Software Engineer

রং-তুলিতে ছোটদের ক্লাসের ভোল বদলে দিলেন ইঞ্জিনিয়াররা

কলকাতা থেকে প্রায় দেড়শো কিলোমিটার দূরে হলদিয়ার জয়নগর বোর্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোল বদলে  গিয়েছে এক ঝাঁক তরুণ সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারদের হাতে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হলদিয়া শেষ আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০১:১৭
Share:

শ্রেণিকক্ষে ছবি আঁকতে ব্যস্ত শিল্পী। নিজস্ব চিত্র

ওঁরা সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। কম্পিউটার নিয়ে নাড়াচাড়া করেই দিন রাত কাটে ওঁদের। কিন্তু ওঁরাই রং-তুলি নেমে পড়লেন ছোট ছোট পড়ুয়াদের জন্য। তাদের পড়াশোনার জগৎটাকে আরও রঙিন করে তুলতে।

Advertisement

কলকাতা থেকে প্রায় দেড়শো কিলোমিটার দূরে হলদিয়ার জয়নগর বোর্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোল বদলে গিয়েছে এক ঝাঁক তরুণ সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারদের হাতে। পড়ুয়াদের জন্য স্কুল পাঠ্যের ছবি এঁকেছেন তাঁরা নিজের মতো করে। সম্প্রতি এই স্কুলের পরিকাঠামোর পুনর্গঠনের কাজ শুরু করেছেন হলদিয়া এনার্জি লিমিটেড। এই শিল্প সংস্থার উদ্যোগেই স্কুলের একাধিক শ্রেণিকক্ষ নতুন করে সাজানো হচ্ছে। সেই সঙ্গেই নতুন স্কুল ডেস্ক ও রঙ করা হয়েছে শ্রেণিকক্ষের দেওয়াল।

প্রধান শিক্ষক যোগেশচন্দ্র রায় বলেন, ‘‘আমাদের স্কুলের ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ৪৫২ জন। স্কুলের পরিকাঠামো ভাল ছিল না। এই শিল্প সংস্থা কয়েক লক্ষ টাকা খরচ করে স্কুলের পরিকাঠামো তৈরি করে দিয়েছেন। এই শিল্প সংস্থার উদ্যোগেই কলকাতার একটি নামজাদা সফটওয়্যার সংস্থার কুড়ি বাইশ জন ইঞ্জিনিয়ার এসেছিলেন হলদিয়ায়। ওঁরা আমাদের স্কুলের পড়ুয়াদের মিলেমিশে কাজ করেছেন। ছেলেমেয়েদের সঙ্গেই মিড ডে মিলের রান্না করা খাবার খেয়েছেন। যা দেখে ছেলেমেয়েরাও ওঁদের সঙ্গে একাত্ম হতে পেরেছে।’’ তরুণ ওই সব ইঞ্জিনিয়ারদের তুলিতে কোথাও ফুটে উঠেছে ঈশপের গল্প। কোথাও ফুল-ফল ও লতা-পাতার ছবি।

Advertisement

সফটওয়্যার সংস্থার সিনিয়র অ্যাসোসিয়েট দ্বৈপায়ন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আমাদের সংস্থার হয়ে হলদিয়ার ওই গ্রামে গিয়েছিলাম। নির্মল পরিবেশে থেকে কাজ করে সকলেই খুব খুশি। যদিও আমরা কেউই পেশাদার শিল্পী নই। তবু সবাই মিলেই এই কাজ করেছি।’’ দলেরই আর এক জনের কথায়, ‘‘সোমবার থেকে শুক্রবার—পাঁচ দিনের এই কর্মকাণ্ডে চেনা ছকের বাইরে গিয়েও যে আনন্দ পাওয়া যায় তা হলদিয়ার ওই গ্রামে গিয়ে পেয়েছি।’’ অমিত মিত্র নামে এক ইঞ্জিনিয়ার বলেন, ‘‘আমরা চেয়েছিলাম ছোটদের স্কুল রঙিন হয়ে উঠুক। নানা ছবি থাকলে ওরা বাড়ি ফেরার পরেও তা ওদের মনে থাকবে।’’ উপাসনা রায়, দেবারতি গঙ্গোপাধ্যায়, অনির্বাণ সরকাররাও সেই অনুভবেই তুলি ও রঙ নিয়ে কাজে নেমে পড়েছিলেন।

এমন রঙিন ক্লাসঘর থেকে কেমন অনুভব পড়ুয়াদের! শুভশ্রী মণ্ডল, সুদীপ কুইলা, তৃষা ঘড়া জানায়, ক্লাস রুম ছবি দিয়ে সাজানোয় খুব ভাল লাগছে। হলদিয়া এনার্জি লিমিটেডের তরফে সত্যজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওই সরকারি প্রাথমিক স্কুলটি আমরা সংস্কার করেছি। তারই অঙ্গ হিসেবে স্কুলের ক্লাসঘরগুলিতে আঁকা হয়েছে। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মাধ্যমে ওই তরুণ ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তাঁরাই এটা করেছেন।’’

আর স্কুলের এমন নতুন চেহার দেখে এলাকার অনেক প্রবীনেই আক্ষেপ, ‘‘ইস, আমরাও যদি এমন স্কুল যদি পেতাম।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন