Egra Sub Divisional Hospital Row

রাজ্যে আবার আক্রান্ত পুলিশ! এগরার হাসপাতালে শিশুমৃত্যু ঘিরে উত্তেজনা, ছিঁড়ল পুলিশকর্মীর উর্দিও

এগরা মহকুমা হাসপাতালে শিশুমৃত্যুর ঘটনায় শোরগোল। চিকিৎসায় গাফিলতি, মৃতের পরিবারের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। অন্য দিকে, হাসপাতালের নিরাপত্তারক্ষী এবং পুলিশকর্মীকে মারধরের অভিযোগ প্রকাশ্যে আসছে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০২৫ ১৪:৫৬
Share:

(বাঁ দিকে) মৃত শিশুকে নিয়ে পরিবারের সদস্যেরা। (ডান দিকে) আক্রান্ত পুলিশকর্মী। —নিজস্ব চিত্র।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ২ মাসের এক শিশুর মৃত্যু ঘিরে উত্তেজনা পূর্ব মেদিনীপুরের এগরায়। মঙ্গলবার চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে হাসপাতাল চত্বরে বিক্ষোভ দেখান মৃতের পরিজনেরা। সেই সময় হাসপাতালে প্রহরারত এক কর্মীর উপর চড়াও হয়ে মারধরের অভিযোগ উঠেছে শিশুর পরিজনদের বিরুদ্ধে। গন্ডগোল থামাতে গিয়ে প্রহৃত হন এক পুলিশকর্মীও। তাঁর পরনের উর্দি ছিঁড়ে দেওয়া হয়। খবর পেয়ে এগরা থানার পুলিশ বাহিনী হাসপাতালে পৌঁছোয়। আপাতত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। তবে এই ঘটনায় চাঞ্চল্য এলাকায়।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে খবর, দিন সাতেক আগে আলংগিরি এলাকার বাসিন্দা তপন প্রধান নামে এক ব্যক্তি তাঁর ২ মাসের শিশুপুত্রকে ভর্তি করান এগরা মহকুমা হাসপাতালে। মঙ্গলবার সকালে শিশুটিকে মৃত বলে ঘোষণা করে হাসপাতাল। শিশুটির মায়ের দাবি, ‘‘আমার বাচ্চা জ্বর হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। ৭ দিন ধরে এই হাসপাতালে ভর্তি ছিল। আজ ও মরে গেল।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘হাসপাতালের ডাক্তার ভাল ভাবে চিকিৎসা করেননি। কোনও সমস্যার কথা বলতে গেলে আমাদের সঙ্গে অত্যন্ত দুর্ব্যবহার করেছেন। বাচ্চাকে অন্যত্র নিয়ে যেতে চাইলেও ছাড়েননি ওঁরা।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আজ ছেলে মরে যেতে ওই সিকিউরিটি কর্মী (যাঁকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ) মুখের ওপর বলে দিল, ‘একটা বাচ্চা মরে গেলে আর একটা আসবে।’ এই কারণে ওঁর সঙ্গে ঝামেলা হয়েছে।’’

স্থানীয় যুবক মৃণাল পণ্ডাও একই অভিযোগ করেন। তিনিও জানান, হাসপাতালের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মীরা সাধারণ মানুষের সঙ্গে খুব খারাপ ব্যবহার করেন। তিনি বলেন, ‘‘শিশুটির মৃত্যুর পর তাঁর বাবার সঙ্গে সিকিউরিটি কর্মী অত্যন্ত খারাপ ব্যবহার করেছেন। শিশুটির বাবাকে ধাক্কা দিয়ে হাসপাতাল থেকে বার করে দিয়েছেন। সে জন্যই উনি উত্তেজিত হয়ে ঝামেলায় জড়িয়েছেন।’’ স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ওই হাসপাতালে নার্স থেকে সুরক্ষাকর্মীদের ব্যবহার অত্যন্ত খারাপ। এই বিষয়ে হাসপাতাল সুপারের কাছে অভিযোগ জানাতে গেলেও কথা বলতে দেওয়া হয় না। অন্য দিকে, পুলিশকর্মীর সঙ্গে আচরণের নিন্দা করেছেন অনেকে।

Advertisement

শিশুমৃত্যু এবং গন্ডগোল প্রসঙ্গে এগরা মহকুমা হাসপাতালের সুপার সমীর আচার্য বলেন, ‘‘হাসপাতালে শিশুটিকে খুব খারাপ অবস্থায় নিয়ে আসা হয়েছিল। তার কী কী চিকিৎসা হয়েছিল, তা আমরা তদন্ত করে দেখছি। এই বিষয়ে সমস্ত রিপোর্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিত ভাবে পাঠাব। তবে এখনও পর্যন্ত এই শিশুমৃত্যুর ঘটনায় মৃতের পরিবারের তরফে কোনও লিখিত অভিযোগ জমা হয়নি। লিখিত অভিযোগ এলে আমরা পদক্ষেপ করব।’’ সুপার জানান, নিরাপত্তাকর্মীর বিরুদ্ধে কোনও প্রকার অভিযোগ থাকলে তা সরাসরি লিখিত ভাবে জানানো যেতে পারে। হাসপাতালের বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগপত্র নেওয়ার জন্য বাক্স রাখা আছে। সেই বাক্সে কেউ অভিযোগপত্র জমা দেননি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement