CPIM

‘জোট’ বেঁধে বহিষ্কৃত ১২ বাম সদস্য

এমন আবহে খারুই গঠরা সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির নির্বাচনে জোট বাধার খবর পেয়েই তার বিরোধিতা করেন সিপিএমের জেলা নেতৃত্ব। তাঁরা জানিয়ে দেন, দলের নির্দেশ অমান্য করলে বহিষ্কার করা হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

তমলুক শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২২ ০৮:৪৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছিল আগেই। এবার করা হল পদক্ষেপ। সমবায় সমিতির নির্বাচনে বাম-বিজেপি জোট বেঁধে ‘মঞ্চ’ গড়া এবং প্রার্থী পদে মনোনয়ন জমা দেওয়ায় ১২ সদস্যকে দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিলেন সিপিএমের জেলা নেতৃত্ব। এছাড়া, ওই সমবায় সমিতির নির্বাচনে বিজেপির সঙ্গে জোট গড়ায় যুক্ত থাকার অভিযোগে দলের দু’জন এরিয়া কমিটির সদস্যকে শো-কজ়ও করা হবে বলে সিপিএম সূত্রের খবর।

Advertisement

আগামী ৪ ডিসেম্বর শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের খারুই গঠরা সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির নির্বাচন। সমিতির ৪৩টি আসনের সবক’টিতে প্রার্থী দিয়েছে তৃণমূল। তাদের হারাতে ‘নন্দকুমার-মডেলে’র ধাঁচেই ‘সমবায় বাঁচাও মঞ্চ’ গড়ে স্থানীয় বিজেপি এবং সিপিএম নেতৃত্ব জোট প্রার্থী দিতে উদ্যোগী হয়েছিল। গত ৯ নভেম্বর নন্দকুমারের ‘বহরমপুর কো-অপারেটিভ ক্রেডিট সোসাইটি লিমিটেডে’র নির্বাচনে ‘সমবায় বাঁচাও মঞ্চ’ গড়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিল বাম-বিজেপি জোট। সেখানে ৬৩টি আসনের সবকটিতেই ওই জোট তৃণমূলকে হারিয়ে দেয়। তা ‘নন্দকুমার-মডেল’ হিসাবে পরিচিত হলেও বিষয়টি নিয়ে ‘বাম-রামে’র তত্ত্বে বিরোধীদের তুলোধনা করেন রাজ্যের শাসকদলের স্থানীয় নেতৃত্ব।

এমন আবহে খারুই গঠরা সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির নির্বাচনে জোট বাধার খবর পেয়েই তার বিরোধিতা করেন সিপিএমের জেলা নেতৃত্ব। তাঁরা জানিয়ে দেন, দলের নির্দেশ অমান্য করলে বহিষ্কার করা হবে। দলের নীচুতলায় এই বিষয়ে নির্দেশও পাঠানো হয়েছিল। যে সব পদাধিকারী এবং সদস্য প্রার্থী পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন, তাঁদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে বলে জেলা সিপিএম। শুক্রবার ছিল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। এদিন যাঁরা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেনি, তাঁদের বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যাঁদের মধ্যে রয়েছেন, সিপিএমের এরিয়া কমিটির এক সদস্য শুভাশিস মল্লিক এবং ১১ জন দলীয় সদস্য। সিপিএমের জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি বলেন, ‘‘সমবায় সমিতির নির্বাচনে বিজেপি ও তৃণমূল, কারও সাথেই জোট করা যাবে না বলে দলের স্থানীয় নেতৃত্বদের কাছে নির্দেশ পাঠানো হয়েছিল। নির্বাচনে দলের যে সমস্ত সদস্যরা প্রার্থীপদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন, তাঁদের সকলকেই মনোনয়ন প্রত্যাহার করার নির্দেশ দেওয়া হয়। শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করা হয়েছিল। কিন্তু এর পরেও দলের কয়েকজন সদস্য মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেনি। তাই দল বিরোধী কাজের অভিযোগে ১২ জনকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আরও দু’জনকে শো-কজ় করা হয়েছে।’’

Advertisement

উল্লেখ্য, ওই সমবায়ের ৪৩টি আসনের মধ্যে ২৭টিতে বামেরা এবং ১৬টিতে বিজেপি প্রার্থী দিয়েছে বলে খবর। বামেদের ২৭ জনের মধ্যে বহিষ্কৃত ১২ জন দলীয় এবং এরিয়া কমিটির সদস্য। বাকিরা সাধারণ সমর্থক। তাই তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ না করা হলেও, ওই প্রার্থীদের সঙ্গে দলের সম্পর্ক নেই বলে ঘোষণা করা হবে বলে খবর সিপিএম সূত্রে। দলের নির্দেশ মানা হচ্ছে কি না, তা দিনভর নজরে রাখতে দেখা গিয়েছে জেল নেতৃত্বকে। দুপুর ২টো পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহারের সময়সীমা ছিল। ১টা নাগাদ তমলুকে সিপিএমের জেলা অফিসে বসে জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন খারুই এলাকায় দলের এরিয়া কমিটির সম্পাদক ফরিদ আলিকে ফোন করে রীতিমতো খোঁজ নিচ্ছিলেন। দলের নির্দেশ মত সদস্যরা প্রার্থী পদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন কি না, তা-ও জানতে চাওয়া হয়। কিন্তু তখনও পর্যন্ত প্রার্থী পদে কেউ মনোনয়ন প্রত্যাহার করেনি বলে জানানো হয় স্থানীয় নেতৃত্বের তরফে। নির্দিষ্ট সময়সীমার পরেও দলের সদস্যরা মনোনয়ন প্রত্যাহার না করায় জেলা সম্পাদক ওই সদস্যদের বহিষ্কার করার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেন। ওই সিদ্ধান্তের বিষয়ে এলাকায় লিফলেটও বিলি করা হবে বলে জানিয়েছেন নিরঞ্জন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন