সীমারানিকে প্রার্থী করে চমক বিজেপির

দ্বন্দ্বে যখন শাসকদলে অস্বস্তি, তখন খড়্গপুরে তৃণমূলের ২৩ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি নরেন্দ্রনাথ দোলুইয়ের পুত্রবধূকে পুরভোটে প্রার্থী করে চমক দিয়েছে গেরুয়া শিবির। রেলশহরে পুরভোট আসন্ন। শহরের ২৩ নম্বর ওয়ার্ড এ বার মহিলা সংরক্ষিত। দলীয় সূত্রে খবর, প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার আগে পাঁচ জন প্রস্তাবিত তৃণমূল প্রার্থীর নাম দলের শহর নেতৃত্বের কাছে পাঠায় ওয়ার্ড কমিটি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০১৫ ০২:০৫
Share:

বাড়ি বাড়ি প্রচার সারছেন বিজেপি-র প্রার্থী।— নিজস্ব চিত্র।

দ্বন্দ্বে যখন শাসকদলে অস্বস্তি, তখন খড়্গপুরে তৃণমূলের ২৩ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি নরেন্দ্রনাথ দোলুইয়ের পুত্রবধূকে পুরভোটে প্রার্থী করে চমক দিয়েছে গেরুয়া শিবির।

Advertisement

রেলশহরে পুরভোট আসন্ন। শহরের ২৩ নম্বর ওয়ার্ড এ বার মহিলা সংরক্ষিত। দলীয় সূত্রে খবর, প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার আগে পাঁচ জন প্রস্তাবিত তৃণমূল প্রার্থীর নাম দলের শহর নেতৃত্বের কাছে পাঠায় ওয়ার্ড কমিটি। কিন্তু সেই তালিকাকে গুরুত্ব না দিয়ে দলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি থেকে সদ্য তৃণমূলে আসা অরবিন্দ পান্ডের স্ত্রী মঞ্জু পান্ডেকে ওই ওয়ার্ডে প্রার্থী করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এতেই বেজায় চটেছেন নরেন্দ্রনাথবাবু। তাঁর বক্তব্য, ‘‘ওয়ার্ড কমিটির পক্ষ থেকে পাঁচ জন প্রার্থীর নাম দলের শহর সভাপতি দেবাশিস চৌধুরীর কাছে জমা দিয়েছিলাম। কিন্তু তাতে গুরুত্ব না দিয়ে সদ্য দলে আসা এক জনকে প্রার্থী করা হল। এই সিদ্ধান্তে ওয়ার্ডের দলীয় কর্মীদের মধ্যেও ক্ষোভ জমেছে।”

প্রশ্ন উঠছে, ওই পাঁচ জনের নামের তালিকায় কী তাঁর পুত্রবধূ সীমারানি দোলুইয়েরও নাম ছিল? উত্তরে নরেন্দ্রনাথবাবু বলেন, ‘‘প্রথমে আমি বৈঠক করে পাঁচ জন প্রার্থীর নামের তালিকা পাঠাই। পরে ওয়ার্ড কমিটির কয়েক জন ফের প্রার্থীপদে আমার পুত্রবধূর নাম প্রস্তাব করে শহর নেতৃত্বকে পাঠায়।’’ দ্বিতীয় বার প্রার্থীর নাম পাঠানোয় কী আপনার অনুমতি ছিল? নরেন্দ্রনাথবাবুর দাবি, তিনি এ ক্ষেত্রে অনুমতি দেননি।

Advertisement

যদিও ওই ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী সীমারানি দোলুইয়ের বক্তব্য, ‘‘আমার শ্বশুর তৃণমূল নেতা হলেও আমি গণতান্ত্রিক অধিকারবলে বিজেপির প্রার্থী হয়েছি। এ ক্ষেত্রে শ্বশুর বাধা দেয়নি। আমি নিশ্চিত, উনি মনে মনে আমার সাফল্যই চাইবেন।” এ বিষয়ে বিজেপির পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি তুষার মুখোপাধ্যায় বলেন, “সীমারানি আমাদের দলে অনেকদিন আগেই আসতে চেয়েছিল। আমি যতটুকু জানি সীমারানি ওঁর শ্বশুরের অনুমতি নিয়েই আমাদের প্রার্থী হয়েছেন। তাই তৃণমূলও আতঙ্কিত। আর এতেই আমাদের জয় নিশ্চিত ।”

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, প্রার্থী তালিকা নিয়ে দলের কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছেই। তার উপর ভোট ভাগাভাগির আশঙ্কাও রয়েছে। যদিও স্ত্রীর জয় নিয়ে আশাবাদী ওই ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী মঞ্জু পান্ডের স্বামী অরবিন্দ পান্ডে। অরবিন্দবাবুর বক্তব্য, ‘‘নরেন্দ্রনাথ দোলুই আমাদের সঙ্গেই আছেন। ওঁর সঙ্গে সীমারানিদের সম্পর্ক ভাল নয়। আর এখানে বিজেপি নয়, কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের লড়াই হবে। কিন্তু কংগ্রেসের প্রার্থী নির্বাচনে পরিবারতন্ত্রের ছায়া। তাই আমরা জয়ের বিষয়ে নিশ্চিত।” ওই ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলর কংগ্রেসের।

বউমার হয়ে কী প্রচার করবেন? নরেন্দ্রনাথবাবু বলেন, ‘‘আমি অসুস্থ থাকায় তৃণমূলের প্রচারেই যাব না বলেছি। আর তৃণমূলের একনিষ্ঠ কর্মী হয়ে বৌমার প্রচারে যাওয়ার প্রশ্নই নেই।’’ তবে তাঁর কৌশলী বক্তব্য, ‘‘কেউ যদি নিজের ক্ষমতায় জয়ী হয়, তবে আপত্তি নেই। সে কথা বৌমাকেও জানিয়েছি।’’ পুত্রবধূকে আশীর্বাদ করবেন? নরেন্দ্রনাথবাবুর জবাব, “পুত্র আর পুত্রবধূ পা ছুঁলে আশীর্বাদ তো করতেই হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন