জলাতঙ্কের প্রতিষেধক নেই, ফিরতে হচ্ছে মেডিক্যাল থেকে

মেডিক্যালে এসে ছুটোছুটি করছিলেন সলিল চট্টোপাধ্যায়। মেদিনীপুরের বাসিন্দা, বছর বাহান্নর সলিলকে কুকুরে কামড়েছিল। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এসে তিনি জানতে পারেন, এখানে জলাতঙ্কের প্রতিষেধক নেই। দিন কয়েক ধরেই এই সমস্যা চলছে। অগত্যা অন্য ওষুধ দোকান থেকে ওই প্রতিষেধক কিনে আনেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:০০
Share:

খড়্গপুর শহরের গলিপথে বাড়ছে সারমেয়র সংখ্যা। নিজস্ব চিত্র

মেডিক্যালে এসে ছুটোছুটি করছিলেন সলিল চট্টোপাধ্যায়। মেদিনীপুরের বাসিন্দা, বছর বাহান্নর সলিলকে কুকুরে কামড়েছিল। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এসে তিনি জানতে পারেন, এখানে জলাতঙ্কের প্রতিষেধক নেই। দিন কয়েক ধরেই এই সমস্যা চলছে। অগত্যা অন্য ওষুধ দোকান থেকে ওই প্রতিষেধক কিনে আনেন তিনি। সলিল বলছিলেন, ‘‘জেলার সব থেকে বড় হাসপাতাল এই মেদিনীপুর মেডিক্যাল। সেখানেই কি না জলাতঙ্কের মতো রোগের প্রতিষেধক নেই। ভাবা যায়!’’

Advertisement

অথচ, হাসপাতালে ‘অ্যান্টি র‌্যাবিস ভ্যাকসিন’ (এআরভি) অর্থাৎ জলাতঙ্কের প্রতিষেধক থাকা অত্যন্ত জরুরি। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, কুকুরে কামড়ানোর পরে খুব দ্রুত প্রথম ইঞ্জেকশন দিতেই হবে। না হলে বিপদ মারাত্মক আকার নিতে পারে। হাসপাতালি যে এআরভি নেই তা মানছেন মেদিনীপুর মেডিক্যালের সুপার তন্ময়কান্তি পাঁজা। সুপারের কথায়, ‘‘চাহিদার থেকে জোগান এসেছে কম। তাই এই সমস্যা।’’ একই সঙ্গে তাঁর আশ্বাস, ‘‘ফের এআরভি চাওয়া হয়েছে। চলে আসবে। এই সমস্যা বেশি দিন থাকবে না।’’

এই প্রথম নয়। আগেও মেদিনীপুর মেডিক্যালে জলাতঙ্কের প্রতিষেধকের আকাল দেখা দিয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, নির্দিষ্ট সময়ে হিসেব কষে চাহিদা জানিয়ে দিলে আর সমস্যা থাকে না। কিন্তু অভিযোগ, সেটুকু কাজও সময়ে হচ্ছে না এখানে। আর তার জেরে জলাতঙ্কের প্রতিষেধকের অভাবে ভুগতে হচ্ছে মেদিনীপুরের মানুষকে। সরকারি হাসপাতালে কুকুরের কামড়ে অসুস্থদের সংখ্যা ও পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে পরবর্তী চার মাসের জলাতঙ্কের প্রতিষেধকের সম্ভাব্য চাহিদার ধারণা কথা জানিয়ে দেওয়ার কথা সংশ্লিষ্ট কোম্পানিকে। হাসপাতালের এক আধিকারিকের অবশ্য দাবি, ‘‘আমরা চাহিদার কথা যথা সময়েই জানাই। কখনও এক তৃতীয়াংশ, কখনও এক চতুর্থাংশ জোগান দেওয়া হয়।’’

Advertisement

মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের এক সূত্রে খবর, জেলার এই হাসপাতালে মাসে গড়ে ২৬০ জন কুকুড়ের কামড় খেয়ে আসেন। একজনকে নির্দিষ্ট সময় অন্তর ৪টি করে ভ্যাকসিন দিতে হয়। সেই হিসেবে মাসে গড়ে ১,২৪০টি ভ্যাকসিনের প্রয়োজন হয় এখানে। এখন অনলাইনে ওষুধপত্রের বরাত দিতে হয়। সেই মতোই বরাত দেওয়া হয়। মেদিনীপুরে কুকুরের উৎপাত লেগেই রয়েছে। চিকিৎসকেরা মানছেন, জলাতঙ্কের মতো রোগ চিকিৎসার দ্বিতীয় সুযোগ দেয় না। তাই ঠিক সময়ে প্রতিষেধক প্রয়োগ করা দরকার। আর তার জন্য চাই নিয়মিত জোগান। অথচ সেই জোগানই থাকে না এখানে।

হাসপাতালের এক আধিকারিকের অবশ্য যুক্তি, ‘‘ওষুধের প্রয়োজন সম্পর্কে মানুষের সচেতনতা বেড়েছে। তাই চাহিদা বাড়ছে। সমস্যা হলে সেটা সাময়িক। ওষুধ পাওয়া যায় না বা থাকে না, এটা ঠিক নয়।"

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন