Measles

হাম-রুবেলার টিকাকরণে বাধা স্কুলছুট, উত্তীর্ণরাও

উল্লেখযোগ্য ভাবে টিকাদান কর্মসূচিতে পিছিয়ে থাকার নিরিখে রাজ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা কলকাতায়। সেখানে মাত্র ২৯ শতাংশ টিকাকরণ হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাঁথি শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০২৩ ০৯:৫৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

স্কুলপড়ুয়াদের হাম এবং রুবেলা টিকাদান কর্মসূচিতে প্রথম স্থানে পূর্ব মেদিনীপুর এবং নন্দীগ্রাম স্বাস্থ্য জেলা। কিন্তু এগিয়ে থাকা দুই স্বাস্থ্য জেলাতেই নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে টিকাকরণ শেষ করার ক্ষেত্রে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে স্কুল ছুট এবং উত্তীর্ণ হওয়া পড়ুয়ারা। পরিকল্পনামত ধার্য হওয়া দিনগুলিতে প্রায় অধিকাংশ শিবিরে এ ধরনের একজন পড়ুয়াও আসেনি। ফলে রুবেলা এবং হামের টিকা দান কর্মসূচিতে লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সেরা স্থান ধরে রাখতে মাথায় হাত পড়েছে জেলার স্বাস্থ্যকর্তাদের।

Advertisement

স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েকদিন ধরে প্রজাতন্ত্র দিবস এবং সরস্বতী পুজো উপলক্ষে রুবেলা এবং হামের টিকা দান কিছুটা ধাক্কা খেয়েছিল। শনিবার সন্ধ্যে পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী রাজ্যে সবচেয়ে বেশি টিকা দেওয়া হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর স্বাস্থ্য জেলায়। সেখানে ৯১ শতাংশ টিকাকরণ সম্পূর্ণ। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে নন্দীগ্রাম (৮৩ শতাংশ), তৃতীয় উত্তর দিনাজপুর (৮১ শতাংশ), চতুর্থ স্থানে রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলা (৮১ শতাংশ) এবং পঞ্চম স্থানে রয়েছে বাঁকুড়া জেলা (৭৮ শতাংশ)।

উল্লেখযোগ্য ভাবে টিকাদান কর্মসূচিতে পিছিয়ে থাকার নিরিখে রাজ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা কলকাতায়। সেখানে মাত্র ২৯ শতাংশ টিকাকরণ হয়েছে। তারপর দক্ষিণ ২৪ পরগনা। সেখানেও পঞ্চাশ শতাংশ বাকি রয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর সূত্র জানা গিয়েছে, নন্দীগ্রাম স্বাস্থ্য জেলায় ৪ লক্ষ ৪৮ হাজার ৪১ জন এবং পূর্ব মেদিনীপুর স্বাস্থ্য জেলায় ৭ লক্ষ ৮৮ হাজার ৮৩২ জনকে টিকা দেওয়া হবে। আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে এই কর্মসূচি। স্বাস্থ্য দফতরের নিয়ম অনুযায়ী-লক্ষ্যমাত্রার ৯৫ শতাংশ সম্পূর্ণ হওয়ার পর তবেই টিকাকরণ কর্মসূচি জেলায় শেষ হয়েছে বলা যায়। নন্দীগ্রামের দুটি ব্লক এবং খেজুরি -২ ব্লকে নির্ধারিত দিনগুলিতে মাত্র ২০০ জন টিকা নিয়েছে। এই দিনগুলিতে স্কুলছুট এবং উত্তীর্ণ হওয়া পড়ুয়ারদের টিকাদান শিবিরে নিয়ে আসতে তাঁরা ব্যর্থ হয়েছেন বলে নন্দীগ্রাম স্বাস্থ্য জেলা সূত্রে জানা গিয়েছে। উল্টোদিকে পূর্ব মেদিনীপুর স্বাস্থ্য জেলায় এ ধরনের বাচ্চা অনেক বেশি সংখ্যক টিকা পেয়েছে। যদিও পাঁশকুড়া পুরসভা এলাকা এবং কোলাঘাট ব্লকে কিছুটা ঘাটতি রয়েছে বলে পূর্ব মেদিনীপুর স্বাস্থ্য জেলা সূত্রে জানা গিয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বিভাস চন্দ্র রায় বলেন, ‘‘দু-একটি জায়গায় টিকা দান কর্মসূচি কিছুটা পিছিয়ে আছে। সেখানে যাতে একসঙ্গে একাধিক স্কুলের বাচ্চাদের পুনরায় টিকা দেওয়া হয় সেরকম বন্দোবস্ত হচ্ছে।’’

Advertisement

জেলার একাধিক স্বাস্থ্যকর্তা বলছেন, ‘‘স্কুলছুট এবং উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়া পড়ুয়াদের টিকা দান শিবিরে নিয়ে আসার দায়িত্ব ছিল আশাকর্মী এবং এএনএম কর্মীদের উপর। এক্ষেত্রে তাঁদের ভূমিকা সন্তোষজনক নয়।’’ স্বাস্থ্যকর্তাদের কারও কারও মতে, স্কুল শিক্ষা দফতর থেকেও সেরকম সহযোগিতা মেলেনি। তাই নন্দীগ্রাম স্বাস্থ্য জেলার তরফে এ ধরনের বাচ্চাদের টিকা দেওয়ার জন্য ৩০ ও ৩১ জানুয়ারি দুটি শিবির করা হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে নন্দীগ্রাম স্বাস্থ্যজেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রকাশ কুমার মৃধা বলেন, ‘‘যাতে সমস্ত বাচ্চা গুণগত মানসম্পন্ন টিকা পেতে পারে তার জন্যই আমরা এগোচ্ছি। হাতে যা সময় রয়েছে তাতে আমরা সমস্ত বাচ্চাকে টিকা দিতে পারব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন