university of vidyasagar

ছ’দফাতেও আসন ফাঁকা, ফের কাউন্সেলিং বিদ্যাসাগরে

শিক্ষকদের একাংশ মনে করছেন, এর জন্য দায়ী ৬০-৪০ সংরক্ষণ পদ্ধতি। এই পদ্ধতির ফলে ৬০ শতাংশ আসনে ভর্তি হন বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত কলেজগুলোর পড়ুয়ারা

Advertisement

 নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৭:১০
Share:

ফাইল চিত্র

স্নাতকোত্তরে পঠনপাঠন শুরু হয়েছে। নয় নয় করে ছ’দফা কাউন্সেলিংও হয়েছে। তারপরেও বহু আসন ফাঁকা। ছবিটা বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের।
সবদিক দেখে বৃহস্পতিবার থেকে আবার শুরু হয়েছে কাউন্সেলিং। এটা সপ্তম দফার কাউন্সেলিং। এতেও আসন পূরণ না হলে ফের কাউন্সেলিং হতে পারে। এত আসন ফাঁকা থেকে যাওয়ায় বিস্মিত শিক্ষকদের একাংশই। আসন ফাঁকা থেকে যাওয়ার কথা মানছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও। বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রঞ্জন চক্রবর্তীর স্বীকারোক্তি, “কয়েকটি বিভাগে এই সমস্যা রয়েছে। বিশেষ করে অর্থনীতি, কমার্স আর হিন্দিতে।” বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আধিকারিকের কথায়, “ফের কাউন্সেলিং শুরু হয়েছে। অর্থনীতি, কমার্স, হিন্দিতে হয়তো কিছু আসন ফাঁকা থেকে যাবে। তবে পদার্থবিদ্যা, গণিত, প্রাণিবিদ্যার মতো বিষয়ে আশা করি আসন ফাঁকা থাকবে না।”
রাজ্যের নির্দেশে এ বারই প্রথম ‘ই-অ্যাডমিশন’ চালু হয়েছে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তরে। এর ফলে, কাউন্সেলিংয়ের জন্য আর বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে হয় না। ভর্তি ফি জমা দেওয়া থেকে শুরু করে কাউন্সেলিং- সব অনলাইনে সম্ভব। প্রথম পর্যায়ে ভর্তি শুরু হয় ২৪ জুলাই থেকে। স্নাতকোত্তরে ভর্তির জন্য প্রবেশিকা পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল। প্রায় ১০ হাজার ছাত্রছাত্রী প্রবেশিকা দেন। মেধা তালিকা প্রকাশিত হয় ১৮ জুলাই। বিভিন্ন বিষয়ে বহু আসন ফাঁকা থেকে যাওয়ায় এই সময়ের মধ্যে ছ’দফা কাউন্সেলিং হয়েছে। তাও আসন পূরণ হয়নি। পঠনপাঠন শুরু হয়েছে। ছ’দফা কাউন্সেলিং শেষ হওয়ার পরেও আসন ফাঁকা থেকে গিয়েছে দেখে ফের কাউন্সেলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয়। ফাঁকা আসনগুলো পূরণেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিজ্ঞপ্তিও দেওয়া হয়।
কেন এতবার কাউন্সেলিংয়ের পরও আসন ফাঁকা থেকে গিয়েছে? শিক্ষকদের একাংশ মনে করছেন, এর জন্য দায়ী ৬০-৪০ সংরক্ষণ পদ্ধতি। এই পদ্ধতির ফলে ৬০ শতাংশ আসনে ভর্তি হন বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত কলেজগুলোর পড়ুয়ারা। ৪০ শতাংশ আসনে ভর্তি হন অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত কলেজগুলোর পড়ুয়ারা। আবার একাংশ শিক্ষকের মতে, বিদ্যাসাগরে ভর্তি প্রক্রিয়া খানিক দেরিতে শুরু হয়েছে। ফলে, অনেকে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে গিয়েছেন।
দিন কয়েক আগে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছিল, অর্থনীতিতে ৫৫টি, হিন্দিতে ৫৭টি, সোশিওলজিতে ৪১টি, কমার্সে ৪৭টি ও ইলেকট্রনিক্সে ২২টি আসন ফাঁকা রয়েছে। মেধা তালিকার ভিত্তিতে ‘ওপেন অ্যাডমিশন’-এর দিনও নির্ধারণ করা হয়। অন্য দিকে, অন্য কিছু বিষয়ের আসনও ফাঁকা থেকে গিয়েছে। যেমন, গণিতে একটি, পদার্থবিদ্যায় একটি, প্রাণিবিদ্যায় একটি, উদ্ভিদবিদ্যায় ৩টি, বাংলায় দু’টি, ইংরেজিতে ৫টি, ইতিহাসে ৫টি, সংস্কৃতে ৯টি, ভূগোলে ৮টি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সূত্রে খবর, ১৪টি বিষয়ে ৪৫টি আসন পূরণের জন্য কাউন্সেলিং শুরু হয়েছে বৃহস্পতিবার থেকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, “হিন্দি, অর্থনীতি, কমার্সে কিছু আসন কয়েক বছর ধরেই ফাঁকা থাকছে। আসলে সারা দেশেই ইকোনমিক্স, কমার্সে পড়ে কাজের সুযোগ কমছে। আর হিন্দি পড়ার ক্ষেত্রে তেমন আগ্রহ দেখাচ্ছে না পড়ুয়ারা।” আসন ভরাতে দফায় দফায় কাউন্সেলিং করে ভর্তি প্রক্রিয়া যত শীঘ্র সম্ভব সেরে ফেলার চেষ্টা চলছে বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন