বন্ধন: পাঁউশি অন্ত্যোদয় অনাথ আশ্রমে ভাইফোঁটা। নিজস্ব চিত্র
কেউ দৃষ্টিহীন, কেউ মূক-বধির, কেউ মানসিক প্রতিবন্ধী। সে সব কিছু জয় করেই ভাইফোঁটার অনুষ্ঠানে সামিল হল নিমতৌড়ির এক হোমের আবাসিকেরা।
শনিবার সকালে হোমের বিভিন্ন হোমের বিভিন্ন বিভাগের প্রায় ২০০ জন ছাত্র, শিক্ষক, কর্মকর্তাকে ভাইফোঁটা দেন প্রতিবন্ধী ছাত্রীরা। নিমতৌড়ি-তমলুক উন্নয়ন সমিতি পরিচালিত এই হোমে প্রতিবন্ধী ও অনাথ ছেলেমেয়েদের পড়ানোর ব্যবস্থা রয়েছে।
হোমে রয়েছে প্রায় ৮০ জন ছাত্র ও ১২৫ জন ছাত্রী। তাদের নিয়ে এ দিন সকালে হোমের সভাগৃহে আয়োজন করা হয় অনুষ্ঠানে। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী বিশ্বজিৎ বাড়ই, প্রদীপ সুমণ্ডল, মইদুল ইসলামদের কপালে চন্দনের ফোঁটা দিয়ে শুভকামনা করেন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী প্রিয়ঙ্কা মাল, মন্দিরা মাইতি, শারীরিক প্রতিবন্ধী মারিয়া খাতুন।
দু’টি হাত না থাকায় শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের কপালে পা দিয়ে চন্দনের ফোঁটা দেন পার্বতী জানা। ভাইফোঁটা উপলক্ষে নাচ, গান, আবৃত্তি-সহ নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজনও করা হয়।
টিফিনে ছিল লুচি, তরকারি, পায়েস আর দুপুরের মেনুতে মাংস-ভাত, চাটনি, মিষ্টি।
উন্নয়ন সমিতির সম্পাদক যোগেশ সামন্ত বলেন, “ছাত্রছাত্রীদের অনেকেরই ভাইবোন নেই। কারও কারও অভিভাবক নেই। এমন একটি শুভ দিনে যাতে ওরাও আনন্দ করতে পারে, সে জন্য হোমের ছেলেমেয়েদের নিয়েই ভাইফোঁটা উৎসব করা হয়েছে।”
প্রতি বছরের মতো ভ্রাতৃ দ্বিতীয়া পালন করে ভগবানপুরের পাঁউশি অন্ত্যোদয় অনাথ আশ্রম।
মঙ্গলদ্বীপ জ্বেলে, নতুন জামাকাপড় পরে, রাজু, উদয়, বিট্টুকে চন্দনের ফোঁটা পরিয়ে দেয় মৌসুমি, বর্ষা, অঙ্কিতা, মালতীরা। আশ্রমের ১০২ জন আবাসিক-সহ আশ্রম থেকে বিবাহিত ৩০ জন আবাসিক যোগ দেন শনিবারের আয়োজনে। আশ্রমের কর্ণধার বলরাম করণ বলেন, “১৯৯৫ সালে আশ্রমের সূচনা হওয়ার পর থেকেই মেয়ে আবাসিকরা ছেলে আবাসিকদের ভাইফোঁটা দিয়ে আসছে। ফলে আশ্রমে একসঙ্গে ভাইবোনের মতো বাস করে তারা।” তিনি আরও জানান, গ্রামের যাঁদের ফোঁটা দেওয়ার কেউ নেই, তারাও যোগ দেয় এই আয়োজনে।