দুঃস্থদের কম্বল। খড়্গপুরে। নিজস্ব চিত্র
মানুষকে হাসানোই তাঁদের ব্রত। মানুষের দুঃখেও তাঁরা পাশে আছেন। বড়দিনের প্রাক্কালে রাতে যখন গির্জায় গির্জায় প্রার্থনার সুর, তখন তাঁরা সান্তার বেশে গির্জার বাইরে ঠান্ডায় রাস্তায় কষ্ট করে শুয়ে থাকা দুঃস্থ মানুষদের গায়ে দিয়ে দিলেন কম্বল।
বছর দু’য়েক আগে নিছক মজার ভিডিয়ো তৈরি করতে একটি দল গড়ে তোলেন মোহন দাস ও তাঁর দুই সঙ্গী। মানুষকে হাসাতে বছর খানেক আগে ইউটিউবে চ্যানেলও খোলেন তাঁরা। সেই চ্যনেলের এখন ২২ হাজার ‘সাবস্ক্রাইবার’ রয়েছে। দিনে দিনে বেড়েছে মঞ্চের সদস্য সংখ্যাও। মূলত ১৮-২৭ বছর বয়সের দলের সদস্যদের অধিকাংশের বাড়ি খরিদা ও মালঞ্চ এলাকায়।
গত বছরও ২৫ ডিসেম্বর দুঃস্থদের কম্বল বিলি করেছিলেন ওই তরুণ-যুবকেরা। তবে সংখ্যাটা ছিল কম। এ বার সান্তার বেশে সকলে মাঝরাতেই বেরিয়ে পড়েছিলেন শহরের রাস্তায়। এরপরে একে-একে ৮৫ জন দুঃস্থকে কম্বল দেন তাঁরা। ছোটদের দেন চকোলেট ও কেক। ওই মঞ্চের সদল্য আইটিআই-এর ছাত্র অয়ন বিশ্বাসের কথায়, “আমরা মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে চাই। তাই নিজেদের খরচ বাঁচিয়ে জমানো টাকা একসঙ্গে করে এই কম্বল বিতরণের কর্মসূচি নিয়েছিলাম। সবাই তো বড়দিনের আনন্দ করছি। কিন্তু ওঁরা তো ঠান্ডায় কষ্ট পাচ্ছেন। তাই একটি দিনও যদি ওদের মুখে হাসি ফোটে তবেই আমাদের সাফল্য।”
সোমবার রাতে খড়্গপুরের মালঞ্চ রোড থেকে এই কম্বল বিতরণ কর্মসূচি শুরু হয়।
এরপরে নিউ সেটেলমেন্ট, গিরি ময়দান স্টেশন, ওয়াড মেমোরিয়াল চার্চ, খড়্গপুর স্টেশন, সেক্রেড হার্ট চার্চ, ইন্দা, বাসস্ট্যান্ড, গোলবাজার, খরিদা হয়ে কর্মসূচি শেষ হয়। এই মঞ্চ তৈরির কাণ্ডারী মোহন দাস বলছেন, ‘‘আমরা প্রচার চাই না। আমরা চাই মানুষ খুশিতে থাকুন। আমাদের দলের সদস্যরা কেউ ছোট ব্যবসা করি, কেউ শিক্ষক, কেউ বা আবার পড়াশোনা করি।’’ তাঁর কথায়, ‘‘কারও সাহায্য না নিয়ে নিজেরাই পিকনিকের
টাকা বাঁচিয়ে এই কর্মসূচি পালন করলাম। আগামীদিনে ইউটিউব থেকে আয় হলে এই কাজে আরও ব্যয় করব।”