East Midnapore

ওয়েবসাইট তৈরিতে বিপাকে স্কুল  

রাজ্যের শিক্ষা মানচিত্রে বরাবরের আগুয়ান জেলা পূর্ব মেদিনীপুর। সেখানে ৯৭৪টি হাইস্কুলের অধিকাংশে কম্পিউটার থাকলেও ৩২৬৫টি প্রাথমিক স্কুলের অর্ধেকেরই সেই পরিকাঠামো নেই।

Advertisement

আনন্দ মণ্ডল

তমলুক শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০২০ ০১:৪৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

করোনা কালে ই-পড়াশোনাই ভরসা। তাই ‘বাংলার শিক্ষা’ পোর্টালের মাধ্যমে প্রাথমিক এবং হাইস্কুলগুলির নিজস্ব ওয়েবসাইট তৈরিতে উদ্যোগী হয়েছে স্কুল শিক্ষা দফতর। প্রধান শিক্ষকদের ৩১ অগস্টের মধ্যে ওয়েবসাইট খোলার নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু নিজস্ব কম্পিউটার না থাকায় বিপাকে পড়েছে বহু স্কুল, বিশেষ করে প্রাথমিক স্কুলগুলি।

Advertisement

রাজ্যের শিক্ষা মানচিত্রে বরাবরের আগুয়ান জেলা পূর্ব মেদিনীপুর। সেখানে ৯৭৪টি হাইস্কুলের অধিকাংশে কম্পিউটার থাকলেও ৩২৬৫টি প্রাথমিক স্কুলের অর্ধেকেরই সেই পরিকাঠামো নেই। ফলে নিজস্ব ওয়েবসাইট খুলতে প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সাইবার কাফেতে ছুটতে হচ্ছে। ঝক্কি নিয়ে ওয়েবসাইট খোলা হলেও সমস্যা মিটছে না। স্কুলের নিজস্ব কম্পিউটার না থাকায় পোর্টাল থেকে পড়ুয়াদের বাড়ির কাজ, মডেল প্রশ্নপত্র পেতে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ফের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের অফিসে বা সাইবার কাফেতে যেতে হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট নথি ডাউনলোড করে, প্রিন্ট নিয়ে পড়ুয়াদের দিতে বাড়তি খরচ যেমন হচ্ছে. তেমনই করোনা পরিস্থিতি, লকডাউনের মধ্যে বারবার যাতায়াতে সমস্যাও বাড়ছে। তা ছাড়া ওয়েবসাইট খোলার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়নি। তাই শিক্ষক-শিক্ষিকারা বহু ক্ষেত্রেই হোঁচট খাচ্ছেন।

রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতর বছরখানেক আগে ‘বাংলার শিক্ষা’ পোর্টাল চালু করেছে। এর দুটি ভাগ— ‘ই-পোর্টাল’ ও ‘স্কুল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’। ই-পোর্টালে শিক্ষা দফতরের পাঠানো নির্দেশিকা, বিভিন্ন পাঠ্যবিষয় পাবেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। ‘স্কুল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’-এ স্কুলের যাবতীয় তথ্য জানা যাবে এক ক্লিকেই। এই পোর্টালের খুঁটিনাটি জানাতে গত বছর সব অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। ক্রমে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা হচ্ছিল। চলতি বছরে করোনা পরিস্থিতিতে ‘স্কুল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে’র মাধ্যমে স্কুলগুলির নিজস্ব ওয়েবসাইট খোলায় জোর দেওয়া হয়েছে। তাতেই বেধেছে বিপত্তি।

Advertisement

মহিষাদল পশ্চিম চক্রের কল্যাণচক প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক তপন মণ্ডল বলছিলেন, ‘‘আমাদের স্কুলে কম্পিউটার নেই। মোবাইলে ওয়েবসাইট খোলার চেষ্টা করেও হয়নি। সাইবার কাফের সাহায্য নিয়ে আবার চেষ্টা করছি।’’ তিনি জানালেন, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করে কিছু পড়া দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন। কিন্তু স্কুলের ২৩৯ জন পড়ুয়ার মধ্যে মাত্র ৫৫ জনের বাড়িতে স্মার্টফোন থাকায় সুরাহা হয়নি। সমস্যা মানছেন ‘বাংলার শিক্ষা’ পোর্টালের প্রশিক্ষক তথা ঘোষপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সুপ্রতিম মান্না, পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সাধারণ সম্পাদক অরূপ ভৌমিক-সহ সকলেই। বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সভাপতি তথা ভগবানপুরের তালদা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক গোকুল মুড়ার মতে, ‘‘এই অবস্থায় অনলাইন পড়াশোনা ব্যাহত হচ্ছে।’’

এই পরিস্থিতিতে জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ সভাপতি মানস দাসের বক্তব্য, ‘‘সর্বশিক্ষা মিশন ও বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে অনেক প্রাথমিক স্কুলেই কম্পিউটার দেওয়া হয়েছে। তবে কিছু স্কুলে কম্পিউটার নেই এটা ঠিক। প্রয়োজনে ওয়েবসাইট চালুর সময়সীমা বাড়ানোর সুপারিশ করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন