছা অনেক। সামর্থ্য কম।” এরপরেই তাঁর সংযোজন, “কেন্দ্রীয় সরকার মাত্র ৫ কোটি টাকা দেয়। এই টাকায় উন্নয়ন সম্ভব নয়। আমাদের দাবি ১০ কোটি টাকা। সেই টাকা পেলে ন্যূনতম কাজ করতে পারব।”
২০১৪-১৫ ও ২০১৫-১৬ অর্থবর্ষে সাংসদ এলাকা উন্নয়ন তহবিলের পুরো টাকা খরচ করেছেন সন্ধ্যাদেবী। এমনকী তহবিলে আগের পড়ে থাকা ৭১ লক্ষ টাকাও খরচ করা হয়েছে। রাজনীতিতে নবাগতা সন্ধ্যাদেবী প্রথম বার সাংসদ হয়েই যেখানে টাকা খরচে এগিয়ে, তখন তাঁর দলের বাকি সাংসদরা এখনও সব টাকা খরচ করতে পারেননি। এ দিন সন্ধ্যাদেবী বলেন, “জীবনে ভাবিনি রাজনীতির একটা কাজও আমি করতে সক্ষম। যখন শুনছি আমি পেরেছি, তখন মনে করছি আমার হাতেখড়ি হয়েছে।”
উন্নয়ন তহবিলের টাকা খরচে অন্য সাংসদেরা কেন পিছিয়ে পড়ছেন? সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মেদিনীপুরের সাংসদ বলেন, “কী কারণে অন্য সাংসদেরা পিছিয়ে পড়ছেন তা বলতে পারব না। আমার কাজ করার ইচ্ছা রয়েছে। ঈশ্বরের কৃপায় আমি মানুষের কাছে পৌঁছতে পেরেছি। ইচ্ছাশক্তির জোরেই এই কাজ করতে পেরেছি।” এরপরেই অন্য সাংসদদের উদ্দেশে তাঁর বার্তা, “আমার মনে হয় সকলের দেশের জন্য কাজ করা উচিত। এই কাজের সুযোগ সকলে পান না। প্রতিটি সাংসদের উচিত, মানুষের কাছে গিয়ে মানুষের প্রয়োজন বুঝে কাজ করা।”
মকরামপুরের অনুষ্ঠান থেকে সর্বশিক্ষা মিশনের টাকায় সগড়ভাঙা ও ছকামারা গ্রামে নির্মিত দুটি প্রাথমিক স্কুল ভবনের উদ্বোধনও করেন সাংসদ। অনুষ্ঠানে সন্ধ্যাদেবী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারী, জলসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র প্রমুখ। এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক আশিস চক্রবর্তী, বিক্রম প্রধান, দীনেন রায় প্রমুখ। স্থানীয় পঞ্চায়েতের উদ্যোগে আয়োজিত এই প্রশাসনিক সভায় মঞ্চে বসে থাকতে দেখা গিয়েছে দেবাশিস চৌধুরী, মিহির চন্দ, প্রদীপ পাত্রদের মতো তৃণমূলের বিভিন্ন ব্লক সভাপতিদেরও।
প্রশাসনিক সভায় উপস্থিত নেতারদের মুখেও এ দিন রাজনৈতিক বক্তব্য শোনা গিয়েছে। অনুষ্ঠানে মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র বলেন, “সূর্য মিশ্র মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। তাঁকে স্বপ্নে দেখা মুখ্যমন্ত্রী হয়ে থেকে যেতে হয়েছে। আর সবংয়ে নির্মল ঘোষ হয়তো জোট প্রার্থীর কাছে পরাজিত হয়েছেন। তবে ভাল লড়াই করেছেন।”
পরে বিকেলে দাঁতনে অন্য একটি অনুষ্ঠানেও উপস্থিত ছিলেন মেদিনীপুরের সাংসদ। ওই অনুষ্ঠানে সন্ধ্যাদেবী সাংসদ তহবিলের টাকায় দাঁতনের মোগলমারি বৌদ্ধবিহার যাওয়ার একটি কংক্রিটের রাস্তার উদ্বোধন করেন। একটি অ্যাম্বুল্যান্স ও দাঁতন কলেজের একটি ভবনেরও উদ্বোধন হয়।