ষোলো বছর আগের স্মৃতি ফিরল ষড়ঙ্গী পরিবারে।
২০০২ সালে জামবনির বালিজুড়িতে এক সিপিএম নেতার খুনের ঘটনার পাল্টা হিসেবে দুবড়া গ্রামে গুলি করে, তির মেরে খুন করা হয়েছিল মোহিনীমোহন ষড়ঙ্গীকে। কংগ্রেস সমর্থক বৃদ্ধ মোহিনীমোহনের সেজ ছেলে পবিত্র ওরফে চন্দনের বয়স তখন ৩৯।
৫৫ বছর বয়সে খুন হয়ে গেলেন চন্দনও। ঘটনাস্থল সেই দুবড়া।
তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী চন্দন দুবড়ায় দলীয় সংগঠন দেখভাল করতেন। সোমবার সন্ধেয় দলীয় বৈঠক সেরে বাইকে ফিরছিলেন ঝাড়গ্রাম শহরের বাড়িতে। পথেই দুষ্কৃতীরা কুপিয়ে, গলার নলি কেটে খুন করে চন্দনকে। মঙ্গলবার সকালে মেলে দেহ।
সেই থেকে ঝাড়গ্রাম শহরের নতুনডিহির দো’তলা বাড়িটা শোকে মুহ্যমান। এখানে চন্দনরা চার ভাই সপরিবার এক সঙ্গে থাকেন। বারবার খুন পরিবারটিকে তছনছ করে দিয়েছে। ষোলো বছরের ব্যবধানে বাবা-ছেলে তো বটেই। ১৯৭০ সালে দুবড়া গ্রামে খুন হয়েছিলেন চন্দনের বড় মামা রথীন্দ্রনাথ শতপথীও। টাঙি দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয়েছিল কংগ্রেস নেতা রথীন্দ্রনাথকে। চন্দনের বড়দা অবসরপ্রাপ্ত হাইস্কুল শিক্ষক প্রদ্যোত ষড়ঙ্গী বলছিলেন, ‘‘আমি সক্রিয় রাজনীতি করি না। কিন্তু পরিবারকে রাজনীতি করার মাসুল গুনতে হচ্ছে।’’
রক্তাক্ত জামবনি
• ২০০২, ২৬ অক্টোবর: বালিজুড়ি গ্রামে গুলি করে খুন সিপিএম নেতা দিবাকর মালাকার।
• ২০০২, ২৬ অক্টোবর: দুবড়া গ্রামে প্রবীণ কংগ্রেস সমর্থক মোহিনীমোহন ষড়ঙ্গীকে গুলি করে তির মেরে খুন।
ওই গ্রামেই ঝাড়খণ্ড পার্টি সমর্থক প্রবীণ দম্পতি শিশির শতপথী ও শিবানী শতপথীকেও তির মেরে গুলি করে খুন।
• ২০০৩, ১২ মে: পাঁচামি এলাকায় অপহরণ করে খুন সিপিএমের জামবনি লোকাল কমিটির সম্পাদক বাসু ভকত।
চন্দনের স্ত্রী শ্যামলী বার বার সংজ্ঞা হারাচ্ছিলেন। প্রদ্যোতবাবু জানালেন, আগে ডেকরেটরে ব্যবসা ছিল চন্দনের। ষোলো বছর আগে বাবার উপর হামলার পরে ওই ব্যবসার সব সামগ্রী লুঠ হয়ে যায়। পরে পারিবারিক চাষবাস দেখভাল করতেন চন্দন। তাঁর ছেলে কলেজ ছাত্র। এ দিন ঝাড়গ্রামে এসে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় আশ্বাস দিয়েছেন, ‘‘চন্দনের পরিবারের পাশে দল রয়েছে।’’